আইনমন্ত্রীর ভুল ব্যাখ্যা, অতঃপর

জায়েদুল আহসান পিন্টু
Published : 9 Nov 2014, 05:40 AM
Updated : 9 Nov 2014, 05:40 AM

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজা অর্থাৎ ফাঁসি কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। অ্যাটর্নি জেনারেল এক কথা বলেন তো আইনমন্ত্রী দেন ভিন্ন তথ্য। অথচ সহজ এই বিষয়টি নিয়ে এত কথাবার্তার দরকার ছিল না, আইন অনুযায়ী সব হবে, কিন্তু সেই আইনের ব্যাখ্যা একেক জন একেক রকম দিবেন কেন? সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের দণ্ড কার্যকর প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী যে সব ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাকে হাস্যকর আখ্যা দেওয়ার যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।

এবার দেখে নিই সরকারের তরফ থেকে কে কী বলেছেন। ৫ নভেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম দণ্ড কার্যকর করতে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রয়োজন কি না, এমন প্রশ্নে বলেছেন, ''ট্রাইব্যুনাল পূর্ণাঙ্গ রায় দিয়েছে। আপিল বিভাগ সে রায় বহাল রেখেছে। জেল কর্তৃপক্ষ দেখবে আদেশের অংশ। তাদের কি পুরো রায় দরকার আছে?''

পাল্টা প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সংক্ষিপ্ত আদেশে দণ্ড কার্যকর করা সময়ের ব্যাপার।

তার এই ব্যাখ্যার কয়েক ঘণ্টা পরই আইনমন্ত্রী তড়িঘড়ি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেন। সেখানে তিনি বলেন, ''সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটা রায় আছে, সেখানে রিভিউ পিটিশন ডিসমিস হয়েছে, সেটা ধরে নিয়ে জেল কতৃ‌র্পক্ষকে রায় কার্যকরের প্রস্তুতি নিতে আদেশ দিয়েছি।''

কামারুজ্জামানকে আপিল বিভাগের রায় জানানো হয়েছে কি না,এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ''আমি যতটুকু শুনেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে কি না সে প্রশ্ন আমি আইজি প্রিজনস সাহেবকে করি নাই, কিন্তু আমি যতটুকু জানি তাঁকে (কামারুজ্জামান) জানানো হয়েছে। আপিল বিভাগে খারিজ হয়েছে এবং তাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে।''

এর তিনদিন পর, ৮ নভেম্বর আইনমন্ত্রী কারাবিধির ৯৯১ ধারার উদাহরণ দিয়ে আবারও বললেন বলেন, ''ওই ধারাটি যদি পড়েন, তাহলে দেখবেন আসামিকে তার দণ্ডের কথা অবহিত করার কথা বলা আছে। তার মানে আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজপত্রে জানাতে হবে, তা নেই। কথা হচ্ছে সে বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়েছে কি না।''

আদেশ কারাগারে যায়নি, কীভাবে বিষয়টি জানানো হল এমন প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, ''আদেশ যায়নি মানে কী? তাঁকে জানানো হয়েছে। ব্যাপারটি হল আমি যতদূর জেনেছি 'প্রিজন অফিসিয়াল হ্যাভ টোল্ড হিম দ্যাট' আপনার (কামারুজ্জামানের) আপিল ডিসমিস হয়েছে। আপনার মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে।''

কীসের ভিত্তিতে জানানো হয়েছে, জানতে চাইলে মন্ত্রী প্রশ্ন করে বলেন, ''তাহলে খবরের কাগজ কি মিথ্যা?''

আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্য যখন টেলিভিশনে শুনছি তখন রীতিমতো নিজের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। একজন মন্ত্রী একজনের মৃত্যৃদণ্ড কার্যকর করার মতো ইস্যুতে কীভাবে সংবাদপত্রকে ভিত্তি হিসেবে দাঁড় করালেন? তা-ও আবার তিনি যখন আইনমন্ত্রী!

