খেলাঘর: যুদ্ধকালের ভালবাসার গল্প

ফাহমিদুলহক
Published : 28 August 2008, 12:25 PM
Updated : 28 August 2008, 12:25 PM

যেকোনো যুদ্ধের অবশ্যম্ভাবী শিকার হয় নারী, তার শরীর হয় হানাদারের সহজ লক্ষ্যস্থল, সেই নারীর মনোবিকলন হয়ে দাঁড়ায় অন্যতম ফলাফল। মাহমুদুল হকের খেলাঘর উপন্যাসটির কাহিনী তেমন একজন নারীর। তবে

…….
খেলাঘর / মাহমুদুল হক / রচনাকাল: ১৪-২০ আগস্ট ১৯৭৮ / প্রকাশক: সাহিত্য প্রকাশ, ফেব্রুয়ারি ২০০৪, দ্বিতীয় সংস্করণ (প্রথম সংস্করণ: এপ্রিল ১৯৮৮) / ৮০ পৃষ্ঠা / ৭৫ টাকা
………
উপন্যাসটিতে তার আক্রান্ত হবার কথা নেই (একেবারে শেষে তা জানা যায়), আক্রমণ-উদ্ভূত মনোবিকলনেরও সচেষ্ট বর্ণনা নেই, রয়েছে বিকলন-পরবর্তী তার স্বপ্নময় কয়েকটি দিন, এক যুবার সঙ্গে তার গড়ে তোলা খেলাঘর — এবং যেকোনো খেলাঘরের ক্ষেত্রে যা ঘটে — তার ভাঙনের বর্ণনা।

যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে একটি দেশের মানুষকে অন্তঃত তিনটি শ্রেণীতে চিহ্নিত করা যায় — একদল আক্রমণের শিকার হয়, আরেকদল প্রতিরোধ গড়ে আর তৃতীয় দলটি দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লিখিত খেলাঘর উপন্যাসটি তিনটি চরিত্রের মধ্যে রেহানা আক্রান্ত, স্কুলমাস্টার মুকুল প্রতিরোধ গড়ছে আর তারই বন্ধু কলেজ-শিক্ষক ইয়াকুব দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। একারণে মুকুল চরিত্রটি খুব স্পষ্ট — তার চোখ ভরা স্বপ্ন, বুক ভরা সাহস — দেশ স্বাধীন হবেই, গেরিলারা পাক-সেনাদের পরাজিত করবেই। ইয়াকুব চরিত্রটি শুধু দ্বিধাগ্রস্তই নয় অস্পষ্টও — তার দেশপ্রেম আছে অথচ মনে করে "এই পরিস্থিতি চুপচাপ বসে থাকা ছাড়া আর কীইবা করার আছে।" এক পর্যায়ে তাকে বেশ দার্শনিকের মতো কথা বলতে শোনা যায়; খেলাঘরের অকুস্থল, পরিত্যাক্ত এক বাড়ি, আদিনাথের ভিটাকে নির্দেশ করে সে বলে, কেন যে মানুষ জায়গা-জমি করে, এখন এখানে বাতি জ্বালাবার কেউ নেই, ক'দিনরই বা সব ইত্যাদি। আর পুরো উপন্যাসজুড়ে রেহানা চরিত্রটি দুর্বোধ্য, তার আচরণ দেখে ইয়াকুবের পাশাপাশি পাঠকও বুঝে উঠতে পারে না, সে মাঝে মাঝেই অযৌক্তিক আচরণ কেন করে। অবশ্য উপন্যাসের একেবারে শেষের দিকে তার কার্যকারণসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়।

