দেশের বাইরে দেশের মাটি

মুহম্মদ জাফর ইকবালমুহম্মদ জাফর ইকবাল
Published : 1 July 2016, 04:54 AM
Updated : 1 July 2016, 04:54 AM

১.

বহু বছর আগে যখন দেশের বাইরে থাকতাম তখন কয়েক বছর পর কবার দেশে আসার সুযোগ হত। যখন ফিরে যাবার সময় হত তখন মনটা ভারী হয়ে থাকত। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হত যখন প্লেনটা আকাশে ওড়ার জন্যে রানওয়েতে ছুটতে থাকত। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতাম। প্লেনের চাকা যখন মাটি ছেড়ে ওপরে উঠে আসত তখন এক ধরনের গভীর বেদনা অনুভব করতাম, জানতাম না আবার কবে দেশের মাটিতে পা রাখতে পারব।

এখনও মাঝে মাঝে দেশের বাইরে যেতে হয়। প্লেন রানওয়েতে ছুটতে ছুটতে এক সময় মাটি ছেড়ে আকাশে উঠে যায়। প্রতিবারই আমার সেই পুরানো স্মৃতি মনে পড়ে এবং নিজের ভেতর এক ধরনের বিস্ময়কর আনন্দ হয় যে, আমাকে দেশ ছেড়ে যাওয়ার সেই তীব্র কষ্ট অনুভব করতে হয় না। আমি জানি অল্প কয়দিনের ভেতর আবার দেশের মাটিতে ফিরে আসব।

বহুদিন থেকে দেশে আছি, অসংখ্য মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে। তাই প্লেনের ভেতরেও পরিচিত মানুষ পেয়ে যাই। আমাদের ইউনিভার্সিটি প্রায় মাসখানেকের জন্যে ছুটি। তাই দেশের বাইরে যাচ্ছি। প্লেনে হঠাৎ করে একজনের সাথে দেখা হয়ে গেল। মানুষটি সম্পর্কে আলাদা করে বলার লোভ সামলাতে পারছি না।

প্লেনের ভেতরে নিজের সিটে বসার জন্যে যখন এগিয়ে যাচ্ছি তখন মানুষটি আমাকে বলল, "স্যার, আমার নাম সাইফুল্লাহ- অনেকদিন আগে জার্মানি থেকে আপনার সাথে যোগাযোগ করেছিলাম।"

আমার স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল। একজন বহুদিন আগে জার্মানি থেকে আমার কাছে ইমেইলে পাঠালে আমি তাকে চিনে ফেলব সে রকম কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু মানুষটির পরের কথাটি শুনে সাথে সাথে আমার তার কথা মনে পড়ে গেল। মানুষটি বলল, "জার্মানিতে আমার একটা কোম্পানি আছে, নাম সাইন পালস। আমি সেই কোম্পানির সিইও!"

আমি তখন বিস্ময় নিয়ে তার দিকে তাকালাম, কমবয়সী একজন তরুণ। একজন কোম্পানির সিইও বলতেই টাই-স্যুট পরা মধ্যবয়স্ক ভারিক্কি চেহারার একজন মানুষের চেহারা ভেসে ওঠে। সাইফুল্লাহ মোটেও সে রকম একজন নয়। টি শার্ট পরে থাকা কমবয়সী হাসিখুশি একজন তরুণ। আলাদাভাবে এই তরুণটির কথা আমার মনে আছে। কারণ জার্মানিতে সাইফুল্লাহ নিজে একটা কোম্পানি দিয়েছে। যে কোম্পানিতে জার্মান (এবং বাংলাদেশি) ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করে। তারা নানা ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরি করে।

জার্মানির মতো দেশে যন্ত্রপাতি তৈরি করে সেই দেশে সেগুলো দিয়ে ব্যবসা করার কাজটি সহজ কাজ নয়। আমরা ছোট বড় সফটওয়ার কোম্পানি দেখেছি, কিন্তু সত্যিকারের যন্ত্রপাতির কোম্পানি তৈরি করে শুধু টিকে থাকা নয়, সেটাকে ধীরে ধীরে বড় করে তোলার উদাহরণ খুব বেশি দেখিনি। আমাদের দেশের মোটামুটি সব মেধাবী ছেলেমেয়েই, আগে হোক পরে হোক, দেশের বাইরে চলে যায়। তারা দেশের বাইরে চমকপ্রদ কাজকর্ম করে এবং তাদের সাফল্য দেখে আমি একদিকে উৎসাহ পাই। একই সাথে বুকের ভেতর কোথায় যেন চিনচিনে ব্যথা অনুভব করি।

