ভাষার বিকৃতিরোধ আবশ্যক

নজরুল মিন্টো
Published : 6 Nov 2012, 06:30 PM
Updated : 28 Feb 2012, 11:19 AM

বেশ কয়েক বছর আগে একটি লেখা পড়েছিলাম। লেখাটি ছিল সংসদ সদস্যদের উপর কটাক্ষ করে লেখা। লেখক সংসদ সদস্যদের বক্তৃতা শুনে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন- 'কেউ বুঝুক না বুঝুক, আসুন আমরা এখন থেকে যে যার এলাকার ভাষায় কথা বলি।' (ঐ সময় কতিপয় সংসদ সদস্য এমন আঞ্চলিক উচ্চারণে বক্তব্য রাখতেন যা সাধারণের বুঝার ক্ষমতা ছিল না।) তবে তার এ প্রস্তাবে সংসদ সদস্যরা সাড়া না দিলেও দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রযুক্তিবিদরা, যারা তখন কম্পিউটার নিয়ে কাজ করছিলেন। তারা একেকজন একেক ধরনের বাংলা কী-বোর্ড তৈরি করে আমাদের হাতে ধরিয়ে দিলেন। যার কুফল এখনও আমরা ভোগ করে চলেছি।

সম্প্রতি বাংলা ভাষা দূষণ নিয়ে আদালত কর্তৃক যুগান্তকারী একটি নির্দেশের পর এর পক্ষে বিপক্ষে দেশের বুদ্ধিজীবীরা তাদের মতামত প্রকাশ করে চলেছেন। অযথা বিতর্ক তৈরিতে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের বুঝি জুড়ি নেই! আজ পর্যন্ত
দেখিনি আমাদের বুদ্ধিজীবীরা কোন একটি বিষয়ে একমত হয়ে কিছু করেছেন। ভেবেছিলাম এবার বুঝি সব বুদ্ধিজীবীরা এক হয়ে আদালতের এ রায়কে স্বাগত জানাবেন। কিন্তু না, আমার ধারণা ভুল। কেউ কেউ স্বাগত জানিয়েছেন, আবার অনেকেই আদালতের জড়িত হওয়া নিয়ে নানানভাবে কটাক্ষ করছেন। একটা বিষয় আমার কাছে এখন স্পষ্ট যে, সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত কেবল আমাদের রাজনীতিবিদরাই করছেন না, তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা আরও বেশি করে করছেন। বর্তমানে পত্রিকাগুলোর অনলাইন ভার্সন এবং ব্লগ চালু হওয়ার পর মানুষ কিভাবে বিভ্রান্ত হচ্ছে তা পাঠকের প্রতিক্রিয়াগুলো পড়লে বুঝা যায়।

ভাষা দূষণ প্রসঙ্গে সর্বশেষ লেখাটি পড়লাম বিডিনিউজ২৪ডটকম-এ। লিখেছেন আফসান চৌধুরী। আমি কয়েকটি বিষয়ে তার সাথে একমত হতে পারলাম না। তিনি তাঁর লেখায় লিখেছেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ভাষা দূষণকে যেভাবে চিহ্নিত করেছেন তাঁর কাছে সেগুলোকে 'দূষণ' বলে মনে হয়নি। তিনি লিখেছেন, 'দূষণ' শব্দটি ধর্মীয় ভাবনায় ভরা। দূষণ ও পবিত্র বিষয়টি নাকি কৃষিভিত্তিক নারীকেন্দ্রিক সংস্কৃতিতে প্রবল হয়ে থাকে। তিনি লিখেছেন, নদী প্রকৃতির সৃষ্টি আর ভাষা সমাজ মানুষের সৃষ্টি। রূপকটিও তাই ভ্রান্ত। তিনি আরও লিখেছেন, এর ফলে ভাষা 'ধর্মীয়' বস্তুতে পরিণত হয়েছে এবং সেটা রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছে আদালত ও তাদের নির্দেশিত পণ্ডিতগণ। এই পদ্ধতিটিও গণতন্ত্রবিরোধী।

দূষণ শব্দের একটি সমার্থক শব্দ হচ্ছে কলুষিত অর্থাৎ অপবিত্র। দূষণের আড়ালে 'অপরাধ' শব্দটি লুকিয়ে আছে। এখানে প্রকৃতি আর মানুষের সৃষ্টি বলে দুটোকে আলাদা করার উপায় নেই। প্রাকৃতিক বলে দোষ হবে, আর মানুষের সৃষ্টি বলে দোষ হবে না এ যুক্তি মেনে নেয়া যায় না। 'দূষণ' শব্দটি ধর্মীয় ভাবনায় ভরা এটা আবার কেমন কথা? আমরা শহীদ মিনারের বেদীতে জুতা নিয়ে উঠি না। কারণ, ঐ স্থানটিকে আমরা পবিত্র বলে মনে করি। আবার আমরা মসজিদ, মন্দিরেও জুতা নিয়ে প্রবেশ করি না একই কারণে। আমরা সংসদকে মহান বলি সম্মানার্থে। বিশেষ দিনকেও মহান বলে শ্রদ্ধা জানাই। আমরা কোরান-বাইবেলকে পবিত্র গ্রন্থের মর্যাদা দিই, আবার সংবিধানকেও পবিত্র বলে গণ্য করি। এখানে ধর্ম বা নারীকেন্দ্রীক সংস্কৃতি কোনটার প্রভাব আছে কি? মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে আদালত। আদালতের নির্দেশই চুড়ান্ত নির্দেশ। বাংলা ভাষা দূষণ রোধে আদালত দায়িত্ব নিয়েছে এর চাইতে সু-সংবাদ আর কী হতে পারে? আর আদলত যাদেরকে এ কাজের জন্য যোগ্য মনে করেছে তাদেরকেই সে দায়িত্ব দিয়েছে। আমি মনে করি যাদের নাম বলা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ। এটাকে গণতন্ত্র বিরোধী আখ্যায়িত করে আরেকটা বিতর্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা বলে আমি মনে করি।

'মানুষ তার বক্তব্য বোঝাবার জন্য যে কোন ভাষা বা একাধিক ভাষা প্রয়োগের অধিকার রাখে'। অবশ্যই। একাধিক ভাষা জানা বা বলা অবশ্যই কোন অপরাধ নয়। কেউ সেটা বলছেও না। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মেয়েটির উদাহরণ টানা হয়েছে তা তো অন্য ভাষার জন্য নয়; বাংলা ভাষার জন্যই। 'সে' এবং 'তিনি'র প্রয়োগ যদি কেউ না জানে তবে তাকে সেটা শেখাতে হবে। তার জানতে হবে সে ভুল বলছে। এটাকে তার মাতৃভাষা, বা মৌলিক অধিকার বলে যুক্তি দেয়া কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এছাড়া পৃথিবীর সকল এফএম রেডিও দোঁআশলা ভাষায় কথা বলে এ তথ্যটিও সঠিক নয়। একমাত্র ভারত ছাড়া এরকম দোঁআশলা ভাষায় কথা বলার উদাহরণ বিশ্বের অন্য কোথাও নেই।

ক্যারিবিয়ান এলাকার কয়েকটি দেশ আছে যাদের রাষ্ট্রভাষা ইংরেজী। এসব দেশের নাগরিকরা আফ্রিকা থেকে আগত এবং একসময় এ দেশগুলো বৃটিশের অধীনে ছিল। তাদের ভাষার কথ্যরূপটি ভাঙা ইংরেজী। আমাদের দেশের চা বাগানের শ্রমিকরা যেভাবে ভাঙা বাংলা বলে ওরকমই বলা চলে। তাদের ভাষার বড় সূত্র র্যাপ সঙ্গীত এ তথ্যটিও সঠিক নয়। বরং র্যাপ সঙ্গীতের সূত্র হচ্ছে ক্যারিবিয়ান এবং আফ্রো-আমেরিকানরা। এসব সংগীতে থাকে অপরাধজগতের খবরাখবর, গালাগালি, যৌনতা, ইত্যাদি। র্যাপ সঙ্গীতকে রাস্তার সংগীত বলে আখ্যায়িত করা হয়।

উত্তর আমেরিকাতে অনেক কিছুই বৈধতা পেয়েছে। তাই এফএম ব্যান্ডে তাদের সঙ্গীত প্রচারিত হলো বলে জাতীয় মর্যাদা পেয়ে গেলো এমন মনে করার কিছু নেই। আজ যদি রংপুরে একটি রেডিও স্থাপন হয় আর সে রেডিওতে রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় অনুষ্ঠান প্রচার করা হয় কারো কিছু বলার নেই। শ্রোতারা জানে এটা রংপুরের আঞ্চলিক রেডিও ষ্টেশন। কিন্তু জাতীয় প্রচার মাধ্যমে কিছু প্রচার করতে গেলে প্রমিত ভাষাতেই প্রচার করা যুক্তিযুক্ত এবং বিশ্বের সব দেশই এটা মেনে চলে।

আফসান চৌধুরী তাঁর দোভাষী প্রশিক্ষণ নেয়ার উদাহরণ টেনেছেন। ভাষা বুঝা এবং বুঝানোর কিছু পদ্ধতি শেখানো হয় এ প্রশিক্ষণে। কানাডায় কেউ দোভাষীর কাজ করতে চাইলে একটি সার্টিফিকেট লাগে। আর এ সার্টিফিকেট নিতে গেলে এ ধরনের একটি প্রশিক্ষণ নিতে হয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া সবখানেই দোভাষীর কাজ করতে গেলে প্রশিক্ষণ এবং সার্টিফিকেট লাগে। একেক দেশের নিয়ম-নীতি একেক রকম। তাই এক দেশের সার্টিফিকেট অন্য দেশ গ্রহণ করে না। এখানে 'বিবিধ ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে এটাই আন্তর্জাতিক বিবেচনা' -একথা এককভাবে কেউ বলতে পারে না।

আফসান চৌধুরী জর্জ ওরওয়েলের উপন্যাসের উদাহরণ টেনে কাল্পনিক 'ভাষা পুলিশ'-এর কথা লিখেছেন। কাল্পনিক নয়, বাস্তবেই ভাষা পুলিশ আছে। কানাডার কুইবেক প্রদেশে ভাষা পুলিশ রয়েছে ১৯৬১ সাল থেকে। ফরাসী ভাষার মর্যাদা রক্ষার্থে এ পুলিশবাহিনী গঠন করা হয়। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি প্রত্যকটি স্তরে খেয়াল রাখা যাতে ফরাসী ভাষার যথাযথ ব্যবহার এবং মর্যাদাহানি না হয়। কিছুদিন আগেও মনট্রিয়েলে একটি আইরিশ রেষ্টুরেন্টকে সাইনবোর্ডে ভুল বানান লেখার কারনে জরিমানা করা হয়েছে। প্রায় একই রকম আইন আছে মধ্যপ্রাচ্যেও। কোন সাইনবোর্ড বা পোষ্টার ছাপাতে গেলে, সরকারের নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদান নিয়ে লাগাতে হয়। বানানের একটু এদিক সেদিক হলে জেল-জরিমানা দুটোই ভোগ করতে হতে পারে।

সর্বস্তরে বাংলা চালু আর ভাষার শুদ্ধতা এখানে দুটো বিষয়। সর্বস্তরে বাংলা চালু করা পুরনো শ্লোগান। আর ভাষার শুদ্ধতা নতুন বিষয়। আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা দোষণীয় এ কথা কেউ বলছেন না। অথচ লক্ষ্য করলাম এ বিষয়টিও কেউ কেউ তুলছেন অযথা একটা বিতর্ক সৃষ্টির জন্য। আমাদের দেশের বেশিরভাগ লোকের উচ্চারণেই আঞ্চলিক টান আছে। আঞ্চলিক টান দোষের কিছু নয়। যে কথা বলা হচ্ছে তা হলো ভাষাকে যেভাবে দূষিত করা হচ্ছে তা আর বাড়তে দেয়া যায় না।(সৈয়দ মনজুরুল যে তিনটা উদাহরণ দিয়েছেন এর একটিও আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে নয়।) এর বিরোধিতা করার কোন হেতু আমি খুঁজে পাচ্ছি না। বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরা আজ পর্যন্ত বইয়ের দোকানের সাইনবোর্ড থেকে 'লাইব্রেরী' শব্দটা মুছতে পারছেন না। লাইব্রেরীর অর্থ কী নিশ্চয় বাংলাদেশের শিক্ষিত সমাজ মাত্রই জানেন। 'রেষ্টুরেন্ট' লিখা সঠিক, না 'হোটেল' লেখা সঠিক এর জন্য কি আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে? মফস্বলের কথা বাদই দিলাম, রাজধানী ঢাকা শহরের অধিকাংশ সাইনবোর্ড ভুল বানানে ভরা। ভুল বানানে হাজার হাজার পোষ্টার, ব্যানার চারিদিকে ঝুলছে। সারা পৃথিবীর হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলো থাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। আমাদের দেশে হাসপাতাল-ক্লিনিকের বাইরে ডাক্তারদের ডিগ্রী সম্বলিত সাইনবোর্ডের জঙ্গল দেখে আমাদের রুচিবোধের দীনতার কোন স্তরে আমরা আছি তার প্রমাণ পাওয়া যায়। আসলে এগুলো কি কেউ পড়ে? তারচে ভাল হতো না স্বাস্থ্য সচেতন সম্পর্কিত কিছু বাণী লিখে দিলে! অন্তত: লোকে পড়তো। এগুলো দেখার জন্য কি কেউ নেই? কোন প্রতিষ্ঠান নেই?

সারা বিশ্বে প্রত্যেকটি জাতি তার ভাষাকে আরও মার্জিত, আরও রুচিশীল করে তোলার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। প্রতি বছর ইংরেজী অভিধানে নতুন নতুন শব্দ সংযোজিত হচ্ছে। নতুন বছরে পত্র-পত্রিকায় ঐ সব শব্দের তালিকা প্রকাশিত হয়। কিছুদিন আগেও 'ডিজেবল' বা 'হেন্ডিকাপড' শব্দ দুটি প্রচলিত ছিল এখন বলা হয় 'স্পেশাল নিডস'। আগে যেখানে 'ব্লাইন্ড' বলা হতো এখন বলা হয় 'ভিজুয়্যালি ইম্পেয়ার্ড'। 'ডিজেবল' বা 'হেন্ডিকাপড' এর অর্থ 'প্রতিবন্ধী'। যাদেরকে বলা হচ্ছে তারা নিজেদের 'প্রতিবন্ধী' বলতে নারাজ। তারাও কাজ করে। সমাজে তাদেরও অবদান আছে। এদিকে যাদেরকে 'ব্লাইন্ড' বা 'অন্ধ' বলা হয় তারাও নিজেদেরকে 'অন্ধ' বলে অপমান করতে রাজি নয়। তাদের কথা হলো আমাদের দৃষ্টি নেই কিন্তু আমরা মনের চোখ দিয়ে দেখতে পাই। তাই সভ্য সমাজ, গণমাধ্যম অপমানজনক শব্দগুলো এখন আর ব্যবহার করে না। যুগ যুগ ধরে আমরা কত ভুল শব্দ ব্যবহার করে আসছি শোধরানোর কোন গরজ বা উদ্যোগ কারো নেই। সর্বশেষ মোবাইল ফোনের বাংলা করা হয়েছে 'মুঠো ফোন'। এটা কি সঠিক হয়েছে? 'কর্ডলেস ফোন' তাহলে কি? আমি মনে করি, শব্দ যদি রুচিশীল বা মার্জিত না হয় তাহলে তাকে যেভাবে আছে ঐভাবেই রেখে দেয়া উচিত। তাতে ঐ শব্দের ওজনটা থাকে। আমাদের বাংলা একাডেমি ভাষার উৎকর্ষতার জন্য কী কী কাজ করছে জানা যায় না। অপ্রাসঙ্গিক হলেও প্রশ্ন করতে চাই-বাংলা একাডেমীর কাজ কি কেবল বছরে একটি বই মেলার আয়োজন করা? এটা কি একাডেমীর কাজের আওতায় পড়ে?

ভালো উদ্যোগ যে একেবারে নেই তা নয়। ধন্যবাদ জানাতে হয় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদকে। তিনি বেশ কয়েক বছর আগে তাঁর কেন্দ্রে উচ্চারণ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছিলেন।
আমিও প্রথমদিকের একজন অংশগ্রহণকারী। আমার ব্যাচে ছিলেন ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিক, ডাক্তার, পুলিশ কর্মকর্তা অনেকেই। সকলের আগ্রহ শুদ্ধ উচ্চারণে বাংলা বলতে পারা। পরবর্তীতে টিএসসি, শাহবাগসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়। এসব প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে অনেকেই আজ গণমাধ্যমে কাজ করছেন। সবশেষে ধন্যবাদ জানাই অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে যিনি তাঁর লেখার মাধ্যমে গোটা জাতির বিবেককে নাড়া দিতে পেরেছেন।

নজরুল মিন্টো: সংস্কৃতিকর্মী, প্রধান সম্পাদক, দেশে বিদেশে। কানাডা।