উপন্যাসের কাহিনী সংক্ষেপে এই: ঢাকায় উচ্চশিক্ষা নিলেও ইয়াকুব এখন গ্রামের একটি কলেজে শিক্ষকতার চাকরি নিয়েছে। এখানে আছে তার বাল্যবন্ধু স্কুলশিক্ষক মুকুল। স্কুল-কলেজ বন্ধ, মুকুল গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাজ করে আর দ্বিধাগ্রস্ত ইয়াকুব প্রকৃতি দেখে, শুয়ে-বসে সময় পার করে। এরই মধ্যে ঢাকা থেকে বন্ধু টুনুর একটি চিঠি আসে, চিঠির সঙ্গে টুনুর কাজিন রেহানাও আসে, ঢাকা থেকে পালিয়ে আসা একটি দলের সঙ্গে সে এখানে এসেছে। যুদ্ধের ডামাডোলে তাকে ঢাকা থেকে সরিয়ে গ্রামে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে, ইয়াকুবের দায়িত্ব তাকে কয়েকটা দিন আশ্রয় দেয়া। মুকুল বাস করে মাতবর পিয়ার মোহাম্মদের দখলে থাকা চারশ বছর আগের পরিত্যক্ত এক বাড়িতে, আদিনাথের ভিটায়। সেখানেই রেহানার থাকার জায়গা হয়, রেহানার আব্দার অনুসারে ইয়াকুবও সেখানে থাকে। তারা দু'জন সেখানে চুলা ধরিয়ে রান্না করে, পুকুরে গোসল করে, ফুল কুড়ায়, বাঁশি বাজায় — একটা অস্থায়ী সংসার গড়ে তোলে — যাকে ঔপন্যাসিক বলছেন খেলাঘর। এক পর্যায়ে, তৃতীয় দিনে, তাদের মধ্যে প্রেম হয়। পরদিন সকালে টুনু আসে, টুনুর কাছ থেকে ইয়াকুব জানতে পারে পঁচিশে মার্চ রাতে রেহানাকে রোকেয়া হল থেকে মিলিটারিরা ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়, দশদিন আটকে রেখে নির্যাতন করে, এরপর থেকেই রেহানার মনোবৈকল্য দেখা দেয়। পাঠক ও ইয়াকুব একসঙ্গে বুঝতে পারে রেহানার হঠাৎ-অযৌক্তিক আচরণের কারণ — কেন সে হঠাৎ হঠাৎ কেঁদে উঠতো, কেনইবা চোখের জল শুকানোর আগেই হেসে ফেলতো। ইয়াকুব এসব কাহিনী জানার পর কান্নায় ভেঙে পড়ে, আর রেহানা ফিরে যায় টুনুর সঙ্গে। ইয়াকুব রেহানাকে অনুরোধ করে থাকতে, কিন্তু টুনু সবকিছু বলে দেবার পরে, সে আর ইয়াকুবের সঙ্গে থাকতে রাজি হয় না। শেষ অধ্যায়ে মুকুলের সঙ্গে একদল মুক্তিযোদ্ধা আদিনাথের ভিটায় এসে আসন গাড়ে।

উপন্যাস পাঠের পর যুদ্ধের ডামাডোলে ইয়াকুবের অতি-নিস্পৃহতা দেখে পাঠকের মনে প্রশ্নের জন্ম দেবেই। এমনকি মুকুলের মুখ থেকে শোনা গেরিলাদের নানা সাফল্যকে সে 'অতি-উৎসাহ' বলে খাটো করতে চায়। উপন্যাসের শেষে যখন মুকুল জ্বলজ্যান্ত সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হাজির করে, সেই শেষ কয়েকটি বাক্য বর্ণিত হয়েছে এভাবে:

"মুকুল আমার পিঠে একটা থাপ্পড় কষিয়ে বললে, 'কই নাই তরে, মেজিক দেহামু, কই নাই? অহনে কী দেখতাছস ক, কী দেখতাছস?'