সাইফুল্লাহ যদি শুধুমাত্র জার্মানিতে অসাধারণ একটা কোম্পানি গড়ে তুলত, আমি তাকে নিয়ে আলাদাভাবে লিখতাম না। বাইরের দেশে যারা সফল তাদের নিয়ে বাইরের দেশের মানুষ গর্ব করুক, আমি দেশের মানুষ নিয়ে গর্ব করতে চাই। আমি সাইফুল্লাহকে নিয়ে গর্ব করতে চাই। কারণ জার্মানিতে সফল একটা কোম্পানি তৈরি করে সে থেমে যায়নি। যে স্বপ্নটি আজীবন লালন করে এসেছে সে শেষ পর্যন্ত সেটি করতে পেরেছে।

বাংলাদেশে সে একটা কোম্পানি শুরু করেছে, নাম দিয়েছে (Aplombteck) 'এপ্লম্বটেক' ('এপ্লম্ব' শব্দটি একটু অপরিচিত, ইংরেজিতে আত্মবিশ্বাস বলে চালিয়ে দেওয়া যায়। মূল শব্দটি সম্ভবত ব্যালে নাচের সময় নৃত্যশিল্পীর এক পায়ে ঘুরপাক খাওয়ার বিষয়টি।)– বাংলাদেশের কোম্পানির জন্যে সে একটি ভিন্ন নাম দিয়েছে। কারণ সে বাংলাদেশিদের দিয়ে বাংলাদেশের একটা কোম্পানি তৈরি করতে চায়, জার্মান একটা কোম্পানির অংশ তৈরি করতে চায় না।

সাইফুল্লাহ জার্মানি থেকে তার তিনজন অভিজ্ঞ দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার দেশে নিয়ে গিয়ে তাদের নেতৃত্বে কোম্পানিটি শুরু করেছে। এর মাঝেই সেটি অনেকদূর এগিয়ে গেছে, শুরু হয়েছে।

প্লেন থেকে নামার পর আমরা দুজন দুইদেশে যাব। দুটো ফ্লাইটের মাঝে ঘণ্টাখানেক সময়। কাজেই তার সাথে আমি দীর্ঘসময় কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। কীভাবে সে এবং তার স্ত্রী মিলে তাদের কোম্পানিটি গড়ে তুলেছে তার কাহিনিটি অসাধারণ। আমি তার কাছ থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে শুনেছি।

ভবিষ্যতে নিয়ে তার স্বপ্নের শেষ নেই, মানুষের স্বপ্নের কথা শোনা থেকে আনন্দের ব্যাপার আর কী হতে পারে? তরুণ বয়সে এত চমৎকার কাজ করেছে, সেটি নিয়ে তার ভিতরে বিন্দুমাত্র অহংকার নেই। কথাবার্তায় বিস্ময়কর এক ধরনের সারল্য এবং বিনয়। নিজের সম্পর্কে অসংখ্যবার যে বাক্যটি ব্যবহার করেছে সেটি হচ্ছে, "আমি আসলে গ্রামের ছেলে!"

যে গ্রামের ছেলে, যার শরীরে দেশের মাটির গন্ধ, আমরা আসলে তার কাছেই নূতন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি!

২.

আমি আমস্টার্ডাম শহরে এবারে দ্বিতীয়বার এসেছি। যখন বয়স কম ছিল তখন খুব আগ্রহ নিয়ে দেশে বিদেশে গিয়েছি. দর্শনীয় জিনিষগুলো দেখেছি। এখন দেশ থেকে বের হতে ইচ্ছে করে না। কোথাও গেলে আর্ট মিউজিয়াম ছাড়া অন্য কিছু দেখারও আগ্রহ হয় না।

তবে গতবার আমস্টার্ডাম শহরে ভিন্ন এক ধরনের একটা মিউজিয়াম দেখার চেষ্টা করেছিলাম। অনেক আগে থেকেই সব টিকিট বিক্রয় হযে যায় বলে মিউজিয়ামটি দেখা হয়নি। এইবার সেটি দেখা হয়ে গেল। এই মিউজিয়ামটি হচ্ছে অ্যানি ফ্র্যাংক নামের পনেরো বছরের একটি কিশোরীর উপর গড়ে উঠা একটি মিউজিয়াম।

আমার ধারণা যারা একটু হলেও লেখাপড়া করেছে তারা সবাই অ্যানি ফ্রাংকের কথা জানে। তারপরও আমি তার সম্পর্কে একটু বলি।

মেয়েটির জন্ম জার্মানিতে, ইহুদি ধর্মের মানুষ হওয়ার কারণে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শুরু হবার পর ১৯৪১ সালের পর তাদের কোনো দেশ ছিল না। তার বাবা বিষয়টা আঁচ করতে পেরে আগেই নেদারল্যান্ডের আমস্টার্ডাম শহরে চলে এসেছেন। একসময় জার্মানি নেদারল্যান্ডও দখল করে নিল। তখন আবার তাদের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠল। প্রতিদনই ইহুদিদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কনসেনট্রেশান ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে, গ্যাস চেম্বারে মেরে ফেলা হচ্ছে।

