কতটুকু দোষ সাকিবের

আবেদ খান
Published : 19 July 2014, 04:35 PM
Updated : 19 July 2014, 04:35 PM

গত সাত বছর ধরে প্রায় প্রত্যেক বছরই কানাডায় আসা হয়। উদ্দেশ্য প্রিয়-রুমকির সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানো। এবারকার আগমনটি একটু বাড়তি কারণেই। পুত্রের পিএইচডি সমাপ্ত হতে যাচ্ছে। পুত্রবধূ রুমকির পিএইচডি তো হয়েই গেছে। রথ দেখা ও কলা বেচার মতো আছেন আর একজন– আমাদের পরিবারের মহাক্ষমতাবান সর্বকনিষ্ঠ সদস্য প্রদীপ্ত প্রতিভাস স্বপ্ন। অতএব নরক গুলজার করা ব্যাপার।

উচ্চশিক্ষা শেষে প্রিয়-রুমকি দেশে ফিরবে এবং দেশেই শিক্ষকতা করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওদের পরিষ্কার কথা– দেশেই থাকবে এবং নিজেদের শিক্ষাগত অর্জন নিবেদন করবে দেশকেই। আমার স্ত্রী সানজিদা আখতার অত্যন্ত খুশি এজন্যই যে, গোটা পরিবার নিয়ে একসঙ্গে দেশের মাটিতে দিন কাটাতে পারবেন। আর আমি আনন্দিত যে বাড়িতে তিন তিন জন ডক্টরেটের সান্নিধ্য থাকলে আমার একটু জ্ঞানবৃদ্ধি হয়।

কানাডায় এসে সপরিবারে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখার অভিজ্ঞতাটাও অনুপম নিঃসন্দেহে। কারণ পুত্রের সঙ্গে বিশ্বকাপ দেখলাম এই এক যুগ পরে। যদিও আমাদের দুজনের প্রিয় দলটি মর্মান্তিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে সেমিফাইনালে এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলায়– তবু সবাই মিলে খেলা দেখার আনন্দটাই আলাদা। ওরা দেশে ফেরার পর ২০১৮-এর বিশ্বকাপটা একসঙ্গে দেখার প্রত্যাশা জেগেছে তীব্রভাবে।

এখানে এসে প্রতিদিন কয়েকবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে চোখ বোলাই। বাংলাদেশের ঘটনাবলী জানার ব্যাপারে ওটাই আমার একমাত্র নির্ভরযোগ্য সঙ্গী। খবরটা পড়লাম ওখানেই। আর পড়ার পর স্বাভাবিকভাবেই খুব মনখারাপ লাগতে থাকল।

বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার এবং একাধিকবার বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে কঠোর শাস্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বোর্ডের দৃষ্টিতে সাকিব গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে– বোর্ডের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট লীগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।

আর একটি অভিযোগ, কিছুদিন আগে সে তার স্ত্রীকে উত্যক্তকারীদের দু'একজনকে ভিআইপি গ্যালারিতে এসে প্রহার করেছিল খেলা চলার সময়। এসব কারণে তার শাস্তি হল আগামী ছয় মাস সে কোনো প্রথম শ্রেণির খেলায় অংশ নিতে পারবে না, আগামী দেড় বছর বিদেশি কোনো লীগেও খেলতে পারবে না। তাকে দেওয়া এনওসি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন বিদেশি কোচকে সাকিব মানতে চায় না, নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করে না, সিনিয়রদের অবজ্ঞা, উপেক্ষা এবং প্রকারান্তরে অপমানও করে– এমনই অসংখ্য অভিযোগ নাকি বোর্ডের ঝুলিতে জমা পড়ে আছে। আর তার বেয়াদবির কারণে অন্যান্য খেলোয়াড়রাও নাকি উদ্ধত হয়ে উঠছে। বোর্ড কর্তৃপক্ষের মন্তব্য অনুযায়ী সাকিবকে প্রদত্ত শাস্তি নাকি তার অপরাধের তুলনায় লঘুই হয়েছে!