দেখছি সবকিছুই।"

কথক বা ন্যারেটর ইয়াকুবের এই অতি-নিস্পৃহতা চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলামের সহ্য হয়নি, তিনি খেলাঘর (২০০৬) ছবির শেষে দেখাচ্ছেন ইয়াকুব মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিচ্ছে।
—————————————————————–
কথক বা ন্যারেটর ইয়াকুবের এই অতি-নিস্পৃহতা চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলামের সহ্য হয়নি, তিনি খেলাঘর (২০০৬) ছবির শেষে দেখাচ্ছেন ইয়াকুব মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিচ্ছে।
—————————————————————–

মাহমুদুল হকের একাধিক উপন্যাস মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত, কিন্তু কোনো উপন্যাসেই মুক্তিযুদ্ধ প্রধান অনুষঙ্গ নয়, কাহিনীতে মুক্তিযুদ্ধ প্রত্যক্ষভাবে হাজির নেই। এই না-থাকা আরও প্রকটতর হয় যখন দেখা যায় উপন্যাসের মূল চরিত্রের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে নিরাবেগ, নিস্পৃহ অবস্থান। জীবন আমার বোন উপন্যাসের খোকা, খেলাঘর উপন্যাসের ইয়াকুব মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে চরমভাবে নিস্পৃহ। এমনকি নবলব্ধ প্রেমের সাথী রেহানার নির্দয় প্রস্থান তাকে এরকমভাবে বিচলিত করে না যে, এই যুদ্ধই রেহানার 'মিসহ্যাপ'-এর জন্য দায়ী, এরকম আরও কত রেহানার জীবন নষ্ট হচ্ছে পাকিস্তানি সামরিক আক্রমণের কারণে, সর্বোপরি আশপাশের সব মানুষ এই আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে, অতএব তারও যোগ দেয়া উচিত। মুকুল যখন উপন্যাসের শেষে প্রশ্ন করে "কী দেখতাছস", তখন ইয়াকুবের স্বগতোক্তি হলো "দেখছি সবকিছুই"। ইয়াকুব 'দেখছে', 'অংশ নিচ্ছে না'।

বৃহত্তর রাজনৈতিক ঘটনাবলীর মধ্যে এরকম অসহ্য নিস্পৃহতার একটা ব্যাখ্যা মাহমুদুল হকের আছে। আহমাদ মোস্তফা কামালের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে (http://arts.bdnews24.com/?p=1772) তিনি এইসব নিরাসক্তি-নিস্পৃহতার পেছনে বোদলেয়ারের প্রভাব আছে বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলছেন, "সবকালেই সবদেশে ওরকম কিছু মানুষ থাকে যারা প্রবল কোলাহলেও একা, যারা জনতার সঙ্গে মিলে যেতে পারে না। এদেরকে তুমি যদি অসুস্থ বল তবে তাই, কিন্তু এদের অস্তিত্ব আছে সেটা অস্বীকার করা যায় না।" সাক্ষাৎকারে তিনি এও বলেছেন যে, "আমি যেভাবে দেখেছি সেভাবেই তো লিখবো। আমি নিজে তো যুদ্ধ করি নি। যুদ্ধের সময় আমিও তো অবরুদ্ধ ঢাকা শহরে আটকে পড়া এক অসহায় মানুষ ছিলাম।"

মাহমুদুল হক সম্পর্কে এটা বলা হয় যে তার ভাষাভঙ্গি বিশেষায়িত, অন্য লেখকদের থেকে আলাদা। এমনকি এক উপন্যাস থেকে অন্য উপন্যাসের