কাজেই নিজের পরিবারকে বাঁচানোর জন্যে অ্যানি ফ্রাংকের বাবা একটা বিচিত্র সিদ্ধান্ত নিলেন। তার অফিসের উপরে একটা গোপন কুঠুরি তৈরি করে সেখানে পুরো পরিবারকে নিয়ে লুকিয়ে গেলেন। পুরো দুই বছর তারা সেই ছোট কুঠুরিতে লুকিযে ছিলেন। যেখানে তারা লুকিয়েছিলেন সেই ছোট বাসাটিই হচ্ছে অ্যানি ফ্রাংকের মিউজিয়াম।

সেই ছোট এক চিলতে জায়গায় লুকিয়ে থাকতে থাকতে মেয়েটি ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখত। তার খুব বড় লেখক হওয়ার সখ ছিল। সে জন্যে সে নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করেছিল। যে বিষয়টি তাকে সারা পৃথিবীর সব মানুষের কাছে পরিচিত করেছে সেটি হচ্ছে তার ডায়েরি। সেই গোপন কুঠুরিতে লুকিয়ে লুকিয়ে সে ডায়েরি লিখত।

টানা দুই বছর সেই গোপন কুঠুরিতে লুকিয়ে থাকার পর হঠাৎ করে তারা জার্মানদের হাতে ধরা পড়ে গেল। কেউ একজন তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে জার্মানদের কাছে তাদের কথা জানিয়ে দিয়েছিল। যুদ্ধ তখন শেষের দিকে চলে এসেছে, ধরা পড়ার সাথে সাথে তাদের সকল স্বপ্ন মূহূর্তের মাঝে চুরমার হয়ে গেল।

এই পরিবারটির পরের ইতিহাস খুব কষ্টের। পরিবারের পুরুষ থেকে মহিলা সদস্যদের আলাদা করে ফেলা হল। অনাহারে প্রথমে মা মারা গেলেন। অ্যানি ফ্রাংক আর তার বড় বোন নানা কনসেনট্রেশান ক্যাম্প ঘুরে জার্মানির বারগেন বেলসেন ক্যাম্পে এসেছে। অনাহার, রোগ-শোক, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অমানুষিক পরিশ্রম, হতাশা সব কিছু মিলে তখন তাদের জীবনীশক্তি ফুরিয়ে এসেছে। ১৯৪৫ সালের এপ্রিল মাসে মিত্রশক্তি এসে এই ক্যাম্পের বন্দীদের মুক্ত করেছে। অ্যানি ফ্রাংক এবং তার বোন তার মাত্র দুই তিন সপ্তাহ আগে টাইফাস রোগে মারা গেছে।

বেশ কয়েক বছর আগে কোনো একটা প্রতিষ্ঠানের অতিথি হয়ে জার্মানি গিয়েছি। উদ্যোক্তরা আমর কাছে জানতে চাইলেন আমি জার্মানির বিশেষ কিছু দেখতে চাই কি না। আমি বললাম, সম্ভব হলে বারগেন বেলসেন ক্যাম্পটি দেখতে চাই যেখানে অ্যানি ফ্রাংক নামে পনেরো বছরের একটা কিশোরী মুক্ত হওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে মারা গিয়েছিল।

আমার কথা শুনে জার্মান আয়োজকেরা একটু থতমত খেয়ে গিয়েছিল। আমি আগেই লক্ষ্য করেছি, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে নাৎসী জার্মানির ইতিহাসটুকু তারা সযত্নে এড়িয়ে যায়। কিন্তু তারা আমার অনুরোধ রক্ষা করে আমাকে সেই ক্যাম্পে নিয়ে গিয়েছিল। অ্যানি ফ্রাংকের কবর আলাদা করে নির্দিষ্ট করা নেই। বিশাল ঘন কবরের কাছে লেখা আছে অসংখ্য বন্দীদের সাথে এখানে কোথাও তাকে সমাহিত করা হয়েছিল।

আমস্টার্ডাম শহরে অ্যানি ফ্রাংকের মিউজিয়ামে তার ছোট চিলতে ঘরের মাঝে দাঁড়িয়ে আমি এক ধরনের গভীর বেদনা অনুভব করেছিলাম। যুদ্ধশেষে অ্যানি ফ্রাংকের বাবা শুধুমাত্র জীবন নিয়ে ফিরে এসেছিলেন। তার হাতে তখন অ্যানির ডায়েরিটি পৌঁছে দেওয়া হয়। বাবা সেই ডায়েরিটি প্রকাশ করার ব্যবস্থা করেছিলেন।