সত্যি বলতে কী, বোর্ডের সিদ্ধান্তে আমি খুব আহত বোধ করেছি– বিশেষ করে বোর্ড সভাপতি পাপনের প্রতিক্রিয়ায়। পাপনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও তাঁর ব্যাপারে স্নেহের অনুভূতি আছে। জিল্লুর ভাইয়ের পুত্র পাপন। জিল্লুর ভাইকে অর্ধ শতাব্দীরও অধিককাল ধরে জেনেছি রাজনীতিপাড়ার একজন অতিশয় সজ্জন হিসেবে। ষাটের দশক থেকে বহুবার দেখা হয়েছে তাঁর সঙ্গে। রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত হবার পরে যখনই কোনো অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছে, তিনি বার বার অনুরোধ করেছে বঙ্গভবনে তাঁর কাছে যাওয়ার জন্য। যাই-যাচ্ছি করেও শেষ পর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি।

মনে আছে একুশে আগস্টের সেই ভয়াবহ বোমা হামলার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি ছুটে বেড়িয়েছি হাসপাতালে হাসপাতালে, ধানমণ্ডির সুধা সদনে– প্রতি মুহূর্তে আইভি ভাবির খবর নিয়েছি। তিনি প্রয়াত হওয়ার সংবাদ পেয়ে জিল্লুর ভাইয়ের বাড়ি গিয়েছি, ভিড়ের মধ্যে দূর থেকে শোকনিমগ্ন সদস্যদের দেখে এসেছি। আরও মনে পড়ে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর ভাইয়ের হাত থেকে বিজয় দিবসের পদক গ্রহণ করেছি আমি আর সাকিব আল হাসান একই সঙ্গে। আমি সাংবাদিকতায়, সে ক্রীড়াক্ষেত্রে।

সাকিব সম্পর্কে পাপনের প্রতিক্রিয়া পাঠ করার সঙ্গে সঙ্গে আমার স্মৃতিতে ভেসে উঠেছিল পুরনো সেই ছবি, যেখানে জিল্লুর রহমান মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষণে বলছেন, ''সাকিব আমাদের জাতীয় সম্পদ– আমাদের অহংকার– বিশ্বের ক্রীড়াক্ষেত্রে আমাদের দূত।''

দুই.

ধরে নিলাম সাকিব ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে, সে উদ্ধত, ধরাবাঁধা নিয়মের ঘেরাটোপে বন্দি হতে রাজি নয়– কিন্তু তার জন্য এত বড় শাস্তি তাকে দিতে হবে, যার ফলে তার ক্রীড়াজীবন, দেশের ক্রিকেট সবকিছুই অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে? এ তো ম্যাচ ফিক্সিং সমপর্যায়ের শাস্তি হয়ে গেল!

বিশ্বক্রিকেটে সাকিবের অবস্থানটি যে কোথায়, তা তো বাংলাদেশ ক্রিকেটের হর্তাকর্তারা ভালোই জানেন। তাহলে? সাকিবের ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশের ক্রিকেট কি খুব লাভবান হবে? তারা কি জানেন বিশ্বের ক্রিকেট আলোচকদের ভেতরে এতে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে? এখানে অন্তত একটি উদাহরণ তুলে ধরা যায়।

সাকিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে ক্রিকইনফোতে লন্ডনের একজন ক্রিকেটবোদ্ধা ও আলোচক মন্তব্য করেছেন– নাম অ্যান্ড্রু হিউজ, তাঁর লেখার শিরোনাম– 'বিওয়্যার সাকিব'– অর্থাৎ, সাকিব সাবধান। এ লেখা নিয়ে টুইট করেছেন ৩৪ জন, অসংখ্য পাঠক লাইক দিয়েছেন, ১৯ জন মন্তব্য করেছেন। আমি অনুরোধ করব, স্যাটায়ারধর্মী এ লেখাটি বোর্ডের সবাই পাঠ করুন, পাঠ করুন সাকিবের পক্ষের কিংবা বিপক্ষের ক্রিকেটপ্রেমীরা।

আশা করব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে অন্তর থেকে ভালোবাসেন, যিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে এবং সাকিবকে নিয়ে রীতিমতো গর্বিত– তিনিও পাঠ করবেন এবং তারপর বিবেচনা করবেন শাস্তিটি কতখানি যৌক্তিক হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কতিপয় বিষয় উল্লেখ করছি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য।

তিন.