……..
খেলাঘর -এর দ্বিতীয় সংস্করণের ব্যাক কভারে বই সম্পর্কে প্রকাশকের বিজ্ঞাপন
……..
ভাষাভঙ্গিতেও পার্থক্য লক্ষণীয়। স্বভাবতই খেলাঘর উপন্যাসের ভাষা তার অন্য উপন্যাসগুলো থেকে আলাদা। উপন্যাসের সংলাপ, বিশেষত রেহানার সংলাপগুলো তার চরিত্রের মতোই অবাস্তব, অচেনা। একাত্তরের সময়ে এই ভূখণ্ডের কোনো চরিত্রই — তা উপন্যাসে হোক বা চলচ্চিত্রে হোক — এভাবে কথা বলতো, তার নিদর্শন দেখা যায় না। রেহানার ব্যবহার করা উপমা-তুলনা-শ্লেষবাক্য শুনলে মনে হয় সূদূর অতীতের, অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতাব্দির কেউ কথা বলছে। আর তা পূর্ববঙ্গীয় বলে মনে হয় না। যেমন, ইয়াকুব নামটি রেহানার কাছে 'পালোয়ানচাটা' নাম। নামটি শুনে আরও মনে হয় একজন 'কদমছাঁটে হেঁড়েমাথা'র নাম সেটা। ছোটবেলার সখী পাতার দুঃখের কথা বলতে গিয়ে রেহানা জানায়, তার বাবা-মা ছিলো না, চাচীর সঙ্গে থাকতো। চাচীটি 'গালে পানের ঢিবলে গুঁজে' পাতাকে দিয়ে সব কাজ করিয়ে নিতো। কিংবা 'ছ্যা ছ্যা' শব্দের ব্যবহার — এসবের মধ্যে মজা থাকলেও স্বাভাবিক মনে হয় না। আবার রেহানার জীবনে হঠাৎ-ঘটে-যাওয়া দুর্ঘটনায় সে অ্যাবনরমাল হয়ে পড়েছে বলে, তার সংলাপও অ্যাবনরমাল হবে এমন যুক্তি উঠলে মেনে নেয়া যাবে না। রেহানার পাশাপাশি ইয়াকুবের মধ্যেও এধরনের সংলাপের সংক্রমণ ঘটেছে। যেমন রেহানা ইয়াকুবের নাম অপু দিলে সে বলে, 'একদম গাল-টেপা নাম, ওগরানো দুধের গন্ধ তাতে।' কিংবা ইয়াকুবের একটি নড়ড়শরংয সংলাপ, 'কোঁচড় পেতে পেয়ারাগুলো কে নিয়েছিলো?' এখানে 'কোঁচড়' শব্দটিও অপূর্ববঙ্গীয়। শিশুচরিত্রের সংলাপের মধ্যেও এই বুকিশ ভাব রয়ে গেছে। আহমাদ মোস্তফা কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মাহমুদুল হক বলছেন, "খেলাঘর উপন্যাসটার ভাষা আমার মায়ের মুখের ভাষা থেকে নেয়া। সংলাপগুলো খেয়াল করে দেখো, ওই ভাষায় আমি বা আমার চারপাশের কেউ-ই কথা বলে না। মা ওই ভাষায় কথা বলতেন।" মাহমুদুল হকের এই বক্তব্যে আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে কেন খেলাঘর উপন্যাসের সংলাপ অ-পূর্ববঙ্গীয় ঠেকে। প্রাসঙ্গিক এই তথ্যটি অনেকেরই জানা যে মাহমুদুল হকের পরিবার দেশবিভাগের কারণে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে পূর্ববঙ্গে এসেছিল।
—————————————————————–
উপন্যাসের আরেকটি দিক লক্ষ করার মতো। প্রধান চরিত্রগুলোর সবগুলোই পারিবারিক সম্পর্ক ও আত্মীয়তাবঞ্চিত; দূরাত্মীয়ের সঙ্গে অসহায় তাদের বেড়ে ওঠা।
—————————————————————–

