দ্বিতীয়বার ভর্তিপরীক্ষার সুযোগ: স্মারকলিপি নং ১০০৫৩

Published : 8 Dec 2014, 11:03 AM
Updated : 8 Dec 2014, 11:03 AM

স্মারকলিপি নং- ১০০৫৩। ৭ ডিসেম্বর, ২০১৪ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি পেশ করে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তিপরীক্ষা দেওয়ার অধিকারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আমরা যারা এ শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানি না, জানি না কেন তারা মরিয়া হয়ে আন্দোলন করছে, চলুন আমরা তাদের সঙ্গে প্রথমে একটু পরিচিত হয়ে নিই।

ধরুন, একজন শিক্ষাথীর নাম 'ক'। পরীক্ষা দেওয়ার সময় মাঝপথে এসে সে লক্ষ্য করে, তার প্রশ্নপত্রে মোট ২২টি প্রশ্ন ছাপা হয়নি। আরেকটি প্রশ্ন সে চাইল পরীক্ষকদের কাছে; কিন্তু কেন্দ্রে কোনো অতিরিক্ত প্রশ্ন ছিল না। আধ ঘণ্টা পর তাকে নতুন প্রশ্ন এনে দেওয়া হল; ততক্ষণে পরীক্ষার সময় প্রায় শেষ. বাকি মাত্র পাঁচ মিনিট।

পাঠক, শুধুমাত্র 'ক' নামের কোনো শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে এ রকমটি ঘটেছে, সেটা ভাবার বাস্তবতা নেই। 'ক'এর মতো পরীক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, আরও অনেকে এ ধরনের প্রশ্নপত্র পেয়েছে– সবার প্রশ্নপত্র ছিল অসম্পূর্ণ।

আসুন আরেক জনের কথা শুনি; তার নাম, ধরুন 'খ'। সে তিন বছর ধরে গ্রামের বাড়িতে যায় না। তার পণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তবেই বাড়ি ফিরবে। মা-বাবা আদরের সন্তানকে তিন বছর ধরে দেখেন না। 'খ' কিন্তু নাছোড়বান্দা। দুপুরে পুলিশের মার খেয়ে কনকনে ঠাণ্ডায় একটা টি-শার্ট পরে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করছে শাহবাগ থানায় আটককৃত সহযোদ্ধাদের মুক্তির জন্য।

এবার 'গ' নামের মেয়েটির গল্প শুনব। বিদ্যুতের বিল ১৫০০ টাকা, গ্যাসের বিল ৫০০ টাকা, আর কিনে খাওয়া পানির খরচ যোগাতে যাদের এই বয়সেই ৪-৫ টা টিউশনি করতে হয়, যারা মনে করে আগামী দিনে দেশের নেতৃত্ব দিতে পারবে তারাই, তাদেরই একজন প্রতিনিধি 'গ'। শুধু নিজের খরচই নয়, পরিবারের জন্য যাদের ১৭-১৮ বছর বয়সেই দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়, তাদের প্রস্তুতি ছাড়াই পরীক্ষা দেওয়ার পিছনে আশা ছিল, এ বছর না হলেও পরের বছর তো দেওয়া যাবেই। তাদের এই আশা তো আমরাই দেখিয়েছিলাম, তাই নয় কি?

'ঘ'এর বাবা মারা যাওয়ার কারণে আগের দিন ঢাকা পৌঁছাতে পারেনি। তারপরও বুকে পাথর বেঁধে পরীক্ষার আগের দিন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে রওনা দিয়েছিল। সকালে পৌঁছাতে পারেনি সময়মতো। ব্যস, সুযোগ শেষ। তার স্বপ্নের কি তাহলে মূল্য নেই?

'চ' পরীক্ষার হলে প্রশ্ন পায়নি। কারণ, সে পরীক্ষার হলে পৌছানোর আগেই প্রশ্নপত্রের কিছু কপি শিক্ষকদের সহায়তায় হোক বা অন্য কারও, সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। কাঁদতে কাদতে 'চ'সহ আরও যারা প্রশ্ন পায়নি, তারা পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে এসেছিল।

'ছ' এর বাবা মারা নেই বলে সংসার চালাতে ফুলটাইম চাকরি করতে হয় এই বয়সেই। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেনি তাই। তবে অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী সে। যেহেতু ওর সামর্থ নেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বা ঢাকার বাইরে যেয়ে অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার, তাই তার একমাত্র স্বপ্ন ছিল পরের বছর পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে।

'ক' থেকে 'ছ', সবাই কোনো না কোনোভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আকস্মিক ও অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের কারণে ভুক্তভোগী। এদের সম্পর্কে অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মনোভাব হল:

১.

এরা বহিরাগত, এরা আমাদের ছাত্র নয় এবং এদের আন্দোলনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই;

২.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও তো অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে তারা পড়তে পারে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন;

৩.

কাউকে না কাউকে কোনো না কোনো বছর আইন পরিবর্তনের কারণে ভুক্তভোগী তো হতেই হবে।

এ প্রেক্ষিতে আমার বক্তব্য হল:

ক.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক ও কর্মচারিরা যে বেতন তুলেন তা কি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেতন থেকে আসে? দেশের মানুষ কর দেয় এবং যে কোনো দুর্নীতিবাজ সম্পদশালীর চেয়ে যারা বেশি কর দেয়, এই শিক্ষার্থীরা সেসব পরিবার থেকেই এসেছে। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সিদ্ধান্তের কারণে যদি এরা প্রতারিত বোধ করে তাহলে কর্তৃপক্ষ কি দায়মুক্তি থেকে বলছে না যে, এরা আমাদের শিক্ষার্থী নয়, এদের শহীদ মিনারে অনশন করা উচিত নয়?

খ.

কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখবে কে দেখবে না, তা নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার কি আমাদের আছে? যেখানে পুরো সমাজ শৈশব থেকে তাকে এই স্বপ্ন দেখিয়ে আসছে, হঠাৎ আপনি আপনার সুবিধামতো তাকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখতে বলতে পারেন না। আমি আবার বলছি, এই শিক্ষার্থীরা বিনা পরিশ্রমে, বিনা পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখছে না, তারা একটি কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মধ্য দিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ চায়। কেউ এসে তাদের করে সুযোগ দেবে আর তারা নেবে, বিষয়টি এমন নয়। তারা যথার্থ পদ্ধতি অনুসরণ করেই তাদের অবস্থান করে নিতে চায়। তাদেরকে তাদের স্বপ্ন থেকে আলাদা করে অন্য স্বপ্ন দেখতে বলার অধিকার কারও নেই।

গ.

ধরুন, দেশে বেকারের হার বেশি। আপনি চাকরির জন্য দরখাস্ত করবেন। আপনাকে যদি কেউ বলে, দেশে যেহেতু বেকারত্বের হার বেশি, তাই আপনি বেশি বেতনের চাকরিটার জন্য দরখাস্ত না করে কম বেতনের চাকরিতে দরখাস্ত করুন। আপনি কি বেশি বেতনের চাকরি করার অধিকার অন্য কাউকে দিয়ে দেবেন? তাহলে আগের বছরের পরীক্ষার্থীদের ভালো প্রস্তুতির কারণে এবারের যে শিক্ষার্থীরা তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারল না, তাদের কাছে কেন আশা করবেন তারা তাদের এই অধিকার ছেড়ে দিয়ে নতুনদের সুযোগ করে দিবে? আমরা কি চাইলেই যে কাউকে নিজের ইচ্ছায় বিনা নোটিশে ভুক্তভোগী করতে পারি?

এ মুহূর্তে আমার হাতে দুটো লিফলেট আছে। একটি লিফলেটের কথা ‍তুলে ধরছি। সেখানে জেএসসি পরীক্ষার পর থেকেই কোচিং-এ আসার আহবান জানানো হচ্ছে এবং বলে দেওয়া হচ্ছে যে, এই ফাউন্ডেশন কোর্স করলে ভবিষ্যতে ভার্সিটি, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিবিএতে চান্স পাবার সম্ভাবনা ৮৬% বেড়ে যাবে।

লিফলেটের আরেক অংশে শিক্ষার্থীদের মনের উপর চাপ ফেলতে এবং তাদের কোচিং সেন্টারে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার ভর্তির সুযোগের তথ্যটি ব্যবহার করা হয়েছে। দুটো বিজ্ঞাপনের ভাষা থেকেই কি বোঝা যায় না যে, দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ বন্ধ করলেও কোচিং-বাণিজ্য বন্ধ হবে না? বরং কোচিং সেন্টারগুলো এইচএসসি পরীক্ষার আরও অনেক আগে থেকেই এ ধরনের নানান মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কোচিংএর দিকে আকর্ষণ করবে। খুব সম্ভাবনা আছে, এক বছরের জায়গায় তারা দু'বছর ধরে কোচিং করাতে বাধ্য করবেন এই শিক্ষার্থীদের।

আমরা জানি যে, প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানা ধরনের অভিনব উপায়ে নকল উদ্ধার করে থাকে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হোক অথবা কারও সাহায্যে, এ ধরনের ঘটনা প্রতি বছর ঘটছে। অনেক শিক্ষক নকলের এই প্রাদুর্ভাবের জন্য দায়ী করেন দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের আধিক্য। তাদের মতে, অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে গিয়ে দূর-দূরান্তের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে নকল নিয়ন্ত্রণে রাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু এটা বোধগম্য নয় যে, কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর এই অসাধু তৎপরতা রোধ করতে গিয়ে সত্যিকারের মেধাবী ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের এ ধরনের বিড়ম্বনায় ফেলা হবে। আমরা কি একের অন্যায়ের দোষে অন্যকে ভুগাচ্ছি না?

আমার কাছে আরেকটি লিফলেটে বলা হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন প্রাক্তন শিক্ষক একটি কোচিং সেন্টার চালাচ্ছেন। আমরা জানি, কোচিং-বাণিজ্যই অসদুপায়ে ভর্তির সমস্ত পথ তৈরি করে দেয়। অথচ সেটি বন্ধ না করায় একটি কোচিং সেন্টার উল্টো সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্পৃক্ততার পুঁজি করে তাদের বাণিজ্য করে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি-নির্ধারণী মহলের যদি সত্যিই অসদুপায় বন্ধের ইচ্ছা থাকত, তাহলে অনেক আগেই আইন করে কোচিং-বাণিজ্য বন্ধের দাবি জানাতেন অথবা এসব নিয়ন্ত্রণে আনতে পারতেন। অসদুপায় অবলম্বনে কোচিং সেন্টারগুলোর সম্পৃক্ততার সমস্ত প্রমাণ পেয়েও কেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়? অসদুপায়ে ভর্তির পথগুলো বন্ধ না করে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের অধিকার হনন করেই কর্তৃপক্ষ দায় সারতে চান।

এমন একটি যুক্তি প্রায়ই শোনা যায় যে, নতুন শিক্ষার্থীরা পুরানো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরীক্ষা দিতে গিয়ে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এবং হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্ত নাকি এই বৈষম্য দূর করবে। আমি বলতে চাই, বছরের পর বছর যখন শিক্ষার্থীরা অধ্যবসায় দিয়ে এক বছর সময় বেশি নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে আসছে, তখন এই বৈষম্যের অজুহাত কোথায় ছিল? কেন ঠিক পরীক্ষা হয়ে যাবার পর লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীকে আশায় রেখে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হল? এই শিক্ষার্থীদের কি জানবার অধিকার ছিল না যে, তারা দ্বিতীয়বার সুযোগ পাবে না?

এখানে স্পষ্টতই বোঝা যায় যে, এ ধরনের বৈষম্যের প্রসঙ্গ তোলার মানে হচ্ছে, যে কোনো মূল্যে একটি অজুহাত দেখিয়ে এই বছরের শিক্ষার্থীদের কোণঠাসা করা। একটা বিদ্যাপীঠ কী করে কারও জন্য দ্বার বন্ধ করে কারও জন্য খুলে দিতে পারে? আসলে কি কর্তৃপক্ষ নতুন শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে এমন একটি কাজ করছে? পরের বছরও তো এমন শিক্ষার্থী থাকতে পারে যারা নিজেদের পারিবারিক, সামাজিক, বা অর্থনৈতিক কারণে পরীক্ষা নাও দিতে পারে বা প্রস্তুতি নাও নিতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় তো সে সব নতুন ছাত্রদের প্রতিও নজর দিচ্ছে না।

আমি মনে করি, নতুন কী পুরাতন, অধ্যবসায়কে সুযোগ দেওয়া উচিত। প্রথম চেষ্টাতেই যারা উত্তীর্ণ হবে তারাই যে মেধাবী আর অন্যরা মেধাবী নয়, তা কী করে বলতে পারি আমরা? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষক আছেন যারা নিজেরাও প্রথমবার ভর্তিপরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হননি এবং পরবর্তীতে তারা শুধু মেধার স্বাক্ষরই রাখেননি, শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা প্রদর্শন করেও পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষকেরাই প্রমাণ করেছেন যে, অধ্যবসায়ের মূল্যায়ন মানে মেধার অবমূল্যায়ন বা বৈষম্য নয়। আর কোনো প্রমাণের এখানে প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।

আন্দোলনকারীদের অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারি, তার বদলে দিতে পারি উপহার– 'প্রহার'! আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন মনের ক্ষোভে বলছিল, "গান্ধীজী স্টাইল আমাদের দেশে চলে না। আমরা যখন অনশনে বসেছিলাম আমাদের কাছে কোনো টিভি ক্যামেরা আসেনি, কোথাও তেমন লেখা হয়নি। ভিসি স্যার এসেছিলেন শহীদ মিনারে অন্য কাজে, আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়েও দেখেননি। আমরা কি তার সন্তানের মতো নই? যখন রাস্তায় নেমে মার খেলাম, পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদ করলাম তখন আমাদের কথা শুনতে এল মিডিয়া!"

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পকেটে এমন কোনো পয়সা নেই যে, তারা দূর-দূরান্ত থেকে পয়সা খরচ করে যানবাহনে আসবে। এদের অধিকাংশই আসে পায়ে হেঁটে। টিউশনির পয়সা দিয়ে মাইক ভাড়া করে আনে। আর সেই মাইক নিয়ে যায় পুলিশেরা চুরি করে। পুলিশের লাঠিচার্জ ও প্রহারের পর গতকাল ২৮ জনকে আহত হয়ে হাসপাতালে দৌড়াতে হয়েছে। তিনজনকে পুলিশ শাহবাগ থানায় অনেক রাত পর্যন্ত আটকে রেখেছিল। রাত-দিন না খেয়ে এরা এখনও স্বপ্ন দেখে যাচ্ছে যে, তাদের দাবি পূরণ হবে। সে স্বপ্ন নিতান্তই একটা আইসক্রিম খাবার স্বপ্ন নয়। যে দেশে ৭০ লাখ মানুষ এখন স্বপ্নহীনতার কারণে মাদকাসক্ত, সে দেশে স্বপ্ন দেখা তরুণদের প্রহার করে আমরা তাদের কোনদিকে ঠেলে দিচ্ছি? কার স্বার্থে?

আমরা বলব, ভর্তিপরীক্ষা ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা হোক। মেধা যাচাইয়ের কৌশল নিয়ে জরিপ হোক। গণতান্ত্রিক উপায়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হোক। প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরণ করা ১০০৫৩ নম্বর স্মারকলিপির দিকে দৃষ্টি পড়ুক সবার।

মোশাহিদা সুলতানা ঋতু: সহকারী অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।