ফ্যাসিবাদী জামায়াতকে যে-কারণে নিষিদ্ধ করা উচিত

মুনতাসীর মামুন
Published : 18 Nov 2012, 06:59 AM
Updated : 18 Nov 2012, 06:59 AM

জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা ইদানিং সারাদেশে শক্তির মহড়া দিচ্ছে। পুলিশ সদস্যদের পর্যন্ত বেধড়ক পিটিয়ে ওরা বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। জামায়াতের এ সব কাজকর্মে আমি খুবই আনন্দিত। কারণ দলটি সবসময়ই ফ্যাসিবাদী। পাকিস্তান আমলে কাদিয়ানিদের সঙ্গে দাঙ্গা লাগিয়ে ওদের হত্যা করার জন্য জামায়াত দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। ওদের দলনেতা মওদুদীর তখন ফাঁসির আদেশ হয়েছিল। সৌদী আরবের হস্তক্ষেপে ওরা বেঁচে গিয়েছিল। মওদুদী নিজেও ওভাবেই প্রাণে বেঁচেছেন। এরপর এল একাত্তর। এবারও একইভাবে ফ্যাসিবাদী ভূমিকা নিল দলটি। এ যাত্রাও ওরা বাঁচল সৌদী আরবেরই হস্তক্ষেপে।

বঙ্গবন্ধু-হত্যার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে পরিবর্তন এল, তার ধারাবাহিকতায় জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলেন। সবাই জানেন তিনি কীভাবে জামায়াতে ইসলামীকে পুনর্বাসিত করেছিলেন। অনেকেই বলেন, তিনি 'মুক্তিযোদ্ধা,' স্বাধীনতার ঘোষক।' কিন্তু একটি বিষয় স্পষ্ট যে তিনি যদি একাত্তরে সত্যিকার স্বতঃস্ফুর্ততার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে যেতেন বা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতি যদি তাঁর সত্যিকারের ভালবাসা থাকত তবে এ দেশে জামায়াতকে পুনর্বাসিত করার কাজটা করতে পারতেন না। সবাই জানেন, ১৯৭৮ সালে পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে গোলাম আজম বাংলাদেশে আসেন। এর পরের বছর থেকে এ দেশে জামায়াতের রাজনীতি আবার শুরু হয়।

পরে তো জানা গেছে যে, জিয়া আসলে 'পাকিস্তানপন্থী' ছিলেন। যে ঘোষণাটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কর্মীরা লিখে দিয়েছিলেন সেটি তিনি পশ্চাদপসারণ করার মুহূর্তে পাঠ করেছিলেন। এভাবে তিনি হয়ে গিয়েছেন 'মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক!'

এরই ফলে পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাবশালী হয়ে ওঠা জিয়াউর রহমান মৌলবাদী শক্তির পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন। একই কাজ করেছেন তার উত্তরসূরী আরেক সেনাশাসক এইচ এম এরশাদ। এই দুই শাসনামলে বাংলাদেশে মৌলবাদী শক্তি পূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে। আমাদের সামরিক শাসক ও সেনাবাহিনী মৌলবাদকে এ দেশের মাটিতে শেকড় গাড়তে সাহায্য করেছে সবসময়ই।

এই জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সবাই কখনও না-কখনও কাজ করেছে। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ দু'ভাবেই। বিএনপি, জাতীয় পার্টি তো বটেই- এমনকী আওয়ামী লীগও ওদের ব্যাপারে নমনীয়তা দেখিয়েছে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রেখে দিয়েছে তারা। এভাবে জামায়াতের উপকার হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত জামায়াতকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। আজকে তারা বলছে বিধি সংশোধন না করলে জামায়াতের নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। আগের নির্বাচন কমিশনের যারা আজ বড়-বড় কথা বলেন, তারা এ কাজ করতে পারেননি বা চাননি। নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে প্রয়াত কবীর চৌধুরীসহ আমরা ক'জন এবং সেক্টর কমাণ্ডারস ফোরামের নেতারা তখনকার নির্বাচন কমিশনকে বলেছিলাম যে বিধি অনুযায়ী এ দেশে জামায়াতের নির্বাচন করার কোনও সুযোগ নেই। ওরা মিটিমিটি হেসেছেন আমাদের কথা শুনে। তারপর অবৈধভাবে জামায়াতকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়েছেন।

আমি আজ অবাক হয়ে দেখি, এমনকী মিডিয়া পর্যন্ত জামায়াতের পক্ষে কোনো না-কোনোভাবে কাজ করছে। খুব কষ্টও পাই যখন দেখি যে, জামায়াতের নেতাদের 'ভি-চিহ্নিত' হাতের ছবি মিডিয়াতে প্রকাশিত হচ্ছে। পত্রিকায় ছাপা হচ্ছে, টেলিভিশনে দেখাচ্ছে। বিচারাধীন এই নেতাদের সবাই বয়োবৃদ্ধ। পলিশের কাঁধে ভর দিয়ে তারা আদালতে আসেন। মিডিয়াতে তাদের এ ধরনের ছবিগুলো প্রকাশিত হলে অনেকের মনে ভিন্ন অনুভূতি তৈরি হতে পারে। মনে হতে পারে যে এ বৃদ্ধদের এভাবে টানাহেঁচড়া করা হচ্ছে কেন! তাদের ভি-চিহ্নিত হাতের ছবি প্রকাশ করা কি খুব জরুরি? তাতেও কি মিডিয়া ওই ঘৃণিত শক্তিকে 'বিজয়ী' হিসেবে তুলে ধরছে না?

আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে দেখুন। সেখানে মাদ্রাসা থেকে পাশ-করা শিক্ষার্থীদের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হচ্ছে। দাখিল-কামিল পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থী ১০০ তে ১০০ বা ৯০ পেয়ে পাশ করছে। ওদিকে সাধারণ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এসএসসি-এইচএসসিতে পাচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ নম্বর। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ক্ষেত্রে যেহেতু ভর্তিপরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের পাশাপাশি এসএসসি-এইচএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়, তাই ওরা পিছিয়ে পড়ছে। এখন মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদগুলোতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা বেশি হারে ভর্তি হচ্ছে। আগামীতে এদের সংখ্যা আরও বাড়বে।

আমরা বলছি, হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে পাবলিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলের গুরুত্ব কমিয়ে দিতে হবে- নয়তো পাবলিক পরীক্ষার নম্বর বাদ দিয়ে শুধু ভর্তিপরীক্ষার ভিত্তিতে একজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দিতে হবে। কীভাবে কলেজ থেকে আর মাদ্রাসা থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন সমান হতে পারে?

রাজনৈতিক কারণে বিএনপি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আওয়ামী লীগও এটা চালু রেখেছে। এটা খুব আত্মঘাতী একটা ব্যাপার হয়ে গেছে। এই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দলের সদস্য। ফলে এরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে 'বড় একটা মাদ্রাসা' বানিয়ে ফেলছে। এর জন্য দায়ী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষগুলো।

দুঃখের বিষয়, এখন আমাদের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ কোনো কিছু গভীরে গিয়ে তলিয়ে দেখতে চায় না। কর্মকর্তারা এখানে-ওখানে আলোচনায় যাওয়া আর সই-স্বাক্ষর দেওয়ার মধ্যেই কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখেছেন।

এ সব নিয়ে বারবার বলা হচ্ছে। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলছি, এ সব ব্যবস্থা পাল্টান। আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নৈরাজ্য আরও বাড়লে এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষগুলোর পাশাপাশি তারাও দায়ী হবেন। সৈয়দ আলী আহসান ১৯৭২ সালে বলেছিলেন, 'এ দেশে মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধ করে দেওয়া উচিত।' তখন তিনি সাহস করে এ কথা বলতে পেরেছিলেন। যদি তাঁর কথা শোনা হত তবে আজ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার এ দশা হত না।

আমি বলব, এ বিষয়ে আদালতও আমাদের প্রতি সুবিচার করছেন না। আমরা তো আদালত কীভাবে চলবে তা বলে দিই না। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী করবে না-করবে তা বিশ্ববিদ্যালয়েরই সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে আদালত আমাদের ওপর কিছু চাপিয়ে দিতে পারেন না। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা রিকোয়ারমেন্ট আছে। সেটা বিবেচনা করা উচিত। আমরা কী বলতে চাচ্ছি সেটা ওদের শোনা উচিত। তারা কেন বলেন না যে, এক দেশে পাঁচ রকম শিক্ষা ব্যবস্থা থাকতে পারে না!

মানবাধিকারের কথা যদি বলতে হয়, জামায়াতে ইসলামীর মানবাধিকার কি আমাদের মানতে হবে? আর যদি তর্কের খাতিরে ওভাবে ধরেই নিই, তবে তো বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কেউ-ই ভর্তি হওয়ার দাবি করতে পারে। বাছাই কেন করব আমরা?

আমাদের রাজনীতিতে-সমাজে এভাবে জামায়াত-পোষণের ফল হচ্ছে এটাই যে, এখন জামায়াত সদস্যরা পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাদের পেটাচ্ছে। রাস্তায আহত হয়ে পড়ে থাকা পুলিশকে মারধর করছে- এ সব আমাদের দেখতে হচ্ছে। আমি এ লেখার শুরুতে বলেছিলাম, জামায়াতের এ সব কাজকর্ম দেখে আমি আনন্দিত। কথাটির ব্যাখ্যা দিচ্ছি। ওদের কাজকর্ম দেখে আশা করি এখন সবাই বুঝতে পারবেন জামায়াত আসলে কী ছিল, আছে বা থাকবে। আর এটাই আমার খুশির কারণ।

এখনকার তরুণ জামায়াত-কর্মীদের দেখে চেনার উপায় নেই যে ওরা জামায়াত। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে ভয়ানক বলে মনে হয়। এ যুগের বাচ্চা-জামায়াতীরা রাসুলের সুন্নত মেনে টুপি-দাঁড়ি রাখে না। ইসলামী পোশাক বা পাঞ্জাবি পরে না। তাদের অভিহিত 'নাসারাদের' মতো জিন্সের প্যান্ট বা শার্ট পরে। দাঁড়ি-গোঁফ কামায়। কাঁধে ব্যাগ ঝোলায়। প্রযুক্তিতেও দক্ষ ওরা। সর্বোপরি, একাত্তরের কথা জেনেও ওরা এই দলের রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছে। তাই ওরা হবে একাত্তরের জামায়াতের চেয়েও অনেক-অনেক বেশি ভয়ানক।

দেথতে পাচ্ছি, এতদিনে নড়েচড়ে বসেছেন সবাই। জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। দেখা যাক কী হয়। আমি শুধু একটা কথাই বুঝি। যে যে ভাষা বোঝে তার সঙ্গে সে ভাষায় কথা বলতে হয়। জামায়াত যদি নাশকতাকে পলিসি হিসেবে নেয় তবে তার সঙ্গে সেভাবেই ট্রিট করতে হবে। জামায়াতীরা ভদ্র ভাষা বোঝে না।

বঙ্গবন্ধু সাহস করেছিলেন। নিষিদ্ধ করেছিলেন জামায়াতের রাজনীতি। দালাল আইনে বিচার করেছিলেন কিছু স্বাধীনতা-বিরোধীর। গোলাম আজমসহ কিছু চিহ্নিত জামায়াতী নেতা ও যুদ্ধাপরাধীর নাগরিকত্বও বাতিল করা হয়েছিল। এমন সাহস করার মতো নেতা বর্তমান আওয়ামী লীগে নেই কেন এ প্রশ্ন আমাকে অনেকেই করেছেন। আমি এর উত্তরে একটা কথাই বলব, এই আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ নয়। এখানে নানা ধরনের লোক আছেন। এই নেতারা নানা সময়ে নানাভাবে সমঝোতা করেছেন, করে যাচ্ছেন। এই নেতাদের কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। আর যে সমাজে সবাই দু'নম্বরী কাজে ব্যস্ত সেখানে নেতাদের কাছে বেশি কিছু আশা করা ঠিক নয়। তাদের পক্ষে বঙ্গবন্ধু বা জাতীয় চার নেতা হওয়া সম্ভব নয়।

আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তো একা সবকিছু করা সম্ভব নয়। আমরা চেয়েছিলাম যুদ্ধাপরাধীদের একটা রাজনৈতিক বিচার হোক। এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-প্রক্রিয়া শুরু করার সাহস দেখিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ জন্য আমরা মনে করি, তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন।

জামায়াতের সাম্প্রতিক কার্যকলাপের পেছনে বেশ ক'টি কারণ থাকতে পারে। তারা এর মাধ্যমে কয়েকটি 'বাণী' দিতে চাচ্ছে। প্রথমত, যুদ্ধাপরাধের বিচার জামায়াত বা বিএনপি কেউ হতে দিতে চাইবে না। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের কয়েকজনের বিচার প্রায় শেষের পথে। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে আমরা আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যেই কয়েকজনের ব্যাপারে রায় হয়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে জামায়াতের একাংশ ক্ষুব্ধ হযে উঠতে পারে।

দ্বিতীয়ত, নির্বাচন আসছে। সঙ্গত কারণেই জামায়াত শক্তির মহড়া দিচ্ছে। তারা দেখাতে চাচ্ছে যে, তারা একটি শক্তি। তারা এর মাধ্যমে বোঝাতে চাচ্ছে তারা যেভাবে চাইবে সেভাবে সবকিছু হতে হবে। বলতে চাচ্ছে- চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তিগুলো তাদের সমর্থন করছে। তারা তখনই নির্বাচনে অংশ নিতে চাইবে যখন তারা ভাববে যে তারা বিজয়ী হবে।

তৃতীয়ত, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন করে তারা বুঝিয়ে দিল যে, তাদের কথামতো চলতে হবে। চতুর্থত, পুলিশকে যেভাবে তারা পেটাতে পারছে তাতে সুশীল সমাজ বা বুদ্ধিজীবীদের জন্যও এটা একটা সতর্কবার্তা।

অনেকে বলছেন, বিএনপি-জামায়াতের জুটি ভেঙ্গে যাচ্ছে। আমি বলব, বিএনপি সবসময় জামাতের পাশে ছিল। এখনও আছে। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের তো খুব বেশি পার্থক্য নেই। বিএপির লোকেরা সাফারি পরেন। আর পুরনো জামায়াতীরা ইসলামী পোশাক পরেন। এই তো?

বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া সম্প্রতি ভারত সফর করে এসেছেন। এ দলটি সবসময় বলে এসেছে যে, ভারতের সঙ্গে তারা 'নতজানু' পররাষ্ট্রনীতি মেনে চলে না। এখন এ দল যদি ভারতের কাছে নতজানু হয়ে যায়, তাদের ভাষায়- 'ভারতপন্থী' বা 'ভারতের এজেন্ট' হয়ে ওঠে- তাতেও জামায়াতের কোনো সমস্যা নেই। মজার বিষয় হল, জামায়াতের পত্রিকা দৈনিক সংগ্রামে প্রবন্ধ লেখা হচ্ছে এ সব বিষয়ে। তার লিখছে, ভারতের সঙ্গে আমাদের যে 'মধুর সম্পর্ক' এটা ধরে রাখতে হবে। এটা নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না!

আমাদের সুশীল সমাজের লোকেরা এখন এতটাই সুশীল হয়ে গেছেন যে শুধু উপদেশ দিয়ে বেড়াচ্ছেন। আমি মনে করি, একজন তখনই উপদেশ দিতে পারবেন যখন তিনি নিজে কাজটি করে ফেলবেন। অনেকেই বলছেন যে, আওযামী লীগ এটা পারল না ওটা পারল না। কিন্তু কী পারেনি সেটা তো বলছেন না। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় ছিল। তারা কী করেছে জাতি সেটা দেখেছে। অনেকেই হয়তো ভুলে গেছেন সে সব দিনের কথা। জামায়াত আবার তাদের এখনকার কার্যকলাপ দিয়ে বুঝিয়ে দিল, তারা কী করতে পারে। আমাদের তাই সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে হবে।

আমি মনে করি, এ পরিস্থিতিতে আমাদের সবার ভেবে দেখার সময় হয়েছে যে এ দেশে জামায়াতকে রাজনীতি করতে দেওয়া ঠিক হবে কিনা। এমনকী যারা জামায়াতকে সমর্থন দেবে, তাদেরও এ দেশে রাজনীতি করতে দেওয়া উচিত নয়। আমরা এদের প্রতিরোধ করব, রুখে দেব, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি হওয়া উচিত।