‘দুই নেত্রী’ কথাটি ষড়যন্ত্রের ফসল

স্বদেশ রায়
Published : 30 April 2017, 04:52 AM
Updated : 30 April 2017, 04:52 AM

শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে সমান কাতারে আনার একটা চেষ্টা শুরু হয়। যারা এই চেষ্টা করেন তারা শেষ অবধি সফল হন। এতটাই সফল হন যে, আজ শেখ হাসিনা যখন আর্ন্তজাতিকভাবে স্বীকৃত নেতা; তিনি পৃথিবীর অন্যতম বড় নেতা, দক্ষিণ এশিয়ার সব থেকে বড় নেতা হিসেবে স্বীকৃত– তারপরও তাঁকে নিয়ে আসা হয় খালেদার কাতারে।

বাংলাদেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক 'দুই নেত্রী' বলে সবসময় এটাই প্রমাণ করতে চান, শেখ হাসিনা বিশ্বমানের নেত্রী নন, তিনি খালেদার মানের একজন। এখানেই শেষ নয়, আমাদের কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক, বিশেষ করে বামপন্থী ও অতি ডানপন্থী বিশ্লেষকরা একটি বিষয় প্রায় প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন যে, বঙ্গবন্ধু ও জিয়ার মৃত্যুর ফলে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া রাজনীতিতে এসেছেন।

এ কি সচেতনভাবে, না রাজনৈতিক বিশ্লেষণের জ্ঞানের অভাবে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া একইভাবে রাজনীতিতে এসেছেন বলা হয়, তা একটি বড় প্রশ্ন! সহজ চোখে তাকালেই বোঝা যায়, বঙ্গবন্ধু নির্মমভাবে নিহত না হলেও শেখ হাসিনা রাজনীতিতে আসতেন। যেমনটি জওহরলাল নেহরুর দ্বিতীয় মেয়াদ থেকে রাজনীতিতে এসেছিলেন শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী।

নিশ্চয়ই এই সহজ সত্যটুকু সবার বোঝা উচিত, বাংলাদেশের সব থেকে বড় মহিলা কলেজটির নির্বাচিত ভিপি রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে পারেন না। তিনি রাজনীতিতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নিজ যোগ্যতায় চলে আসতেন। নিজ যোগ্যতায় যিনি আইয়ুব শাহীর আমলে ইডেন কলেজের ভিপি হতে পারেন, তিনি নিজ যোগ্যতা বলেই রাজনীতিতে স্থান করে নিতেন। আর রাজনীতিতে স্থান করে নিতেন এমন একটি পরিবারের সন্তান হিসেবে যিনি তাঁর পিতার রাজনীতির ভেতর দিয়ে একটি জাতির জম্ম দেখেছেন, তিনি নিজেও সে সংগ্রামের অংশ।

অন্যদিকে নিজ বাড়িতে ছোট বেলা থেকে সেইসব রাজনীতিকদের দেখেছেন যারা নিজ নিজ অবস্থানে মহীরুহ ছিলেন। তিনি কাছ থেকে দেখেছেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলনা ভাসানী, নবাবজাদা নসুরুল্লাহ ও ওয়ালি খানকে। এই বিশাল রাজনীতিকদের ছাড়াও তিনি দেখেছেন আবুল মনসুর আহমদ, আতাউর রহমান খান, সালাম খান, মওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ প্রমুখ ব্যক্তিত্বকে। দেখেছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহম্মেদকে।

এত বড় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা এবং দেশের অন্যতম বড় কলেজের ভিপি ভবিষ্যতে রাজনীতিতে স্বাভাবিকভাবে নিজের জায়গা করে নিতে পারবেন না– এমনটি ভাবা সত্যকে উপলব্ধি করতে না পারা ছাড়া আর কী হতে পারে! স্বাভাবিকভাবে তিনি রাজনীতিতে তাঁর অবস্থান করে নিতেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনার পরে তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্ব নেওয়া শুধু এটুকুই প্রমাণ করে, রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি কঠিন-কঠোর পথে হাঁটতেও পিছপা হন না।

তবে এসবের বদলে তথাকথিত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বিশ্লেষণের ভেতর দিয়ে এমনটি দাঁড়িয়েছে যে, এখন 'ইকোনমিস্ট' পত্রিকার সাংবাদিকও লেখেন: 'দুই বেগমের রাজনীতি'। সেখানে বলা হয় পিতার ও স্বামীর মৃত্যুর কারণে তাদের রাজনীতিতে আনা হয়। 'ইকোনমিস্ট' পত্রিকার সাংবাদিকরা এ ধরনের মন্তব্য করার আগে একটু খোঁজখবর নেবেন– এমনটিই সবাই আশা করে। কিন্তু তারা দেখেছেন যে, বাংলাদেশে এটা এতই প্রতিষ্ঠিত, এখানে খোঁজখবর না নিলেও চলে।

অথচ খোঁজ নিলে তারা জানতে পারতেন, শেখ হাসিনাকে রাজনীতিতে আনা হয়নি, শেখ হাসিনা নিজেই রাজনীতিতে এসেছেন। এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরের দিন থেকে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনীতিতে এসেছেন। ১৫ আগস্টের ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পরেই তিনি ড. কামাল হোসেনকে অনুরোধ করেছিলেন, 'ফরেন মিনিস্টার হিসেবে বাংলাদেশের অবৈধ সরকারকে যাতে কেউ মেনে না নেয়'– এমন একটি বিবৃতি দিতে। ড. কামাল হোসেন অবশ্য সে পথে যাননি।

যাহোক, ১৯৭৭ সালে আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবিত করা হলে তিনি নানাভাবে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন, তাঁকে অন্তত আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির মেম্বার করা হোক। সেদিন কারা তাঁকে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির মেম্বার করেননি, সেখানে সামরিক সরকারের সঙ্গে তাদের কী আপস ছিল, সে অধ্যায়ও কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক বড় অধ্যায়। যাহোক, হয়তো এখনও আমরা নানা কারণে সে সত্য পুরোপুরি লিখতে পারছি না; এমনকি শেখ হাসিনা আকারে-ইঙ্গিতে সেকথা বলেছেন।

তবে অন্তত এটুকু এখন বলা যায়, শেখ হাসিনার তরফ থেকে সেদিনের নেতা আব্দুর রাজ্জাকের কাছে প্রস্তাব এসেছিল, তাঁকে অন্তত ওয়ার্কিং কমিটির মেম্বার করা হোক। কেন সেদিন সেটা করা হয়নি, তার বিশ্লেষণ এ লেখায় করতে গেলে যেমন লেখার কলেবর বেড়ে যাবে তেমনি বিষয়ান্তরেও চলে যাবে লেখা। তবে ইতিহাসের সত্য, শেখ হাসিনা নিজ চেষ্টায় রাজনীতিতে আসেন। কেউ তাঁকে নিয়ে আসেনি।

অন্যদিকে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে রাজনীতি শুরু করার পরে জিয়াউর রহমান সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হলে সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর লোকেরা বেগম জিয়াকে রাজনীতিতে নিয়ে আসে। তাঁকে রাজনীতিতে আনা নিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাত্তারের সঙ্গে মতান্তর হয় সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর। সে সময়ে এরশাদই সেনাপ্রধান হিসেবে গোয়েন্দা বাহিনীকে সমর্থন করেন।

তাই নতুন প্রজম্মের কাছে একটি বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার যে, শেখ হাসিনার রাজনীতিতে আসা ও বেগম জিয়ার রাজনীতিতে আসার পথ পরিক্রমা এক নয়। শেখ হাসিনা রাজনীতিতে ছিলেন ছাত্রজীবন থেকে। বঙ্গবন্ধু নিহত হলে তিনি ব্রিটেনে বসে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন। যে আন্দোলনে সেদিন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠিত নেতা ড. কামাল হোসেনও আসতে সাহস পাননি। তারপর ধীরে ধীরে তিনি আওয়ামী লীগের মূল নেতা হিসেবে বাংলাদেশে আসেন।

এই আওয়ামী লীগের মূল নেতা হিসেবে তিনি কারো দয়ায় বা করুণায় বা কোনো কৌশল বাস্তবায়নের জন্যে আসেননি, বরং তাঁর আসার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কিছু রাজনীতিক ও সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর লোকেরা। আর স্বয়ং সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান তো বাধা ছিলেনই।

অন্যদিকে খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে নিয়ে আসে সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী এ কারণে যে, তারা বুঝতে পারেন এরশাদ ক্ষমতা নিলেও রাজপথে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন শেখ হাসিনা শুরু করবেন। জিয়ার আমলের মালেক উকিল-রাজ্জাকের আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওযামী লীগ এক নয়। আর নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সত্যি তাই ঘটেছিল।

এরশাদ ক্ষমতা দখল করে ২২ মার্চ আর এরশাদের এই সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানান শেখ হাসিনা ২৬ মার্চ। ২৬ মার্চ জাতীয় স্মৃতি সৌধে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার সামনে তিনি অবিলম্বে সামরিক শাসকের পদত্যাগ দাবি করে তার বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান, যা ছিল এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম প্রকাশ্যে প্রতিবাদ সভা। এবং সেটা ঘটেছিল এরশাদ ক্ষমতা দখল করার মাত্র তিনদিন পর।

শেখ হাসিনার এ প্রতিবাদ দেখে তৎকালীন সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী বুঝতে পারে, অবিলম্বে এরশাদের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলবেন শেখ হাসিনা। তারা এ-ও বুঝতে পারে, মাঠে যদি প্রতিক্রিয়াশীল কোনো শক্তি না থাকে তাহলে গোটা মাঠ শেখ হাসিনা দখল করে নেবেন। তাই মাঠে যাতে সামরিক সরকারের একটি অংশ থাকে এ জন্যে তারা খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের রাজনীতিতে নিয়ে আসে এবং তাঁকে নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে থাকে।

শুধু যে এরশাদ ও সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী খালেদা জিয়াকে পৃষ্ঠপোষকতা দেন তা নয়, ওই সময়ে খালেদা জিয়া যে একজন রাজনীতিক এবং তাঁর জোট যে একটি সামরিক শাসকবিরোধী আন্দোলনের জোট– এই বৈধতা দেওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল শেখ হাসিনা ও খালেদ জিয়ার বৈঠক করানো। সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর এই নীল নকশা বাস্তবায়ন করার জন্যে সেদিন প্রগতিশীল জোটের যারা মুখ্য ভূমিকা পালন করেন, তাদের অন্যতম ছিলেন ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার ইশতিয়াক আহম্মেদ, সাংবাদিক ফয়েজ আহম্মেদ, রাজনীতিক সাইফুদ্দিন মানিক, নির্মল সেন প্রমুখ।

তারা সেদিন সে কাজে কামিয়াবও হন। যা ছিল বিরোধী রাজনীতিক হিসেবে খালেদা জিয়ার প্রথম বৈধতার সার্টিফিকেট। এই ব্যক্তিরা সেদিন শেখ হাসিনাকে খালেদার সঙ্গে বসতে বাধ্য করেছিলেন বটে, তবে তারা খালেদাকে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে আনতে পারেননি। কারণ তারা জানতেন, খালেদা নির্বাচনে এলে এরশাদের ভোট ভাগ হয়ে যাবে এবং আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভ করবে।

এমনকি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভ না করলেও বিপাকে পড়বেন এরশাদ। কারচুপি করেও পার পাবে না। তাই খালেদাও সেদিন এরশাদের সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর কথা মতো নির্বাচন থেকে দূরে থাকার জন্যে গাজীপুরে একটি ফ্যাক্টরিতে গিয়ে আত্মগোপনে থাকেন।

অন্যদিকে এদেশের তথাকথিত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ঠিক একই কায়দায় রাজনীতি বিশ্লেষণ করতে থাকেন। তারা খালেদা যে এরশাদের চক্রান্তকে সফল করেছেন সে কথা না বলে উল্টো বলতে শুরু করেন: শেখ হাসিনা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে গেছেন, তাই তিনি আপসকামী। আর যিনি এরশাদের কথা মতো নির্বাচন থেকে দূরে থাকলেন, তিনি হলেন আপসহীন।

কখনও এদেশে এ বিবেচনা মাথায় নেওয়া হয়নি, রাজনীতিতে স্বৈরাচার হঠানোর জন্য শুধু রাজপথ নয়, পার্লামেন্ট, পেশাজীবী আন্দোলন সব মাধ্যমকে কাজে লাগাতে হয়। সেদিন নির্বাচনে না এসে খালেদা মূলত এরশাদকে টিকে থাকতে সাহায্য করেছিলেন। খালেদা নির্বাচনে এলে এরশাদ পার্লামেন্টে তার সামরিক শাসনামলের কাজের বৈধতা দেওয়ার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতেন না। কারণ প্রকাশ্যে কারচুপি করার পরেও তার সামরিক শাসনের বৈধতা দেওয়ার জন্যে দুজন স্বতন্ত্র সদস্যর ভোটের প্রয়োজন পড়েছিল।

সেদিন খালেদার দল কিছু আসন পেলে এরশাদের সামরিক কর্মকাণ্ড কোনোমতেই সাংবিধানিক বৈধতা পেত না। আর এ ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশের জেনারেলদের চিরকালের মতো 'বাঘের পিঠে ওঠা'র স্বাদ মিটে যেত। কারণ অসাংবিধানিক কাজ করার জন্যে তখন এরশাদসহ অনেক সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিকে জেলে যেতে হত। বাংলাদেশের ইতিহাসে মানুষের এ বিজয় ঘটতে দেননি সেদিন আরেক সামরিক শাসকের উত্তরাধিকার খালেদা ও সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর অনুগত ওইসব রাজনীতিকরা।

বাংলাদেশের মিডিয়ার বড় অংশের ও বিশ্লেষকদের সেদিনের ভুল প্রচার ও বিশ্লেষণের ফলে এ সত্য প্রকাশ হয়নি। তাছাড়া প্রকাশ করাও কঠিন ছিল। কারণ মিডিয়ার মালিকদের অনেককে সেদিন এরশাদ যথেষ্ট সুবিধা দিয়েছিলেন। তাই মিডিয়ার অন্তহীন প্রচারে খালেদা আপসহীন হয়ে ওঠে। আর সেইসঙ্গে এ-ও প্রতিষ্ঠিত হয় যে, হাসিনা ও খালেদা রাজনীতিতে এসেছেন বঙ্গবন্ধু ও জিয়ার মৃত্যুর ফলে।

অথচ বাস্তবতা হল জিয়ার মৃত্যুর ফলে নয়, বঙ্গবন্ধু নিহত না হলে যিনি কোনোদিন রাজনীতিতে আসতে পারতেন না তিনি হলেন খালেদা জিয়া। কারণ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে জিয়াউর রহমান কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারতেন না, বরং ১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হয় তাঁকে অবসরে পাঠানো হত, না হয় রাষ্ট্রদূত করে বিদেশে পাঠানো হত। কারণ ১৩ আগস্ট ১৯৭৫ তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী নুরুল ইসলাম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর কাছে নোট পাঠিয়েছিলেন। ওই ফাইলে জিয়ার যাবতীয় ষড়যন্ত্রের ডকুমেন্টস ছিল।

তাই বঙ্গবন্ধু ১৫ আগস্ট নিহত না হলে জিয়ার পক্ষে কোনোদিন রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়া হত না। সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কামড়াকামড়িতে তার মৃত্যুর ফলে এভাবে খালেদারও রাজনীতিতে আসতে পারতেন না।

অপরদিকে বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ঠিকই যোগ্যতা বলে রাজনীতিতে আসতেন শেখ হাসিনা।

এ কারণে আজ নতুন প্রজম্মকে সঠিক তথ্য জেনে, সঠিক উপলব্দি করার সময় এসেছে যে, শেখ হাসিনা ও খালেদাকে সমান কাতারে এনে কখনও 'দুই নেত্রী' বলা যায় না। দুজন কখনও সমান কাতারের নন। একজন ছাত্র রাজনীতি থেকে বেড়ে ওঠা নেত্রী, অন্যদিকে রাজপথে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীকে টিকিয়ে রাখার জন্যে এক সামরিক জেনারেলের স্ত্রীকে 'নেত্রী' বানিয়ে রাজনীতিতে নিয়ে আসে তৎকালীন সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী।

সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর পোষা সাংবাদিক ও রাজনীতিকরাই তখন শিয়ালের মতো এক রব তুলে প্রতিষ্ঠিত করে 'দুই নেত্রী' কথাটি। আজ সময় এসেছে যাঁর যাঁর অবস্থানে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার, আর এ সত্য উপলব্দি করা যে, মূলত 'দুই নেত্রী' কথাটি ষড়যন্ত্রের ফসল।