তার কাছে জানার বড় ইচ্ছে জাগল, যদি কোনো দণ্ডিত ব্যক্তিকে আপিল বিভাগ মুক্তির আদেশ দেয় এবং সেই আদেশের কপি কারাগারে পৌছানোর আগে সংবাদপত্র বা টেলিভিশনে প্রচারিত খবরের ক্লিপিং নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে তার স্বজন বা আইনজীবীরা যান, তখন কি কারা কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দিয়ে দিবেন?

যুদ্ধাপরাধীদের দণ্ড কার্যকর প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বা অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য নিয়ে আরও অনেক কিছু বলার বা লেখার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই আইনমন্ত্রী নিজেকে শুধরিয়ে ফেলেছেন। শনিবার বিকেলেই আবার বললেন যে, আপিল বিভাগের সংক্ষিপ্ত কপি কারা কর্তৃপক্ষের হাতে না পৌঁছানো পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকর করা হবে না। তিনি জানান, যুদ্ধাপরাধের বিচার সরকার আইনের প্রতিটি ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে সম্পন্ন করছে। কামারুজ্জামানের বিচারের ক্ষেত্রেও একই ধারা অব্যাহত থাকবে। সকালে এক কথা বলে বিকেলেই তা শুধরালেন মন্ত্রী! অবশ্য এটা ভালো লক্ষণ। অনেক মন্ত্রী তো তা-ও করেন না।

পাঠক, লক্ষ্য করবেন, এখানে আইনমন্ত্রী তিনবার তিন কথা বলেছেন। একবার বললেন, কামারুজ্জামানকে আপিল বিভাগের রায় জানানো হয়েছে। আরেকবার তিনি সংবাদপত্রের খবরকেও ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বললেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজপত্রে জানাতে হবে এমন কথা নেই। তবে শেষবার তিনি বলেছেন, দণ্ড কার্যকর করতে হলে আপিল বিভাগের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছাতে হবে। এটাই হল আইনের সঠিক ব্যাখা, যা বুঝতে তার ছ'দিন সময় লাগল।

প্রশ্ন হল, ফৌজদারি মামলায় পারদর্শী একজন আইনজীবী হয়েও আইনমন্ত্রীকে এত জল ঘোলা করে কেন বলতে হল যে, রায়ের কপি কারাগারে পৌঁছাতে হবে? তিনি আইনের এ ধারাটি না-ই জানতে পারেন, একজন আইনজ্ঞ দেশের সব আইন জানবেন এমন কথা নেই, তবে কেউ না কেউ তো নির্দিষ্ট ওই আইন বা বিধি-বিধান জানতেই পারেন। আইন মন্ত্রণালয় কিংবা অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরে এমন কোনো আইনবিদ কি নেই যারা ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া জানেন?

যখন গণমাধ্যমের সামনে নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে আইনমন্ত্রী বা ওই পর্যায়ের কেউ আসবেন তখন তাকে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েই আসতে হবে। গণমাধ্যমে আজকাল সরাসরি সব বক্তব্য প্রচার হয়ে যায়, এর ফলে বিভ্রান্তি দ্রুত ছড়াতে পারে। কারণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্ত্যবের সারবত্তা আছে কী নেই সেটা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ নেই বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোতে (এখনও গণমাধ্যমগুলো ওই পর্যায়ে যেতে পারেনি যে, তারা নিজের উদ্যোগে কোনো আইন বিশেষজ্ঞ রাখবে, যাতে আইনি ব্যাখ্যার দরকার হলে তাৎক্ষণিকভাবে তা পাঠক বা দর্শকের কাছে পরিস্কার করে দেওয়া যাবে)। এ রকম পরিস্থিতিতে সরকারের তরফ থেকে একজন মুখপাত্র ঠিক করা যেতে পারে যিনি নির্দিষ্ট ওই বিষয়ে জনগণকে অবহিত করার জন্য গণমাধ্যমকে জানাবেন। এখন যেভাবে চলছে সেভাবে চললে মন্ত্রী ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের একেক জনের একেক রকম কথাবার্তা বিভ্রান্তির জন্ম দিতে থাকবে।

এবার দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করার প্রক্রিয়াটি কী রূপ।

ফৌজদারি মামলায় বিচার আদালত যখন কাউকে ফাঁসির দণ্ড দেয় সেটাই চূড়ান্ত নয়, তাকে হাইকোর্টের কাছ থেকে ওই দণ্ডের কনফারমেশন নিতে হয়। মৃত্যুদণ্ডের আদেশেই তা লেখা থাকে। হাইকোর্ট সেই আদেশ বহাল রাখলে আসামি আপিল করার সুযোগ পান। আপিল দায়েরের অনুমতি মেলার পরেও যদি মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকে, তাহলে সেই আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদনের সুযোগ পান। পুনর্বিবেচনার আদেশ খারিজ হলে, আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারেন। সবশেষে, সেই আবেদনও খারিজ হলে কারা কর্তৃপক্ষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে। একজন মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত বলে এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া মেনে চলতে হয়।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে কারা কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই আপিল বিভাগের আদেশের কপি পেতে হবে। নয়তো কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ডিত ব্যক্তিকে কীসের ভিত্তিতে জানাবেন যে, তার ফাঁসির আদেশ বহাল আছে? আইনমন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, সংবাদমাধ্যম কখনও-ই অফিসিয়াল ভাষ্য হতে পারে না। কারা কর্তৃপক্ষের কাছেও আপিল বিভাগের আদেশ সরাসরি যেতে পারে না।

ফৌজদারি কার্যবিধি, প্রিজনারস অ্যাক্ট ১৯০০ ও জেল কোড অনুযায়ী ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়াটা হল এ রকম। প্রথমে যে আদালত প্রাথমিক রায় দিয়েছে অর্থাৎ বিচার আদালতে আপিল বিভাগের রায় পাঠানো হবে। বিচার আদালত যদি দেখে তাদের দেওয়া ফাঁসির আদেশ আপিল বিভাগ বহাল রেখেছে তখন তারা আসামির মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে। সেই পরোয়ানা আপিল বিভাগের আদেশসহ যাবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও কারা দপ্তরে। কারা দপ্তর রায়ের কপি কখন গ্রহণ করল তার দিন তারিখ ও সময় উল্লেখ করে নোট রাখবে। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ কারাবিধির ৯৯১ ধারা অনুযায়ী আপিল বিভাগের আদেশ দণ্ডিত ব্যক্তিকে পড়ে শোনাবে। তারপর তার কাছে জানতে চাইবে, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কিনা। এ জন্য তাকে কাগজ কলম সবকিছুই সরবরাহ করবে কারা কর্তৃপক্ষ। দণ্ডিত ব্যক্তিকে সাতদিনের সময় দিয়ে বলা হবে, যদি এর মধ্যে আবেদন না করা হয় তাহলে ধরে নেওয়া হবে যে, আসামি প্রাণভিক্ষা চাইতে রাজি নয়।

পাশাপাশি কারা কর্তৃপক্ষ ওই দিন থেকে '২১ দিনের আগে নয়, ২৮ দিনের পরে নয়' এমন একটি দিনে তার ফাঁসি কার্যকরের সময় ঠিক করবে। দণ্ডিত ব্যক্তিকে আপিল বিভাগের আদেশ জানানোর পর যদি সাতদিনের মধ্যে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করে, তাহলে নির্ধারিত দিনে তার ফাঁসি কার্যকর করা হবে। আর যদি আসামি প্রাণভিক্ষার আবেদন করে তাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানাবে যে, রাষ্ট্রপতির আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকর স্থগিত রাখতে হবে। রাষ্ট্রপতি যদি তার আবেদন নাকচ করে দেন, সেই আদেশ পাওয়ার পর দিন থেকেই আবার ২১ ও ২৮ দিনের মধ্যে যে কোনো দিন ঠিক করে কারা কর্তৃপক্ষ ফাঁসি কার্যকর করবে।

এখানে কারও মনে কৌতূহল জাগতে পারে, ২১ ও ২৮ দিনের বিষয়টি কেন এল? এর আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হয়, ব্রিটিশ আমলে, ১৮৬৪ সালে যখন জেল কোড প্রণয়ন করা হয় তখন আধুনিক কোনো প্রযুক্তি ছিল না। বার্তাবাহকের মাধ্যমে কারা কর্তৃপক্ষ আদেশ-নির্দেশ পেতেন। যেহেতু মৃর্তুদণ্ড সর্বোচ্চ শাস্তি, তাই এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য বা টেলিগ্রাম পাওয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষ ২১ দিন অপেক্ষা করতেন। আর বেশিদিন যেন অপেক্ষা করতে না হয় সে জন্য ২৮ দিনের একটি সীমা টেনে দেওয়া হয়েছিল।

তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন অনুযায়ী, কোনো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ফাঁসি কার্যকর করতে হলে কারাবিধি অনুসরণের প্রয়োজন নেই। ট্রাইব্যুনাল আইনের ২০এর ৩ ধারা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের যে কোন দণ্ড সরকার নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করবে। তাই বিতর্ক দেখা দিয়েছে, যেহেতু ট্রাইব্যুনাল কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে, তাই সরকার যখন তখন তা কার্যকর করতে পারবে কিনা। এমন ধারণা থেকেই আইনমন্ত্রী বারবার বলেছেন যে, তিনি রায় কার্যকর করতে কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন, আসামিকে আপিল বিভাগের রায় কাগজে কলমে জানাতে হবে এমন কথা নেই ইত্যাদি ইত্যাদি।

আইনি বিধান হল দণ্ডিত ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ আদালতের রায় না শুনিয়ে তা কার্যকর করা সম্পূর্ণ বেআইনি, যেটা আইনমন্ত্রী তার সর্বশেষ ভাষণে স্বীকার করে নিয়েছেন। দণ্ডিত ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার আছে রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রার্থনা করার। আর সেই ক্ষমা চাইতে হলে অবশ্যই সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে। সেই আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে যখন ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে তা কারাগারে পাঠাবে তারপর। এ ক্ষেত্রে '২১ দিনের আগে নয় বা ২৮ দিনের পরে নয়'-– জেলকোডের এ ধারাও কার্যকর হবে না। ক্ষমাপ্রার্থনার আবেদন নাকচ করে রাষ্ট্রপতি যেদিনই আদেশ দিবেন সেদিনই কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকর করতে পারবেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালের ৯ মে জামাত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল, তখনও সেই আদেশের কপি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছিল মৃত্যৃ পরোয়ানা জারি করেই। কামারুজ্জামান আপিল করলে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানাতে হয়েছিল যে, আপিল বিভাগের রায় না পাওয়া পর্যন্ত ওই মৃত্যৃ পরোয়ানা স্থগিত থাকবে। ঠিক তেমনি আপিল বিভাগ যখন তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখল, আবারও কারা কর্তৃপক্ষকে ট্রাইব্যুনালের চিঠি দিয়ে জানাতে হবে যে, আপিল নাকচ হয়ে গেছে।

আইন ও বিধি-বিধানের এসব ধারা ইতোপূর্বে বাংলাদেশ অনেকবার ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু এরপরেও অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর বা আইনমন্ত্রীকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মত দিতে দেখা গেছে। তারা আইন-কানুন ঘেঁটে এতটুকু খোঁজ নেওয়ারও প্রয়োজন মনে করলেন না। ‌আইনের ভাষা বা পরিভাষা না জেনেও এই সোজা সাধারণ যুক্তিটা আইনমন্ত্রীর জানা থাকা উচিত ছিল। তাহলে এত বিভ্রান্তি ছড়াত না।

জায়েদুল আহসান পিণ্টু: প্রধান বার্তা সম্পাদক, দেশ টিভি।