উচ্চশিক্ষায় ‘সিস্টেম লস’: প্রয়োজন অর্থনৈতিক দায়বদ্ধতা

এইচ এম মহসীন
Published : 23 Dec 2014, 05:41 AM
Updated : 23 Dec 2014, 05:41 AM

কয়েক মাস ধরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বেশ আলোচনা, বিতর্ক হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ একবারে সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা এবং ভর্তিপরীক্ষার ফলাফল দেশের শিক্ষার মানের নির্ণায়ক কিনা এ বিষয়গুলোই ঘুরেফিরে আলোচনায় এসেছে। বাস্তবতা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপ্রক্রিয়ার বাইরেও দেশে উচ্চশিক্ষায় আরও অনেক 'সিস্টেম লস' রয়েছে। ভিশন ২০২১এর লক্ষ্যে দেশের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে হলে, উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে বিদ্যমান এই 'সিস্টেম লস' দ্রুত শনাক্ত করে, এসবের কারণ নির্ণয় ও নির্মূল করার লক্ষ্যে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করার এখনই সময়।

প্রথমেই দেখে নেওয়া যাক, উচ্চশিক্ষায় 'সিস্টেম লস' বলতে আমি কী বোঝাতে চাচ্ছি। উচ্চশিক্ষায় সরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশ হিসেবে যে পরিমাণ আউটপুট (গ্র্যাজুয়েটদের সার্ভিস) পাওয়া উচিত, বিভিন্ন সিস্টেমেটিক ত্রুটির কারণে তার সম্পূর্ণটুকু অর্জন সম্ভব হয় না। বিনিয়োগের (ইনপুট) তুলনায় দেশ ও জাতির প্রাপ্ত সেবায় (আউটপুট) যে গ্যাপ রয়েছে, সেটিকে আমরা 'সিস্টেম লস' হিসেবে দেখতে পারি।

প্রথমেই আসা যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রসঙ্গে। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার ভর্তিপরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ বাতিল করেছে। এ সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দ্বিতীয়বার ভর্তিপরীক্ষার কারণে প্রতি বছর গড়ে ২০০ আসন ফাঁকা থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে যেখানে লাখ লাখ শিক্ষার্থী প্রতি বছর ব্যর্থ হয়, সেখানে আসন শূন্য থাকার বিষয়টি অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য।

এ ঘটনা কিন্তু শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর ব্যাপ্তি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বিদ্যমান। দেশে যেখানে মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভাব, সেখানে কিছু উচ্চাভিলাষী শিক্ষার্থী যখন দ্বিতীয় বছর ভর্তিপরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে বা বিভাগে ভর্তি হয়ে পূর্ববর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের বা বিভাগের আসন শূণ্য করে, সেটি নিঃসন্দেহেই 'সিস্টেম লস'। শুধু এ কারণেই প্রতি বছর দেশ সম্ভাব্য কয়েক হাজার গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে ব্যর্থ হয়।

এবার আসা যাক, বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেও তার যথাযথ প্রয়োগ না করার প্রসঙ্গে, যার উদাহরণও বাংলাদেশে ভুরি ভুরি। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বুয়েট থেকে প্রশিক্ষিত প্রকৌশলীরা বিসিএস ক্যাডারের মাধ্যমে পুলিশ বা কাস্টমসে নিয়োগ পাচ্ছেন। একইভাবে গণিত বা পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের গ্র্যাজুয়েটদের ব্যাংকে চাকরি নেওয়ার সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়।

পেশা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই স্বাধীনতা থাকা উচিত। তবে বিষয় পরিবর্তন করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করলে নতুন বিষয় শিখতে যেমন অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ ও সময়ের দরকার হয়, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেশাগত শিক্ষার যথাযথ ব্যবহারও হয় না। সরকারি টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা প্রদান করে দেশ যখন গ্র্যাজুয়েটদের যথাযথ সার্ভিস থেকে বঞ্চিত হয় (একজন প্রকৌশলী প্রশাসনে চাকরি নিলে দেশ একজন প্রশিক্ষিত প্রকৌশলীর সেবা থেকে বঞ্চিত হয়), তাকেও 'সিস্টেম লস' হিসেবেই আখ্যায়িত করা যায়।

এ তো গেল পেশা পরিবর্তনের কথা। এর চেয়েও মারাত্নক 'সিস্টেম লস' হচ্ছে, প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চশিক্ষা কোনো কাজেই না ব্যবহার করা। আমার পরিচিত কেউ কেউ আছেন যারা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়েও চিকিৎসাবিদ্যার চর্চা করছেন না। যাদের কথা বলছি তারা অধিকাংশই নারী, যারা বিয়ের পরে সংসার করাই তাদের প্রধান দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করেছেন। সংসার করার মধ্যে খারাপ কিছু দেখছি না, তবে দেশের টাকায় মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করে তার অপচয় করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেই মনে হয়।