ক.

ক্রিকেট দুনিয়ায় সাকিবের ঘটনাটি একমাত্র নয়। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে প্রায় সব দেশেই। বিশেষ করে যাঁরা মারকুটে, জননন্দিত ক্রিকেটার তাঁদের অধিকাংশের মধ্যেই ঔদ্ধত্য রয়েছে। ভিভ রিচার্ডস, ব্রায়ান লারা, ক্রিস গেইল, কেভিন পিটারসন, জাভেদ মিয়াঁদাদ, ইয়ান বোথাম, ইমরান খান, শোয়েব আখতার, সনাৎ জয়সুরিয়া, সৌরভ গাঙ্গুলি, শেন ওয়ার্ন– এঁদের সবার সঙ্গেই তো বোর্ডের খটমটি বেঁধেছে বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু কোনো ক্ষেত্রেই কি বোর্ড এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে খেলোয়াড়ের ক্রীড়ানৈপুণ্য বিপর্যস্ত হয়?

না, নেয়নি। ক্রিস গেইলকে জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি কিছুদিন। কিন্তু তার জন্য গেইলের অন্যদেশে ক্রিকেট খেলার অধিকার হরণ করা হয়নি। ভারতের ক্রিকেট দলের কোচ ছিলেন গ্রেগ চ্যাপেল। তিনি সৌরভ গাঙ্গুলিকে পছন্দ করতেন না, সৌরভ অনুশীলনে অনিয়মিত এবং উদ্ধত প্রকৃতির– এই অজুহাতে তাঁকে একাদশে নেওয়ার বিরোধিতা করতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গ্রেগকেই চলে যেতে হল, সৌরভ ভারতীয় ক্রিকেটে সৌরভ ছড়িয়েছেন অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত।

খ.

এমন কেন হয়? কারণ অ্যাগ্রেসিভ ক্রিকেটারদের বিক্রমের বহিঃপ্রকাশ এভাবেই ঘটে থাকে। এই আগ্রাসী মনোভাব তাঁদের স্বভাবজাত। এজন্য এ ধরনের খেলোয়াড়দের বশে রাখতে কিংবা ম্যানেজ করার ব্যাপারে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয়। সব দেশেই এ রীতি আছে। অথচ আমাদের বোর্ডের কর্মকর্তারা দুষ্ট গরুকে বশীভূত করার পরিবর্তে শূন্য গোয়াল রাখার নীতি নিতে গেলেন কেন? এতে কি বাংলাদেশের ক্রিকেট লাভবান হবে?

গ.

কোচের সঙ্গে সাকিবের যদি মনোমালিন্য হয়েই থাকে, তবে তা হয়েছে একেবারেই ব্যক্তিগত পর্যায়ে এবং সীমাবদ্ধ থেকেছে মান-অভিমানের মধ্যে। সেটা কীভাবেই-বা মিডিয়ায় এল এবং তাকেই-বা কেন গুরুত্ব দিয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হল? ক্রিকেট খেলাটাকে পাড়ার ডাংগুলি খেলার পর্যায়ে নামাতে গেলেন কেন বোর্ডের কর্মকর্তারা? যে মিডিয়ার প্রশ্নে সবসময় খড়্গহস্ত থাকেন সবাই, সেই মিডিয়াকেই বা হঠাৎ এমন জামাই আদর করার কথা ভাবলেন কেন তারা?

ঘ.

