লক্ষণরেখা মাড়িয়ে সৌদি তরুণী

নাদিরা মজুমদার
Published : 27 July 2013, 05:28 AM
Updated : 27 July 2013, 05:28 AM

আমার প্রতিবেশি ইয়ার্ডাকে অনেকেই চেনেন। হঠাৎ সেদিন সস্ত্রীক এসে হাজির। বয়োবৃদ্ধ হলে কী হবে, খুব হৈচৈ করে বলতে লাগল, ''যাক, তুমিও তবে একবার সিএনএন, একবার আল জাজিরা দেখছ! দেখ কী কাণ্ড! পঁচিশ বছরের সুশ্রি মেয়ে রাহা মোহাররাক তরতর করে একেবারে হিমালয়ের মাথায় উঠে গেল; আবার তরতর করে নেমেও এল! গত বছর তোমাদের নিশাত মজুমদার, ওয়াসফিয়া নাজরীন যখন হিমালয়ের মাথায় উঠল– সে সময়টায় মনে কেমন এক অজানা রোমাঞ্চকর ভাব হয়েছিল আমার; রাহার বেলায়ও তাই হচ্ছে। আমারই যখন এত ভাল লাগছে, এভারেষ্ট বিজয়ের হীরক জয়ন্তীর বছরে তেনজিন নোরগে আর এডমন্ড হিলারি কতই না জানি খুশি হয়েছেন! হওয়ারই তো কথা।''

রাহাকে নিয়ে ইয়ার্ডার এমন আদিখ্যেতার মানে হয়? এভারেস্টে আরোহণের সিজন এবার একটু আগেভাগেই শুরু হয়েছিল। ইত্যোবসরে ভারতের দুই বোন তশি-নুগুশি এবং পাকিস্তানের ভাইবোন মির্যা আলি-সামিনা হিমালয়ের মাথায় একসঙ্গে গিয়ে যার যার দেশের পতাকা উড়িয়ে এসেছে। এর মধ্যে ফিরতি পথে বেশকিছু পর্বতারোহী মারা গেছেন; তাদের মধ্যে বাংলাদেশেরও একজন রয়েছেন। পর্বতারোহণ ঘিরে দুঃখ-আনন্দ মিশিয়ে কত কী বলার রয়েছে; সেসবে ইয়ার্ডার মুড নেই। আজকের আলোচনার এজেন্ডা তার নিজের।

ছিমছাম অকৃত্রিম, আন্তরিক মানুষ ইয়ার্ডা; উচিত কথা বলে বিনাদ্বিধায়। বলতে শুরু করল, ''রাহা, নিশাত, ওয়াসফিয়া বা তশি-নুগশি– সবাইকে আমি বাহ্বা দিই। তবে হিমালয়ের মাথায় এবং নেমে আসার পর হিমালয়ের পাদদেশে বোরকা-হিজাববিহীন রাহাকে দেখে কার না আনন্দ হয়েছে, বল? সবারই। সৌদি র্কতৃপক্ষ তো গোঁ ধরতে পারত, বলতে পারত যে মাইনাস বোরকা-হিজাব চলবে না। দরকার হলে রিলিজিয়ন পুলিশও সঙ্গে থাকতে পারত! সৌদিরা বলে যে নারীকে পুরুষের যৌন হয়রানি ঠেকানোর জন্য রিলিজিয়ন পুলিশ পোষা হচ্ছে। তবু তারা পুলিশি ব্যবস্থা নেয়নি।''