উপন্যাসের আরেকটি দিক লক্ষ করার মতো। প্রধান চরিত্রগুলোর সবগুলোই পারিবারিক সম্পর্ক ও আত্মীয়তাবঞ্চিত; দূরাত্মীয়ের সঙ্গে অসহায় তাদের বেড়ে ওঠা। যুদ্ধের শিকার রেহানার বেড়ে ওঠাও বড়োই নির্মম। তার মা অন্য একজনের সঙ্গে পালিয়ে যায়, বাবা এজন্য আত্মহত্যা করে, এজন্য দাদা-দাদীর অভিভাবকত্বে সে বেড়ে ওঠে। ঘটনামুহূর্তে তার অভিভাবক বলতে কাজিন টুনু। ইয়াকুবের বাবা-মাও নেই, ঢাকায় এক বোনের বাসায় থেকে পড়াশুনা করেছে। মুকল চন্দ্রের আত্মীয়স্বজনেরও হদিস নেই, মাতব্বর পিয়ার মোহাম্মদের দয়ায় পরিত্যাক্ত আদিনাথের ভিটেয় কোনোরকমে থাকে, বিনিময়ে ঐ ঘরেই মাতব্বরের 'মৌজ'-এর নিরুপায় সাক্ষী হয়ে। জানা যায় ঢাকায় পড়াশুনা করলেও তেমন কোনো বন্ধু সেখানে নাই ইয়াকুবের, এই গ্রামে স্কুলসহপাঠী মুকুলকে পেয়ে তার বন্ধুভাগ্য কোনোক্রমে উৎরে যায়। এমনকি রেহানা যে সারাক্ষণ শৈশবের কথা বলে — সেই শৈশবের প্রিয় বান্ধবী পাতা মারা যায় পানিতে ডুবে আর বন্ধু বাবু মরে লরির নিচে চাপা পড়ে। এহেন আত্মীয় ও বান্ধববিবর্জিত প্রধানচরিত্রের সমাহার বাংলাসাহিত্যে পাওয়া দুর্লভ। এই একাকী মানুষগুলোর ওপরে আবার পড়েছে নির্মম যুদ্ধের ঘা, যদিও যুদ্ধের উপস্থিতি এখানে পরোক্ষ। কিন্তু রেহানা-ইয়াকুবের খেলাঘর তো যুদ্ধের কারণেই গড়ে ওঠে, আবার ভাঙে যুদ্ধের কারণেই। এই কারুণ্যের উৎসব উপন্যাসে কেন, তা বোঝা মুশকিল। প্রত্যক্ষ যুদ্ধের বাইরেও যে জীবন বহমান ছিল, প্রেম-ভালোবাসার জন্ম নিয়েছে আবার ভেঙেছে, জাতির জন্মলগ্নে যে কোনো কোনো মানুষ চরম নিরাসক্ত থাকতে পারে — এই বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা মেলে। কিন্তু চরিত্রগুলোর এই স্বজনহীনতার কিংবা করুণ সমাপ্তির কারণ কী তা উদ্ধার করা দুরূহ।
—————————————————————–
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বেশিরভাগ গল্প-উপন্যাসের মধ্যে যেক্ষেত্রে প্রবল বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার কারণে মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ বিষয়গুলো — যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব, পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতা, রাজাকারদের তৎপরতা ইত্যাদি — বড়ো হয়ে ওঠে, মাহমুদুল হক সেক্ষেত্রে মূল ঘটনাস্রোতের বাইরে অন্য যে-জীবন বয়ে চলে, তার চিত্র আঁকেন।
—————————————————————–

মাহমুদুল হকের খেলাঘর উপন্যাসটি সবমিলিয়ে আশ্চর্য একটি উপন্যাস। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বেশিরভাগ গল্প-উপন্যাসের মধ্যে যেক্ষেত্রে প্রবল বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার কারণে মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ বিষয়গুলো — যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব, পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতা, রাজাকারদের তৎপরতা ইত্যাদি — বড়ো হয়ে ওঠে, মাহমুদুল হক সেক্ষেত্রে মূল ঘটনাস্রোতের বাইরে অন্য যে-জীবন বয়ে চলে, তার চিত্র আঁকেন। এভাবে তিনি অনন্য অথবা পৃথক হয়ে ওঠেন।

পেনাং, মালয়েশিয়া, আগস্ট ২০০৮
—–

লেখকের আর্টস প্রোফাইল: ফাহমিদুল হক
ইমেইল: fahmidul.haq@gmail.com


ফেসবুক লিংক । আর্টস :: Arts