অ্যানি ফ্রাংকের বড় লেখক হওয়ার সখ ছিল। ছোট এই কিশোরী মেয়েটি কখনও জানতে পারেনি যে, এই পৃথিবীতে সত্যি সত্যি সে খুব বড় একজন লেখক হিসেবে পরিচিত হয়েছে। তার ডায়েরিটি প্রায় সত্তরটি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। ডায়েরিটি প্রায় ত্রিশ মিলিয়ন কপি বিক্রয় হয়েছে। কত মানুষ অশ্রুসজল চোখে এই ডায়েরিটি পড়েছে তার কোনো হিসাব নেই।

অ্যানি ফ্রাংকের মিউজিয়ামে গিয়ে আমার সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি উপলব্ধি হয়েছে। একটি মিউজিয়াম বললেই আমাদের চোখের সামনে নানা বিচিত্র সামগ্রী দিয়ে সমৃদ্ধ একটা জায়গার কথা মনে পড়ে। অ্যানি ফ্রাংকের মিউজিয়ামটি কিন্তু সেরকম নয়। সেই জায়গাটি ছাড়া এখানে আর বিশেষ কিছু নেই। তারপরও এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পরিচিত একটি মিউজিয়াম। এটি এক নজর দেখার জন্যে সারা প্রথিবীর মানুষ দিনের পর দিন অপেক্ষা করে।

উনিশশ একাত্তরে আমরাও কিন্তু একটা যুদ্ধের ভেতর দিয়ে গিয়েছি। আমাদের দেশের আনাচে কানাচে এরকম অসংখ্য দুঃখ-বেদনা নৃশংসতা কিংবা বীরত্বের চিহ্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমরা কেন সেগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করি না? কত অকাজে সময় নষ্ট করি, নূতন প্রজন্মকে নিয়ে আমরা সেগুলো রক্ষা করার চেষ্টা করি না কেন? বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া বধ্যভূমিগুলো খুঁজে বের করা কি অসাধারণ একটা কাজ হতে পারে না?

৩.

কয়েকদিন আগে ব্রিটেনে একটা গণভোট করে তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গণভোটের সময় আমি যদি দেশে থাকতাম তাহলে বিষয়টাকে সেরকম গুরুত্ব দিয়ে লক্ষ্য করতাম কি না জানি না। নিশ্চয়ই আমার মনে হত আমি আদার ব্যাপারী, জাহাজের খবর নিয়ে কী করব?

কিন্তু ব্রিটিনের গণভোটের সময় আমি ইউরোপে বসে আছি বলে হঠাৎ করে পুরো ব্যাপারটা আমি খুবই কৌতূহল নিয়ে লক্ষ্য করেছি। গণভোটের ফলাফলটি আমার কাছে খুবই হৃদয়বিদারক মনে হয়েছে। আমরা সবাই জানি মধ্যপ্রাচ্যের উদ্বাস্তু শরণার্থী নিয়ে ইউরোপে মোটামুটি একটা বিপর্যয় শুরু হয়েছে। খুঁটিয়ে দেখলে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে, পশ্চিমা জগতের হৃদয়হীন কর্মকাণ্ডের কারণে এই বিপর্যয় শুরু হয়েছে।

কাগজে কলমে যাই থাকুক ব্রিটেনের এই গনভোটটি হয়েছে একটা মূল বিষয়ের উপর, ইউরোপের শরণার্থী সমস্যার দায়ভার ব্রিটেনও বহন করবে কী করবে না। অন্যভাবে বলা যায়, গণভোট হয়েছে ব্রিটেনের মানুষ স্বার্থপর হবে নাকি স্বার্থপর হবে না তার উপর। ব্রিটেনের মানুষ সারা পৃথিবীর কাছে জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা স্বার্থপর হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির নাম ছিল গ্রেট ব্রিটেন, আমার মনে হয় 'গ্রেট' শব্দটি তুলে সেখানে অসম্মানজনক একটা শব্দ বসানোর সময় হয়েছে!

তবে আমার কথাগুলো একটু বেশি কঠিন হয়ে গেছে, আমাদের আশাহত হওয়ার সময় এখনও আসেনি। কারণ এই গণভোটে তরুণ প্রজন্ম কিন্তু সত্যিকারের মানুষের মতো অবদান রেখেছে। তারা নিজেদের স্বার্থপর হিসেবে পরিচয় দিতে চায়নি। তারা কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ হিসেবে থেকে পৃথিবীর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চেয়েছিল। আমার ধারণা সারা পৃথিবীর সকল তরুণদের মতোই তারাও নূতন পৃথিবীর প্রজন্ম হিসেবে নিজেদের একদিন প্রতিষ্ঠিত করবে।

সারা পৃথিবীটাই এখন একটা সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। অপেক্ষা করে আছি কখন পৃথিবীর মানুষ সেই সংকট পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাবে।