আমাদের বার্তা-সম্পাদক গাজী নাসিরুদ্দিন আহমেদ খোকনের কাছ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রথম শোনার পর আমি স্তব্ধ ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। অভিজিতকেও তাহলে হুমায়ুন আজাদের পরিণতি বরণ করতে হল? দুঃখ, বেদনা, ক্ষোভ, হতাশা আর নিরুপায় অনুভূতির মিশ্র চাপে আমার তন্ত্রিগুলো চিৎকারে ফেটে পড়তে চাচ্ছিল। ঘৃণায় কুকড়ে যাচ্ছিল আমার শরীর। নিজের জীবিত শরীরটাকে ওর মৃত্যুর সংবাদের কাছে অপমানজনক মনে হচ্ছিল।
ওর সঙ্গে আমার দেখা হয়নি কখনও, হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু না হলেও মুক্তচিন্তার জন্য, সুস্নিগ্ধ ও সুসজ্জিত গদ্য ভাষায় বিজ্ঞান ও সাহিত্য বিষয়ক লেখার জন্য ও আমার আত্মীয় হয়ে উঠেছিল। একই ভাষার গর্ভজাত অভিজিত ছিল আমার সাহিত্যসহোদর। প্রখর যুক্তিবোধে স্নাত কুসংস্কারভেদী মুক্তচিন্তাগুলো ওকে জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত করে তুলেছিল। ওর গদ্য আর চিন্তায় ছিল যত্নের ছাপ।
প্রিয় অভিজিৎ, হাইপেশিয়ার সহোদর, হুমায়ুন আজাদের নিকটতম স্পন্দন, প্রিয় ভাই আমার, এই পশু, ভণ্ড আর সুবিধাবাদী কীটের জগতে আমরা যারা অসহায় তাদের অশ্রু আর ভালোবাসার শয্যায় আপনার শেষ আশ্রয় রচিত হয়েছে। আপনি আমার আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়ে আছেন। কোনো অন্ধকার চাপাতি, কোনো হিংসা, নিষ্ঠুরতা এই আলিঙ্গন থেকে আপনাকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।
রাজু আলাউদ্দিন: লেখক, সাংবাদিক।