প্রকৃতপক্ষে, বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে মেডিকেল কলেজে শিক্ষাগ্রহণ করা সম্ভব বলেই এ ধরনের 'সিস্টেম লস'এর ঘটনা ঘটে। যদি সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার খরচ বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের মতো হত এবং শিক্ষার্থীর পরিবারকে সেটি বহন করতে হত, তাহলে হয়তো এমবিবিএস বা বিডিএস (ডেন্টাল) ডিগ্রিধারীদের শিক্ষার অপচয় আমরা দেখতে পেতাম না।

এবার আসা যাক মেধা পাচারের প্রসঙ্গে। প্রতিবছর দেশের মেধাবীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে বিদেশে পাড়ি জমায়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা নিতে দেশের বাইরে যায়। এই বিদেশগামীদের অনেকেই বুয়েট বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট। শুধু বুয়েটেই এমনও বিভাগ রয়েছে যেখান থেকে একই ব্যাচের শতাধিক গ্র্যাজুয়েট উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা যেহেতু নিজ ইচ্ছায় দেশ ত্যাগ করেন, তাই একে আক্ষরিক অর্থে 'মেধা পাচার' বলা যায় না। তবে সরকারি টাকায় দেশে স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষা গ্রহণ করে (বুয়েটের ক্ষেত্রে প্রকৌশল ডিগ্রি অর্জন শেষে) এই মেধাবীরা যখন প্রবাসে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা শেষে সেখানেই কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেন, সেটি দেশের জন্য যে অপূরণীয় ক্ষতি সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

শিক্ষা ক্ষেত্রে উপরে উল্লিখিত 'সিস্টেম লস'এর বিষয়গুলো অর্থনীতির 'এক্সটার্নালিটি' (externality) কনসেপ্টের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়। অর্থনীতির সংজ্ঞা অনুযায়ী, যখন কোনো ব্যক্তি বা ব্যবসায়ের নিজস্ব লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে নেওয়া সিদ্ধান্ত তৃতীয় কোনো পক্ষের (সাধারণত সমাজ) ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে সেটিকে negative externality হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এবার দেখে নিই এই থিওরি আমাদের দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রের সিস্টেম লসগুলো কীভাবে প্রভাবিত করে।

নেতিবাচক 'এক্সটার্নালিটি'র এই কনসেপ্ট আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। কারণ, বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক প্রকার বিনামূল্যেই শিক্ষা প্রদান করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সম্পূর্ণ খরচ যদি শিক্ষার্থীদের নিজেদেরই বহন করতে হত, তাহলে তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত এত 'সিস্টেম লস' সৃষ্টি করত না।

ব্যাপারটি আরও পরিস্কার করার জন্য একজন শিক্ষার্থীর এক বছর গ্যাপ দিয়ে পরবর্তী শিক্ষা বছরে পছন্দের বিভাগ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার 'কস্ট-বেনিফিট' (cost-benefit) বিশ্লেষণ করে দেখা যাক। 'কস্ট' বিবেচনা করলে দেখা যায়, ওই শিক্ষার্থী তার জীবনের একটি বছর সময় হারায়, ওই ছাত্রের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যয়িত অর্থ অপচয় হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় একজন কম গ্র্যাজুয়েট তৈরি করে (opportunity cost), যার কারণে দেশে একজন কম গ্র্যাজুয়েটের সেবা পায়। বলাই বাহুল্য যে, দেশে বিদ্যমান পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী শুধু তার এক বছর সময় বিসর্জন দেয়, আর দেশের অর্থনীতি বাকি দুটো 'কস্ট' বহন করে।

পক্ষান্তরে, 'বেনিফিট' হিসেবে শুধু শিক্ষার্থীরই ব্যক্তিগত লক্ষ্য অর্জন হয়, দেশ বা জাতির অতিরিক্ত কোনো কল্যাণ সাধিত হয় না। তবে বিভাগ পরিবর্তন করার জন্য যদি ওই শিক্ষার্থীকে এক বছরের প্রকৃত খরচ পরিশোধ করতে হত (ধরা যাক, এক বছরের জন্য এক লাখ টাকা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচের সমপরিমাণ) এবং আসন শূণ্য করার জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ আরও তিন লাখ টাকা (তিন বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন শূণ্য থাকবে) পরিশোধ করতে হত, তাহলে বিভাগ পরিবর্তন করার ঘটনা হয়তো হাতেগোনা কয়েকটির বেশি দেখা যেত না।

একইভাবে (আগেও উল্লেখ করেছি) মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজে পড়ার সম্পূর্ণ খরচ যদি শিক্ষার্থীকে বহন করতে হত, তাহলে ডিগ্রি অর্জনের পরে প্র্যাকটিস না করার ঘটনা হয়তো ঘটতই না। চাকরির ক্ষেত্রে পেশা পরিবর্তন করা বা বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে একই রকম ব্যাখ্যা করা সম্ভব।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে সিস্টেম লস মেনে নেওয়ার মতো অভিলাষী হওয়ার সুযোগ নেই। তাই প্রশ্ন হচ্ছে, উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে প্রচলিত 'সিস্টেম লস' কীভাবে দূর করা যায়, সেটি।

এ প্রশ্নের সমাধানও লুকিয়ে রয়েছে ওই negative externalities নিয়ন্ত্রণের এর মধ্যেই। এমন পদ্ধতির প্রচলন করতে হবে যাতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী বা গ্র্যাজুয়েটরা তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের বেনিফিটের সঙ্গে তার মূল্যটিও বহন করে। অর্থাৎ তৃতীয় পক্ষের (সমাজ) পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই তার সিদ্ধান্তের 'কস্ট' ও 'বেনিফিট' দুটোই ভোগ করবে। পনের থেকে বিশ লাখ টাকা খরচ করে এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে কেউ যদি বেকার থাকতে চায়, সেটি তার নিজের ব্যাপার; তবে ওই পনের-বিশ লাখ টাকা রাষ্ট্র যাতে বহন না করে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

পাঠক নিশ্চিন্ত থাকুন, আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেতন কাঠামো চালু করার সুপারিশ করছি না। তবে, প্রচলিত বেতনের (টিউশন ফি) কাঠামো চ্যালেঞ্জ করে নতুন একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করতে চাই যার মাধ্যমে সরকার ও শিক্ষার্থীদের খরচের অংক বর্তমান সময়ের মতোই থাকবে, তবে শিক্ষার্থীদের দেশের প্রতি দায়বদ্ধ করা সম্ভব হবে।

প্রস্তাবিত এই পদ্ধতিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বাজার মূল্য অনুযায়ী (বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত খরচ অনুযায়ী) টিউশন ফি ও অন্যান্য ফি নির্ধারণ করা হবে এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার নির্ধারিত বিভাগের টিউশন ফিএর জন্য দায়ী থাকবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন, শিক্ষার্থীদেরকে তাদের টিউশন ফি ও আনুষঙ্গিক খরচ পরিশোধ করতে হবে না– তারা নামমাত্র একটি ফি পরিশোধ করবে (প্রচলিত ফিএর সমতুল্য) এবং বাকি টাকা সরকার শিক্ষার্থীদের বিপরীতে ঋণ দেবে। এই ঋণ সরকার সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিশোধ করবে; তবে শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগতভাবে এর জন্য দায়ী থাকবে।

সরকারপ্রদত্ত এই ঋণের শর্ত হবে খুবই সহজ– গ্র্যাজুয়েশন শেষে সরকারি অথবা আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে একটি নির্ধারিত সময় (পাঁচ বছর বা সরকার নির্ধারিত অন্য কোনো মেয়াদে) চাকরি করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর ওই ঋণ সরকার পরিশোধ করবে। আমরা জানি, সরকারি বা আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ দেশের সকল গ্র্যাজুয়েটের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে না। তাই সরকার কিছু উৎপাদনশীল খাতের বেসরকারি চাকরিও (রফতানিজাত শিল্প, কৃষি ইত্যাদি) এই ঋণ মওকুফের আওতায় আনতে পারে। তবে যে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত পেশার বাইরে অন্য পেশায় (যেমন বহুজাতিক বিদেশি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, ডাক্তারদের ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতাল অথবা পেশা ত্যাগ করা) যোগদান করবে, তারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাঋণ সুদসহকারে সরকারকে পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবে।

যে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে বিদেশে পাড়ি দেবে, তারা যদি প্রবাসেই স্থায়ী কর্মস্থল নির্বাচন করে, তারাও তাদের শিক্ষাঋণ সুদসহকারে সরকারকে পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবে। অবশ্য তারা যদি দেশে ফিরে নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান বা উৎপাদনশীল খাতে চাকরিতে যোগদান করে, তাহলে অন্যদের মতো তাদের শিক্ষাঋণও মওকুফ হয়ে যাবে।

প্রস্তাবিত পদ্ধতিটি ইচ্ছাকৃতভাবেই পুঙ্খানুপুঙ্খ করা হয়নি; তবে, আমি মনে করি, এটি উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত 'সিস্টেম লস' নির্মূল এবং শিক্ষার্থীদের দেশের প্রতি অর্থনৈতিকভাবে দায়বদ্ধ করার জন্য ভাবনার দাবি রাখে। সংশ্লিষ্টরা আগ্রহী হলে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে এবং উন্নত দেশের উচ্চশিক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে 'বেঞ্চমার্ক' করে, যথাযথ গবেষণা, পর্যালোচনার মাধ্যমে এমন একটি সর্বাঙ্গীন বেতন-ভাতা পদ্ধতি গ্রহণ করা উচিত।

এটি করা সম্ভব হলে, দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বর্তমান সময়ের খরচেই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে, তবে দেশের অর্থ অপচয় না করে। আর তাতে সামগ্রিকভাবে 'সিস্টেম লস' কমবে।

এইচ এম মহসীন: স্ট্র্যাটিজি প্রফেশনাল।