ইয়ার্ডা কেমন আনমনা হয়ে বলল, ''আচ্ছা, যৌন হয়রানি যারা করে তাদের জন্য কী ব্যবস্থা ওদের? পথেঘাটে নিরাপদে, উৎপাতবিহীন চলতে-ফিরতে নারীর ওপর 'বোরকা-হিজাব ট্যাক্স' বসানো ইউরোপে ভাবাই যায় না। ইউরোপ পারলে ওরা পারবে না কেন? তবে তুমি ঠিকই বলছ যে রাহা হিমালয়ে গেছে 'মধ্যপ্রাচ্যের পাশ্চাত্য' দুবাই থেকে। তা হোক, তবে দুবাই-কাতারের মতো সৌদিদেরও আধুনিকতার দু'একটা উদাহরণ স্থাপন করতে হচ্ছে। সে সুবাদে গত বছর লন্ডন অলিম্পিকের সময় পুরুষ-সংস্পর্শে আসার সুযোগ নেই এমন দু'একটি ইভেন্টে নারী অংশগ্রহণকারীর কথা সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল, মনে আছে তোমার? সশরীরে কাউকে পাঠানো হয়েছিল কিনা সেটা আমরা জানি না। তুমিই তো তখন ওদের কাগুজে পদক্ষেপ দেখে মহাখুশি হয়েছিলে, আমাদেরও তোমার দলে টেনে নিয়েছিলে, মনে নেই?''

''মাত্র বছরখানেক বাদে, দেখ কী বোম্ব্যাস্টিক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছে ওরা। একেই বলে প্রগতি। যাক বাবা, সৌদিরাও শেষপর্যন্ত ধর্মজ রক্ষণশীলতার হিজাব খুলতে শুরু করেছে। একে তুমি তুলনা করছ মুরগির ছানার হাঁটার সঙ্গে? ছোট পায়ের ছোট ছোট স্টেপ ফেলার সঙ্গে? তা কিছুটা সত্যি বটে। হিমালয়ে অবশ্য ট্রাফিকের ভিড়ভাট্টা নেই। তবে শেরপা ছাড়া আরোহণ-অবতরণ অসম্ভব; তারা প্রায় সবাই পুরুষ। অন্তত বলা যায় যে হিমালয়ে সীমিতভাবে 'বেলেল্লাপনা' মেনে নিল সৌদিরা! তাই-বা কম কীসে?''

এরপর টিভি স্ক্রিনের দিকে আঙুল তুলে ও বলল, ''দেখছ, লেডিস-ওনলি ডাক্তরখানায় মহিলারা সব আগাপাশতলা কালো রঙের বোরকা-হিজাব লাগিয়ে মহিলা ডাক্তারের অপেক্ষায় বসে আছে। এ-ও আর থাকবে না; থাকার কথাও নয়। দেখছ তো আবার পাশাপাশি গার্লস-ওনলি স্কুলে মেয়েদের দৌড়াদৌড়ি করে খেলতে দেওয়া হচ্ছে; সাইকেলেও চড়ছে ওরা।''

মুখবন্ধ শেষ করে ইয়ার্ডা দ্বিতীয় পর্বে চলে এল। বলতে শুরু করল, ''মধ্যপ্রাচ্যের সমাজ কেবলমাত্র যে ট্রাইবাল উপজাতিভিত্তিক তাই নয়, উপজাতির পরের ধাপে আসছে ক্ল্যান বা গোত্র। তারপর আবার বাপের একাধিক স্ত্রীর ঘরে জন্ম নেওয়া দশ-বারোজন ছেলের মাধ্যমে দশ-বারোটি বিভিন্ন মেজাজের পরিবার। উপজাতীয়, গোত্রীয় এবং অবশেষে একই ক্ল্যানভুক্ত পরিবারগুলো মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কমসে কম তিন সেট খসড়া নিয়মকানুন রয়েছে। তারপর গোত্র ও পরিবারগুলোর মধ্যে চলনসই সম্পর্ক বজায় রাখতে আরও দুই সেট নিয়মকানুন বানাতে হচ্ছে। সর্বশেষে আসছে একাধিক সন্তানের মাধ্যমে সৃষ্ট একাধিক পরিবারের মধ্যে মানানসই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য আরেক সেট নিয়মকানুন। এতসব থাকলে কী হবে, এরপরও গোত্র ও পরিবারভিত্তিক দ্বন্দ্ব লেগে যেতে পারে, যায়ও।''

''উমাইয়া আব্বাসীয় প্রসঙ্গে না গিয়ে বরং একটা আধুনিক উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্বচ্ছ হবে তোমার কাছে। সৌদি রাজপরিবারের কথাই ধরা যাক। রয়েল সৌদি আরবের প্রথম রাজা ছিলেন আবদুল আজিজ আল সৌদ। অর্থাৎ রাজা ছিলেন সৌদ নামক পরিবারভূক্ত। পরিবারের নামে রাজ্যের নাম হল সৌদি আরব। কারও কারও মতে, রাজা আল সৌদের সাকুল্যে সাঁইত্রিশ পুত্র; আবার কারও-বা মতে, পঁয়তাল্লিশ পুত্র ছিল। এ দুই সংখ্যার কোনটি সঠিক, কোনটি বেঠিক সে তর্কে না গিয়েও মোটামুটি বলা যায় যে, ২২ স্ত্রীর ঘরে নিশ্চয়ই যথেষ্ট সংখ্যক প্রিন্স ও প্রিন্সেসের পিতা তিনি হয়েছিলেন। রাজাকে সব প্রিন্সের জন্য প্রিন্সতুল্য ব্যবস্থা করতে হয়; সে সঙ্গে বিভিন্ন মায়ের নিজের সন্তানকে 'পুশ' করার অনিবার্য দেনদরবারও তাকে ঠেকাতে হয়েছে। ফলে সৌদি মন্ত্রিসভায় রয়েছেন কেবল প্রিন্সরা, একজন প্রিন্সেসও নেই। দেখ কী মিল। রোমকদের আইনেও নারীর ভোটধিকার বা রাজনৈতিক পদপ্রাপ্তির অধিকার ছিল না। নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র বলেই একালে তা সম্ভব হয়েছে।''

ইয়ার্ডা স্বপ্নদর্শী। তার মতে, একদিন হয়তো কোনো সৌদি প্রিন্সেস সেদেশের সর্বেসর্বা রানি হবেন। রাহাকে যদি আমরা পথপ্রদর্শক ধরি, হতেও পারে। আর কেনই-বা নয়, বিশ্বায়িত বৃহত্তর সিস্টেমে মধ্যপ্রাচ্যীয় গোত্র বা পরিবারভিত্তিক ধর্মজ ব্যবস্থাকে সরে যেতে হবে স্রেফ নিজেদের টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই। আমাদের পক্ষে হয়তো পরিবর্তনটি দেখে যাওয়া হবে না, এই আর কী!

আর যদি পরিবর্তন না হয় তো কী হতে পারে? ইয়ার্ডার মতে, ''ম্যাপে এখনও যে ইরাককে আমরা চিনি, সে দেশ কিন্তু যুদ্ধের পর অন্যরকম হয়ে গেছে। অভ্যন্তরীণভাবে অসংখ্য খণ্ডে বিভক্ত সেটি। লিবিয়ার অবস্থাও তাই, অনেকগুলো 'সিটি স্টেট' নিয়ে কাগজে-কলমে নামেমাত্র একক স্টেট সেটি। সারা মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা হয়তো সেরকমই হতে যাচ্ছে। একসময় চীনের মানুষজন আফিং-য়ে বুঁদ হয়ে থাকত। একালে মধ্যপ্রাচ্য ধর্মজ 'আফিং-য়ে' বুঁদ হতে বলছে। ফলে একদিকে 'দুনিয়ার সুন্নি এক হও', আর অন্যপ্রান্তে, 'দুনিয়ার শিয়া এক হও' বা এ জাতীয় কিছু একটা– ধর্মজ শ্লোগানের ধোঁয়ায় নিজেরা মারামারি কাটাকাটি করে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ভিন্ন মেজাজের আধুনিক 'সিটি স্টেট' তৈরির আয়োজনে ব্যস্ত; খানিকটা অজান্তেই হয়তো।''

''এর পরের ধাপে বিভিন্ন মেজাজধারী ধর্মজ সিটি স্টেটগুলো শত্রু 'ট্রাইব' ও 'ক্ল্যান' নির্বংশে নিয়োজিত থাকবে; পাশ্চাত্যের আমরা তখন অস্ত্র ও খাদ্যের বিনিময়ে মধ্যপ্রাচ্যের মহার্ঘ তেল, গ্যাস, খনিজ নিয়ে আসব। কী 'খাতিরজমা'র অবস্থাটি হচ্ছে, দেখছ তো! কিন্তু বাংলাদেশের অবস্থা ঠিক বুঝতে পারছি না। তোমাদের ওখানে আবার 'আস্তিক মুসলমান', 'নাস্তিক মুসলমান' তৈরি হচ্ছে। ফলে আস্তিকতা প্রমাণের জন্য সংখ্যালঘুদের জানমালের, উপাসনালয়ের পবিত্র রক্ষকের ভূমিকা থেকে সরে আসছ তোমরা।''

''ডেনমার্কের কোনো এক কার্টুনিষ্টের আঁকা কার্টুন নিয়ে বিশ্বব্যাপী রক্তাক্ত আন্দোলন হল। আফগানিস্তানে কোরান শরীফ পোড়ানো নিয়ে তোলপাড় হল। তুমি তো জান, সে প্রতিবাদে বিভিন্ন দেশের অনেক অমুসলমানও শরীক হয়েছিলেন। চিরায়ত সম্মানিতের ও চিরায়ত পবিত্র ধর্মগ্রন্থের অসম্মান আধুনিক মুক্তমনের কেউ মেনে নেয় না বলেই অন্য ধর্মের, ভিন্ন নৃতত্ত্বের হলেও তারা এ ধরনের দুষ্কর্মকে নাকচ করে দেয় বিনাদ্বিধায়। এর অন্তর্নিহিত মেসেজ একটিই– তোমার সব সম্মানীয়, শ্রদ্ধেয়কে আমিও সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি; বিনিময়ে আমার সব সম্মানীয়, শ্রদ্ধেয়কে সম্মান কর, শ্রদ্ধা কর।''

''একে স্রেফ মুক্ত মানসিকতার আদানপ্রদানও বলতে পার। তোমাদের জন্য আমার বেশ চিন্তা হচ্ছে। একক ব্যক্তিসত্ত্বা হিসেবে তোমরা একেকজন এত ভদ্র, নিরীহ– শ্রদ্ধা-সম্মান করতেও জান; তোমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে আমরাও জড়িত ছিলাম; তোমাদের সর্মথনে আমরা কত মেনিফেস্টেশন, কত কনসার্ট করেছি। সেই তোমরাই, জনতার ভিড়ে মবের অংশ হলেই অন্য মানুষ হয়ে যাচ্ছ। বর্তমানে তোমরাও ধনীর দলে পড়ছ। তোমাদের সামুদ্রিক তেল, গ্যাস, খনিজ, মাছ কত কী রয়েছে, আরও হবে। এসবের সদ্ব্যবহার নিয়েই না তোমরা ব্যস্ত থাকবে!''

''যা বলছিলাম'', বলে ইর্য়াডা বলতে থাকে, ''খেয়াল করে দেখেছ, দফার মাধ্যমে শুধু নারী নয়, সাধারণ পুরুষদেরও দফা করার চেষ্টা হচ্ছে। মাকে ভক্তিশ্রদ্ধা করার বিধান আছে, কিন্তু তিনি তো নারী; বা বোনদের বয়স-ভেদে শ্রদ্ধা, আদর-স্নেহের কথা বলা হচ্ছে। আবার পুরুষ জানে 'একজন পুরুষ ইকুয়েল টু দুই নারী'। প্রাচীন এ ফর্মূলা নতুন করে আবার পুরুষকে কী বিষম মানসিক দ্বন্দ্বের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। ভেবে দেখ, পরিবারের মধ্যেই তুমি উৎকৃষ্টতা ও নিকৃষ্টতার মানসিক যুদ্ধে নিরন্তর ক্ষতবিক্ষত হচ্ছ। একে প্রেজুডিস বা বৈষম্য যা-ই বল না কেন, পুরুষকে শিখতে ও প্র্যাকটিস করতে উৎসাহিত করছে।''

''অর্থাৎ আমি ইয়ার্ডা পুরুষ বলে অন্তর্নিহিতভাবেই তোমার চেয়ে উৎকৃষ্ট। অথচ আমি জানি যে, পুরুষ কী নারী কোনটি হয়ে আমি জন্ম নেব তা একমাত্র উপরওয়ালাই জানে। তাই এই 'সেক্সিষ্ট' মনোভঙ্গির শিকড় খুঁজতে শেষতক তোমাকে নারী-পুরুষের সামাজিক ভূমিকা ও আচরণ ঘিরে যে প্রথাগত স্টেরিয়োটাইপের জন্ম সেখানটায় গিয়ে থামতে হবে। তার মানে, বিষয়টি সামাজিকভাবে নির্মিত, স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নয়। তাই রাহা এভারেষ্ট জয় করে। গার্লস-ওনলি স্কুলে মেয়েরা সাইকেলে চড়ে। দেখবে যে একসময় মেয়েদের গাড়ি চালানোও মেনে নেওয়া হবে। কারণ চরম সেক্সিসিজম পুরুষকে যৌন হয়রানি, যৌন হামলা, যৌন হিংস্রতা ইত্যাদি করতে উৎসাহিত করে।''

ইর্য়াডা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল, "আট আনি চার আনি সিস্টেমের প্রসঙ্গে আসার সময় নেই আজ। তবে পিতৃগোত্রজাত বা প্যাট্রিলিনিয়াল সমাজব্যবস্থায় এ অতিপ্রাচীন রীতিটি এখনও ধরে রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বিভেদ পাকাপোক্ত করা হয়েছে। আরও সমস্যা হল যে, এ সিস্টেমের সঙ্গে দেনমোহর নামে আরেকটি অতিপ্রাচীন রীতি সংযুক্ত হওয়ায় নারী যৌন হয়রানির সহজ শিকার হচ্ছে। জান তো, বিবাহ বিচ্ছেদে সৌদি আরব বিশ্বের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে। সে দেশে পুরুষ যখন তখন অতি সহজে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে; ঘটায়ও। কিন্তু নারী যখন বিচ্ছেদ চায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা দেনমোহর ইস্যু পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখে। নারীকে শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়ে দেনমোহরের দাবিটি ছেড়ে দিতে হয়।''

ইয়ার্ডাকে বললাম, বাংলাদেশেও এমনটি হয়ে থাকে; আমার পরিচিতদের মধ্যেই তো হতে দেখেছি। বাংলাদেশে আবার বরপণের রীতিও চালু রয়েছে। ইয়ার্ডা বলল, ''দেখ, সবাই আমরা ব্যাড বা বদ-ট্রাডিশনগুলো কাট-ছাঁট করতে ব্যস্ত। গতি মন্থর হলেও সৌদিরাও তা করতে চাচ্ছে। নিজেদের টিকে থাকার স্বার্থেই শুধু গৌরবময় ট্রাডিশনই আমরা জানপ্রাণ দিয়ে রক্ষা করি। দফা-টফায় নিজের রফাদফা না করে তোমাদেরও তাই করতে হবে।''

''তোমরা পারবে, যেমনটি পেরেছিলে একাত্তরে। একবার পারলে বারবার, প্রতিবারই পারা যায়।''

নাদিরা মজুমদার : বিশ্লেষক, লেখক, সাংবাদিক।