সরকারের তুঘলোকি সিনড্রোম ও আইসিটি আইন

এম এম খালেকুজ্জামানএম এম খালেকুজ্জামান
Published : 18 July 2014, 07:08 AM
Updated : 18 July 2014, 07:08 AM

প্লেটো ৩৮৭ খ্রিস্টপূর্বকালে হোমারের 'ওডিসি' কাটছাঁট করে ভদ্রস্থ রূপ দিয়ে প্রকাশ করতে বলেছিলেন। তিনি এমনকি অপরিণত পাঠকের জন্য 'ওডিসি' নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। 'ওডিসি'র ওপর আরও আঘাত এসেছিল। রোমের শাসক ক্যালিগুলা এতে 'পরাধীনতার বিপক্ষে অভিব্যক্তি' ছিল বলে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে চান। কনফুসিয়াসের লিখিত রচনা বরাবরই রাজশক্তির পক্ষে যেত না বলে বার বার রোষানলে পড়ত। এমনকি তাঁর শত শত অনুগামীকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল।

খুব বেশিদিন আগের ঘটনা নয়, ১৯৩৩ সালে যাই। এ বছরের ১৩ মে বার্লিন ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে হিটলারের নির্দেশে ২৫ হাজার বই পুড়িয়ে ফেলা হয়। পোড়া বইয়ের তালিকায় শুধু ইহুদি লেখকদের বই-ই ছিল না, ছিল ম্যাক্সিম গোর্কি, স্টিফান জাইগ, কার্ল মার্কস, ফ্রয়েড, হেলেন কেলার, স্টালিনের বইও। চল্লিশ হাজার জার্মান নাগরিককে এই 'পুস্তকাগ্নি'র দৃশ্য অবলোকন করতে হয়, স্বচক্ষে। বশংবদ গোয়েবলসের প্ররোচনা ও পৌরহিত্যে মুক্তবুদ্ধিনাশী এই অগ্নি-প্রকল্প অনুমোদন করেন জার্মানদের একনায়ক হিটলার।

কালে কালে দেশ পরিচালনার কোনো না কোনো পর্যায়ে গোয়েবলসের মতো উপদেষ্টাদের নষ্ট বুদ্ধিতে সত্য ও মুক্তবুদ্ধিচর্চার বিরুদ্ধে নানা নামে বিভিন্ন ধরনের কালাকানুন নাজিল হতে দেখি। কয়েক দশক আগে পর্যন্ত বই-পুস্তকের মাধ্যমেই মূলত সৃজনশীল ও মুক্তবুদ্ধির চর্চা হত। মাত্র গত এক দশক ধরে ইন্টারনেট, ব্লগ ইত্যাদি মাধ্যমে চলছে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা। এর ধারাবাহিকতায় খুব বেশিদিন হয়নি বাংলাদেশ সাইবার দুনিয়ায় বিচরণ করছে। তাই এই জগতের গলি-ঘুপচি আর সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা এদেশে খুব টেকসই নয়।

এই সুযোগে তথ্য-প্রযুক্তিগত বা সাইবার অপরাধ ক্রমেই একটি সামাজিক ব্যাধি হিসেবে ছড়িয়ে পড়ার নানা লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে। বিশেষ করে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে এর অপব্যবহার বিরাট হুমকি সৃষ্টি করেছে। এই প্রেক্ষাপটেই সরকার ২০০৬ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনে সংশোধনী এনেছে। তবে আইনটি তৈরি হয়েছিল বিএনপিসহ চারদলীয় জোট সরকারের আমলের শেষদিকে। ২০০৬ সালে গতানুগতিক অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ও নাগরিকদের স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন কালাকানুন যুক্ত করে আইনটি করা হয়।

দুঃখজনক বিষয় হল, আট বছর আগের সরকার যেমন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে ন্যূনতম আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করেনি– ২০১৩ সালের আওয়ামী লীগসহ চৌদ্দ দলীয় সরকারও কোনো ধরনের আলোচনা ও মতবিনিময় ছাড়াই সেই পুরাতন আইন বহাল শুধু রাখেনি, একে আরও কঠোর করেছে।

সংশোধিত আইনের খসড়ায় পুলিশকে সরাসরি মামলা করা ও পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেই সঙ্গে কয়েকটি ধারা জামিন-অযোগ্য করা এবং আমলযোগ্য নয় এমন অপরাধ আমলযোগ্য হিসেবে গণ্য করায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অপব্যবহার নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সংশোধিত আইনটি কার্যকর হলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হবে। নিজের মতামত প্রকাশের জন্য হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেক তথ্যসেবী মানুষ, আইন বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকারকর্মীরা। তবে সরকার বলছে, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধ করার প্রবণতা বেড়েছে, অসৎ উদ্দেশ্যে এই মাধ্যমকে ব্যবহার করা হচ্ছে, নানা ধরনের উসকানি দেওয়া হচ্ছে এবং আঘাত দেওয়া হচ্ছে ধর্মীয় অনুভূতিতেও– এসব রোধেই আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে ।

আইনের ৫৪, ৫৬, ৫৭ ও ৬১ ধারায় উল্লিখিত অপরাধ আমলযোগ্য ও অ-জামিনযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই চার ধারার অপরাধগুলো হল কম্পিউটার ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধ, সিস্টেমে হ্যাকিং, সংরক্ষিত সিস্টেমে প্রবেশ ও ইলেকট্রনিক ফরমে মিথ্যা, অশ্লীল বা মানহানিকর তথ্য প্রকাশ। এই চার ধারার অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তির মেয়াদ ১০ বছর থেকে বাড়িয়ে ১৪ বছর করা হয়েছে। আর ন্যূনতম শাস্তি হবে ৭ বছর।

৫৪ ধারার অপরাধ:

কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মালিক অথবা জিম্মাদারের অনুমতি ছাড়া তার নথিতে থাকা তথ্য নষ্ট করা বা ফাইল থেকে তথ্য উদ্ধার বা সংগ্রহ করার জন্য কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম ও নেটওয়ার্কে প্রবেশ করা বা তা করতে অন্য কাউকে সহায়তা করা।

কোনো উপাত্ত বা উপাত্ত-ভাণ্ডার থেকে আংশিক তথ্য নিয়ে ব্যবহার করাও অপরাধ হিসেবে ধরা হয়েছে। কম্পিউটারে ভাইরাস ছড়ানো বা ছড়ানোর চেষ্টা, ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কের উপাত্ত-ভাণ্ডারের ক্ষতিসাধন করা, অন্য কোনো প্রোগ্রামের ক্ষতি করে নেটওয়ার্কের বিঘ্ন সৃষ্টি করা বা করার চেষ্টা, কম্পিউটার নেটওয়ার্কে অবৈধ প্রবেশে সহায়তা করা, অনুমতি ছাড়া কোনো পণ্য বা সেবা বাজারজাত করা, অযাচিত ইলেকট্রনিক মেইল পাঠানো, কারসাজি করে কোনো ব্যক্তির সেবা গ্রহণ বাবদ ধার্য চার্জ অন্যের হিসাবে জমা করাও অ-জামিনযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য করা হবে।

৫৬ ধারার অপরাধ:

এই ধারায় কম্পিউটার সিস্টেমের হ্যাকিং-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কম্পিউটারের তথ্য নষ্ট, বাতিল বা পরিবর্তন করা অজামিনযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে। মালিক বা দায়িত্বশীল ব্যক্তি না হয়ে কেউ কোনো কম্পিউটার, সার্ভার, নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ক্ষতি করাও একই ধরনের অপরাধ বলে গণ্য হবে।

৫৭ ধারার অপরাধ:

ইলেকট্রনিক মাধ্যমে মিথ্যা, অশ্লীল বা মানহানিকর তথ্য প্রকাশ-সংক্রান্ত অপরাধ এই ধারায় গণ্য হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে মিথ্যা ও অশ্লীল কিছু প্রকাশ করলে এবং তার কারণে মানহানি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগলে বা কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি দেওয়া হলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে।

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী শাহদীন মালিক যথার্থই বলেছেন যে, ''প্রতিনিয়ত আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করছি। আইনে তথ্যের সংজ্ঞায় মিথ্যা, অশ্লীল ও উসকানিমূলক বিষয়গুলো স্পষ্ট করা নেই। ইন্টারনেটে সত্য ভেবে কোনো তথ্য আদান-প্রদান করা হল, কিন্তু সেটাকে পুলিশ প্রাথমিকভাবে মিথ্যা বা অশ্লীল বা উসকানিমূলক বিবেচনা করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে পারবে। ফলে ভয়ভীতির কারণে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হবে।''

৬১ ধারার অপরাধ:

সংরক্ষিত সিস্টেমে প্রবেশ এই ধারার অন্যতম অপরাধ। সংরক্ষিত সিস্টেম হিসেবে ঘোষণা করা সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তির তাতে অননুমোদিতভাবে প্রবেশ শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ ছাড়া আইনের ৭৬ (১) ধারা সংশোধন করে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা কোনো পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ একই সঙ্গে তদন্ত করা যাবে না। যদি কোনো মামলার তদন্তের কোনো পর্যায়ে দেখা যায়, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত পরিচালনার দায়িত্ব পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে নিয়ন্ত্রক বা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তাদের কাছ থেকে পুলিশ কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা প্রয়োজন, তবে সরকার বা ক্ষেত্রমতো সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদেশের মাধ্যমে হস্তান্তর করতে পারবে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল এই ধারাগুলো সম্পর্কে এমনটি মত প্রকাশ করেছেন যে, এগুলো অ-জামিনযোগ্য করে দেওয়ায় মানুষ ভীত হবে, এটা আসলেই ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। এর ফলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে দোষী বলা যায় না। তাই কোনো অপরাধের বিচারের আগেই তা অ-জামিনযোগ্য বলে দেওয়াও গ্রহণযোগ্য নয়। অপরাধ অ-জামিনযোগ্য করে দেওয়ার ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে, আইনের অপব্যবহার হতে পারে। তা না করে বরং জামিন প্রদানের বিষয়টিআদালতের সন্তুষ্টির ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল।

আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ১৯৯৬-২০০১ সালের শাসনের শেষ পর্যায়ে জননিরাপত্তা আইন করেছিল ক্ষমতা দীর্ঘতর করার জন্য। যার উদ্দেশ্য ছিল মূলত ঢালাওভাবে বিরোধী নেতা-কর্মীদের মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানি করা। জননিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের ফলে পরবর্তী নির্বাচনে তার ফলও পেয়েছিল তারা। ২০১৩ সালে এসেও তাদের মধ্যে ভর করেছে ভিন্নমত দমনের ভূত। ফেসবুক-টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সরকার ও শাসনবিরোধী মত প্রকাশ করলে এবং তা সরকারের মনঃপুত না হলে এ আইনের অপব্যবহার হবে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর আইনি প্রক্রিয়ায় বাড়বে নির্যাতন, হয়রানি।

অন্যদিকে বিএনপি ক্ষমতায় এলে এ আইন তারা নিশ্চিতভাবেই ব্যবহার করবে তাদের বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণের অস্ত্র হিসেবে। দলটির পক্ষ থেকে সংশোধিত আইন 'নিপীড়ণমূলক', 'সংবিধানবিরোধী', 'কালো আইন' ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে মিনমিনে ধরনে প্রতিবাদ করা হয়েছে। মাদের বুঝতে বাকি থাকে না যে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে এ আইন বাতিল তো করা হবেই না বরং একে ব্যবহার করা হবে সরকারবিরোধীদের দমনে।

আপনি আচরি ক্ষমতা, ক্ষমতার অপব্যবহার প্ররোচিত করে, এই আপ্ত সত্যটি প্রায়ই ভুলে থাকার চেষ্টা করেন ক্ষমতাশীলরা। কথাটি কেবল রাষ্ট্রক্ষমতার ক্ষেত্রেই সত্য নয়, যে কোনো ধরনের ক্ষমতার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক অগ্রগতির ফলে নতুন ধরনের ক্ষমতার বিকাশ ঘটেছে। এক দশকেরও কম সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া নামক পরিসরটি সেই ক্ষমতায় অধিষ্টিত। অকুপাই আন্দোলন থেকে শুরু করে দিল্লি গণধর্ষণের প্রতিবাদ, আর আমাদের দেশে গণজাগরণ মঞ্চে অগণিত তরুণ অতি দ্রুত একটি বিষয়ে সমবেত হয়েছে সামাজিক এইসব যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পরিসরে।

কোথাও কোথাও এই সম্মেলন রাষ্ট্রীয় তথা রাজনৈতিক ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করেছে। ক্ষমতাশীলরা তখন তার নিকট নতজানু হয়েছে, হচ্ছে। ক্ষমতার ধারকরা সামাজিক যোগাযোগের এই ক্ষমতায়নকে তাই তাদের অন্যতম প্রতিপক্ষ বলে মনে করছে।

ক্ষমতার গহ্বরে লুকিয়ে থাকে অপব্যবহারের বীজ। মুহূর্তে একযোগে বহু মানুষের কাছে যে কোনো 'তথ্য' প্রচারের সুযোগ থাকলে অপপ্রচারের আশঙ্কাও থাকে। হচ্ছেও তাই। অপপ্রচার নানা ধরনের। ক্ষতিকর চিত্র, বিকৃত তথ্য বিপজ্জনক গুজব, অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে সৃষ্টি করা হচ্ছে সামাজিক সংঘাত ও অস্থিরতা। ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনে এই ধরনের প্রচারের শক্তি যেখানে নিয়ে গেছে তা কিছু দিন আগেও ছিল কল্পনার বাইরে।

প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে মিথ্যা কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কী ধরনের অনাসৃষ্টির ঘটনা ঘটতে পারে তা সাম্প্রতিক সময়ের দুয়েকটি উদাহরণ থেকেই সহজে অনুধাবন করা যায়। ফেসবুকে ছবি পোস্ট করার ঘটনায় ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুতে জাতিগত সহিংসতা কিংবা আকাশের চাঁদে দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর ছবি দেখা গেছে এমন খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার ঘটনা এর ভয়াবহ নমুনা হিসেবে আমাদের সামনে প্রতীয়মান। মূল কথা হচ্ছে রাজনীতি। কোনো না কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

সোশ্যাল মিডিয়া তথা প্রযুক্তির বিপজ্জনক ব্যবহার সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে এবং এই উদ্বেগ অস্বাভাবিক নয়। প্রয়োজনে কীভাবে তার ওপর নিয়ন্ত্রণ জারি করা যায়, তা বিবেচনা করতে হবে। কিন্তু সেই উদ্বেগের প্রশমনে সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ খড়গ স্থাপনের আগে গভীরভাবে ভাবনা-চিন্তা আবশ্যক। অপব্যবহার, অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য প্রচার নিয়ন্ত্রণ করার নীতি রাষ্ট্রের আবহমানকালের। কারণ তা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ।

কিন্তু আগাছা নিধনে তা যেন ঔষধি লতা-গুল্মের বিকাশের মতো বাধা না হয়।

এম এম খালেকুজ্জামান: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট