গোপালগঞ্জে কয়েক ঘণ্টা

বিভুরঞ্জন সরকারবিভুরঞ্জন সরকার
Published : 27 May 2017, 04:46 AM
Updated : 27 May 2017, 04:46 AM

একটি কাজে অল্প সময়ের জন্য গোপালগঞ্জ গিয়েছিলাম। ১৯ মে সকাল ৯টায় ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রা শুরু করি, পরের দিন দুপুর ৩টায় গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন থেকে ঢাকার বাসে উঠি। আগেও একাধিকবার গোপালগঞ্জ গিয়েছি। তবে বাসে যাওয়া এবারই প্রথম।

প্রচণ্ড গরমের কারণে যাওয়ার সময় বিআরটিসির এসি বাসের টিকিট কাটি। অগ্রিম টিকিট না কাটায় একেবারে শেষের দিকে আসন পাই। বিআরটিসির বাসটি মোটামুটি ঠিক সময়ই গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। আমাকে ধারণা দেওয়া হয়েছিল যে, দুপুর ২টার মধ্যেই গোপালগঞ্জ পৌঁছুতে পারব। কিন্তু মাওয়া ফেরিঘাটে গিয়ে বুঝলাম নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। ঘাটে প্রচণ্ড যানজট। ফেরি নেই। কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে সেটাও কেউ বলতে পারল না।

হাঁটু মুড়ে বাসের মধ্যে বসে থাকতে ভালো না লাগায় একটু হাঁটাহাঁটি করার জন্য নিচে নামলাম। রোদের তাপ সহ্য করা যায় না। মনে হয় চামড়া ঝলসে যাবে। ঢাকা শহরে রোদের মধ্যে খুব একটা ঘোরাফেরা করতে হয় না। সকালে বাসা থেকে বেড়িয়ে বাসে উঠে অফিসে ঢুকে পড়ি। সারা দিন সূর্যের মুখোমুখি হতে হয় না। অফিস থেকে যখন বাসায় ফেরার সময় হয় তখনতো সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়ে, সারা দিন তাপ দিয়ে তখন সে ক্লান্ত-শ্রান্ত। আমার শরীর পোড়ানোর ক্ষমতা তার আর নেই।

মাওয়া ঘাটে সূর্য যেন মওকা পেল। আমার উপর তার শক্তিমত্তা প্রয়োগের সুযোগ ছাড়ল না। সূর্যের এ প্রতিশোধপরায়ণতায় আমি কিছুটা কৌতুকবোধ করলাম।কয়েক পা এগোতেই বুঝতে পারলাম এভাবে বাইরে থাকা যাবে না। সামনেই একটি খাবারের দোকানে ঢুকে পড়লাম এক পেয়ালা চা নিয়ে বসে বসে সময় কাটানোর জন্য।

আমার আগে আরও অনেকেই টেবিল দখল করে 'রাজা-উজির' মারতে শুরু করেছেন। কথায় আছে চায়ের টেবিলে ঝড়। এক টেবিল থেকে একজনের কথা কানে এল। বললেন: "আর মাত্র বছর দেড়েক পরেই পদ্মা পেরুতে আমাদের আর এভাবে সময় নষ্ট করতে হবে না। ঢাকা থেকে বাসে উঠব, চার ঘণ্টার মধ্যেই গোপালগঞ্জ পৌঁছে যাব।"

আমার কেন যেন একটি দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল। যমুনা সেতু হওয়ার আগে স্বপ্ন দেখতাম সেতু হয়ে গেলেই ছয় ঘণ্টায় পঞ্চগড় পৌঁছে যাব। শুরুর দিকে ছয় ঘণ্টায় না হলেও সাত-আট ঘণ্টায় পৌঁছানো যেত। কিন্তু এখন? কয়েকদিন আগে পঞ্চগড় থেকে রাত ৯টার বাসে উঠে ঢাকায় পৌঁছালাম পরদিন দুপুর ১টায়। কয় ঘণ্টা লাগল?

টাঙ্গাইল থেকে ঢাকা আসতেই তীব্র যানজটের কারণে জান জেরবার হয়ে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সবকিছু স্থবির হয়ে থাকে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে যে প্রচারণা শোনা যায় তা মিথ্যে বলে মনে হয়। এখন আশা করা হচ্ছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল চার লেনের কাজ শেষ হলেই দুর্ভোগ শেষ হবে। হবে কি? নাকি নতুন কোনো দুর্ভোগ আমাদের স্বপ্ন যাত্রায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে?

পাশের আরেক টেবিলে বসা কেউ একজন বললেন: "সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলা হলেও বাস্তবে সম্ভবত তা সম্ভব হবে না।"

আরেকজন বললেন: "না সরকার এ ক্ষেত্রে খুবই সিরিয়াস। আগামী নির্বাচনের আগে পদ্মা সেতু চালু করে এই বিরাট সাফল্যের গান গেয়েই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ব্যাপক সমর্থন লাভের আশা করছে।"

আরেকজনের কণ্ঠে পাওয়া গেল কিছুটা অবিশ্বাসের ধ্বনি। তিনি বললেন: "সরকার চাইলেই তো আর গায়ের জোরে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারবে না। মাওয়া পয়েন্টে কিছু কারিগরি সমস্যা দেখা দিয়েছে। জাজিরা পয়েন্টে অবশ্য কোনো সমস্যা নেই। সেদিকের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাবে। মাওয়ার দিকটা পিছিয়ে থাকবে। এই কারিগরি সমস্যা সমাধানযোগ্য, কিন্তু সময় সাপেক্ষ।"

আরেকজন বললেন: "যা-ই বলুন না কেন, পদ্মা সেতু এখন চরম বাস্তব। ২০১৮ সালের মধ্যে না হলেও ২০১৯ সালের গোড়াতেই এর কাজ শেষ হবে।"

কেউ একজন বললেন, "২০১৮ সালের মধ্যে শেষ না হলে ভোটে তার প্রভাব পড়বে না?"

"কী যে বলেন। পদ্মা সেতু হলেই কি দেশের সব মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে? দেশে এমন মানুষ অনেক আছে যারা মনেপ্রাণে আওয়ামী লীগকে ঘৃণা করে। শেখ হাসিনা পথ-ঘাট সোনায় মুড়িয়ে দিলেও এরা নৌকায় ভোট দেবে না। এদের জন্যই দেশের রাজনীতিতে বিভাজন দূর হচ্ছে না।" আরেকজনের উত্তর।

একজন বললেন: "বিএনপিতো মনে করছে এবার তাদের পালা। আমাদের দেশের মানুষ একবার 'এ'-কে, আরেকবার 'বি'-কে ভোট দিতে পছন্দ করে। মানুষ পরিবর্তন চায়। গত নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় মানুষ তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি। এবার সেরকম হবে না। বিএনপি ঠেকে শিখেছে।"

কোনো একজন বাস কন্ডাকটর চেঁচিয়ে বললেন: "ঘাটে ফেরি লেগেছে।"

আর যায় কোথায়? সবাই যে যার মতো উঠে দাঁড়াল এবং যার যার বাসের দিকে রওয়ানা দিল। আমিও আমার বাসে গিয়ে উঠলাম। এসি বাস কিছুটা আরামবোধ করলাম। তবে ফেরিতে উঠতে উঠতে দুপুর ২টা পেরিয়ে গেল।

যখন গোপালগঞ্জ পৌঁছানোর কথা তখনও আমরা মাওয়া ঘাটেই। গোপালগঞ্জ পৌঁছলাম বিকেল ৫টায়। আগে থেকেই একটি হোটেলে রুম বুক করা ছিল। বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি অটোরিক্সা নিয়ে হোটেলের পথ ধরলাম। হোটেলটি বড় রাস্তার থেকে একটু ভেতরের দিকে। কিন্তু হোটেল পর্যন্ত অটোরিক্সা নিয়ে যেতে পারলাম না। সরু রাস্তায় বড় বড় গোল আকারের পাইপ বসানোর জন্য খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। পায়ে হেঁটে কোনোরকমে চলাচল করা যায়। উন্নয়নের বিড়ম্বনায় অটোরিক্সা ছেড়ে পায়ে হেঁটেই হোটেলে পৌঁছুতে হল।

হোটেলের রিসিপশনে খাতায় নামধাম লিখে সই করে রুমের চাবি নিতে গিয়ে শুনলাম ভোরবেলা থেকেই সারা শহরে বিদ্যুৎ নেই। কখন বিদ্যুৎ আসবে কেউ বলতে পারে না। সকাল থেকে টানা চালানোয় তেলের জেনারেটরও তখন আর কাজ করছিল না। হোটেলের রুমে ঢুকে অল্পক্ষণের মধ্যেই ভ্যাপসা গরমে ঘেমেনেয়ে একাকার হয়ে বেরিয়ে এলাম।

যারা গোপালগঞ্জের বাইরে বাস করেন তাদের কারো কারো ধারণা এখন গোপালগঞ্জেই বুঝি সর্বসুখ বিরাজ করে। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। অন্য জেলায় যেমন মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা আছে, গোপালগঞ্জের মানুষেরও তাই।

যাহোক বিদ্যুৎ না থাকায় হোটেলের বাইরে বেরিয়ে মনে হল শহরটা একটু ঘুরেফিরে দেখি। উন্নয়নের জোয়ারে গোপালগঞ্জ কতটা ভাসছে সেটা না দেখলে কি চলে! 'দৈনিক সংবাদ' পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি কবি রবীন্দ্রনাথ অধিকারীকে ফোন দিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে তিনি পড়াশোনা করেছেন। তখন থেকেই তার সঙ্গে আমার পরিচয়। গোপালগঞ্জে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা না করি কীভাবে?

ফোন পেয়ে রবি উল্লসিত। আমাকে লেকের ধারে শিশুপার্কের কাছে গিয়ে অপেক্ষা করতে বললেন। একজনের কাছ থেকে নির্দেশনা নিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই লেকের ধারে পৌঁছে গেলাম। প্রায় সন্ধ্যা হয় হয়। দিনব্যাপী বিদ্যুৎ নেই। ঘর ছেড়ে তাই অনেকেই বাইরে বেরিয়ে পড়েছেন। লেকের দুপাশে অসংখ্য মানুষের ভীড়। লেকের পানির দিকে তাকিয়ে আমি আঁতকে উঠলাম। এগুলো পানি, না বিষাক্ত তরল পদার্থ? রবি আসতেই তার উপর ক্ষোভ ঝারলাম। বললাম: "আপনারা থাকতে গোপালগঞ্জের মতো জায়গায় লেকের এ কী হাল!"

রবি কবি মানুষ, স্বভাব লাজুক। একটু হেসে বললেন: "এই আর কি, এসব নিয়েই আমরা আছি!"

তার কাছ থেকেই জানলাম, মরা মধুমতি নদী খনন করে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই লেকটি হয়েছে। শহর সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি এটা বাস্তবায়ন করেছে। ২০১২ সালে এর কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে এর রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে গোপালগঞ্জ পৌরসভা। পৌরসভা যে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করছে সেটা লেকের পাড়ে গেলে যে কেউ বুঝতে পারবেন। শহরের বর্জ্য, আবর্জনা ফেলার জায়গা হয়েছে এ লেকটি। অনেকেই নাকি বলেন: "লেকের পানির দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়বেন।"

কোটি কোট টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য যে লেকটি তৈরি করা হয়েছে, তা যে এখন মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা দেখার কি কেউ নেই?

লেকের পূর্ব দিকেই 'শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম'। বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল ছিলেন খেলাধুলার প্রতি নিবেদিত প্রাণ। তিনি নিজে খেলোয়াড় ছিলেন, ছিলেন অসাধারণ ক্রীড়া সংগঠক। তাঁর হাতেই গড়ে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী 'আবাহনী ক্লাব'। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে শেখ কামালের সঙ্গে আমারও সামান্য পরিচয় ছিল।

অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী শেখ কামাল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে জীবন দিয়েছিন পিতার সঙ্গেই। তাঁর নামে গোপালগঞ্জে একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম হয়েছে দেখে আমার বেশ ভালো লাগল। স্টেডিয়ামের দেওয়াল শীর্ষে নামফলকে চোখ পড়তেই দেখলাম ইংরেজিতে লেখা 'SHEIKH' শব্দটি থেকে 'E' অক্ষরটি হাওয়া হয়ে গেছে। কারোই কি এদিকে নজর পড়েনি?

রবিদার কাছে শুনলাম, প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেছেন।

বলা হয়েছিল, স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিকমানের হবে। তা হয়নি। আন্তর্জাতিক কোনো খেলা হলে এখানে প্লেয়ারদের থাকার মতো ভালোমানের কোনো হোটেল নেই। ফলে স্টেডিয়ামটি প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বছরে দুই দিন– ১৬ ডিসেম্বর ও ২৬ মার্চ– স্টেডিয়ামে সরকারি অনুষ্ঠান হয়। স্থানীয় কোনো ক্লাবের খেলোয়াড়রা মাঝেমধ্যে হয়তো ক্রিকেট খেলেও থাকে। কিন্তু বিপুল পরিমাণ অর্থব্যয়ে নির্মিত স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিক মানের না হওয়ায় এখানে কোনো খেলার আসর বসে না। অথচ এর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে শেখ কামালের নাম।

আমাকে কিছুটা বিষণ্ন দেখে রবি দা বললেন: "চলেন আপনাকে আরেকটি জিনিস দেখাই।"

নিয়ে গেলেন 'শেখ ফজলুল হক মণি স্মৃতি মিলনায়তনে'। বিশাল একটি স্থাপনা; কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে এটি বানাতে। শিল্পকলা একাডেমীর ব্যবস্থাপনা, এই মিলনায়তনটিতে ভালো কোনো অনুষ্ঠান করা যায় না। ৭৫০ আসনের এই মিলনায়তনটি তৈরি হয়েছে ত্রুটিপূর্ণভাবে। ফ্যানগুলো এমনভাবে লাগানো হয়েছে যে, দর্শকদের গায়ে বাতাস লাগে না। মিলনায়তনের ভেতরে 'সাউন্ড সিস্টেম' খারাপ। কথা বললে প্রতিধ্বনি হয়।

এত বড় মিলনায়তনের মূল স্টেজটি এক বছর যেতে না যেতেই ভেঙে গেছে। সম্প্রতি মিলনায়তনের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। বরাদ্দ প্রায় ছয় কোটি টাকা। অনেকেরই আশঙ্কা, অর্থ ব্যয় হবে ঠিকই, কিন্তু মিলনায়তনটি কারও কাজে লাগবে না।

রবীন্দ্রনাথ অধিকারীর কাছ থেকে আরও জানতে পারলাম, ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের উত্তরপ্রান্তে একটি 'মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স' এবং প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি 'সুইমিংপুল' বানানো হলেও এগুলোর কোনো ব্যবহার বা উপযোগিতা আছে বলে গোপালগঞ্জবাসী জানে না। মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে মেয়েদের কোনো ক্রীড়া হয়েছে বলে কারো জানা নেই। সুইমিংপুলেও নেই নিয়মিত সাঁতার অনুশীলনের কোনো ব্যবস্থা। কোচ নেই, তাই প্রশিক্ষণও হয় না।

গাদাগাদা টাকা ব্যয় করে চোখ ধাঁধানো অবকাঠামো নির্মাণ করে সেগুলো যদি সাধারণ মানুষের কোনো উপকারে না আসে তাহলে এমন অবকাঠামোর পেছনে অর্থ ব্যয় কি অপচয় নয়?

সময় স্বল্পতার কারণে গোপালগঞ্জের অনেক কিছুই দেখতে পারিনি। অনেকের সঙ্গে খোলামেলা কথাও বলতে পারিনি। তবে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অন্ততপক্ষে জনা পনেরো মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি, বর্তমান সরকারের আমলে গোপালগঞ্জবাসী অনেক কিছুই পেয়েছেন। তবে তার সবকিছুই তাদের চাহিদা বা প্রয়োজন অনুযায়ী নয়। তারপরও মানুষের মনে খুব বেশি ক্ষোভ-অসন্তোষ নেই। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি তাদের সমর্থন ও ভালোবাসার কোনো কমতি নেই।

গোপালগঞ্জের তিনটি সংসদীয় আসনের একটিতে শেখ হাসিনা, একটিতে শেখ সেলিম এবং আরেকটিতে ফারুক খান সংসদ সদস্য। তাঁরা কয়েক টার্ম ধরেই নির্বাচিত হয়ে আসছেন। আগামী নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার আশঙ্কা কারো মনে নেই। একজন মজা করে বললেন: "গোপালগঞ্জের ভোট অন্যরকম। এখানে কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি হয় শতভাগেরও উপরে!"

কীভাবে সেটা সম্ভব হয় তা আর জানতে চাইনি। সবকিছুর ব্যাখ্যা হয় না। সবকিছুর ব্যাখ্যা সবার কাছে চাইতেও হয় না।

কিছু কিছু বিষয় ব্যাখ্যাতীত থাকলে কি দেশে প্রলয় ঘটে যাবে?