সাকিব কি রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কাজ করেছে, কিংবা বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিরুদ্ধে কোনোকিছু? সদ্যসমাপ্ত আইপিএল-এ একমাত্র বাংলাদেশি খেলোয়াড় ছিল সাকিব। প্রায় সব ম্যাচে সে খেলেছে এবং ভালোই খেলেছে। তার দল কলকাতা নাইট রাইডার্স চাম্পিয়ন হয়েছে এবং তাতেও বিশাল অবদান ছিল সাকিবের। আইপিএল-এ সেরা দশ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে তার অবস্থা ছয় নম্বর। বিজয়ী টিম সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে সে বলেছে, ''বাংলাদেশের জন্য একটা ওয়ানডে জেতা আইপিএল-এর ট্রফি জেতার চেয়ে আমার কাছে অনেক বেশি।''

দেশের প্রতি যার কমিটমেন্ট এই রকম, বোর্ডের দেওয়া এমন শাস্তি কি তার প্রাপ্য?

ঙ.

সাকিব ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট লিগে খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ বোর্ডের অনুমতি না নিয়ে। অবশ্যই সাকিবের উচিত ছিল এ দিকটা লক্ষ্য করা এবং অনুমতি নেওয়া। আর বোর্ডেরও উচিত ছিল তাকে ভর্ৎসনা করে বা জরিমানা করে কিংবা দুই-ই করে তারপর অনুমতি দেওয়া। কারণ বাংলাদেশ দল তো এরপর যাচ্ছেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ খেলতে। সাকিব যদি সেখানে লিগে খেলে মাঠ, পিচ এবং পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর সুযোগ পায়, তবে তা তো বাংলাদেশ টিমের জন্য বাড়তি সুবিধা। অথচ তাকে সেখানে যেতেই দেওয়া হল না!

তাহলে কি আমাকে বিশ্বাস করতে হবে বোর্ড দেশ বা দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে? নিজের নাক কেটে কার যাত্রা ভঙ্গ করতে সচেষ্ট বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড?

চ.

শাস্তির মেয়াদ অনুযায়ী সাকিব আবার খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেতে পারে বিশ্বকাপের ঠিক আগে আগে। অনুশীলনের অভাবে, মানসিক বিপর্যয়ের কারণে সে যদি ঠিকমতো পারফর্ম করতে না পারে তখন বোর্ডের অনেক সদস্য, নিন্দাবাদী মহল এবং এক শ্রেণির মিডিয়া কটুবাক্য বর্ষণে অকৃপণ হয়ে উঠবে হয়তো। যেন সাকিবের অপরাধ সে এত ভালো খেলে কেন? কেন সে বারবার বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার হয়? কেন তাকে বিদেশি ক্রিকেটাররা এত সম্মান দেয়? কেন সে খেলে খেলে এত ধনী হয়ে যাবে?

পরশ্রীকাতরতা শব্দটি কেবল বাংলাভাষাতেই আছে। সম্ভবত অন্য কোনো ভাষায় এই শব্দের যথার্থ প্রতিশব্দ খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ কি শুধু বাঙালি মানসিকতারই প্রতিফলন?

ছ.

ক্রীড়াঙ্গনে প্লেয়ার্স লাউঞ্জ বলে একটা জায়গা থাকে। সেটা শুধু খেলোয়াড়দের জন্যই সুনির্দিষ্ট। শিক্ষাঙ্গনগুলোতেও থাকে টিচার্স লাউঞ্জ, স্টুডেন্ট লাউঞ্জ ইত্যাদি। অনেকটা মুক্তমঞ্চের মতো। সাধারণত খেলোয়াড়রা ওই প্লেয়ার্স লাউঞ্জে এসে তাদের আবেগ, উচ্ছ্বাস, ক্ষোভ, ক্রোধ সবকিছু উদ্গীরণ করে নিজেদের মন হালকা করে। ওটাকে তারা মনে করে তাদের সার্বভৌম অঞ্চল।

সেখানে কখনও-ই বোর্ড সদস্য কিংবা কর্তৃপক্ষীয়দের উপস্থিতি বাঞ্ছনীয় নয়। সেখানকার কোনো কথাবার্তা কখনও-ই বোর্ড কিংবা মিডিয়ার আঙিনায় পৌঁছুনো উচিত নয়, অথবা সেখানকার বিষয়বস্তু কারও আলোচনা, ক্ষোভের, ক্রোধের কিংবা প্রতিশোধের কারণ হতে পারে না।

সাকিবের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেছে কিনা জানি না। তবে আমি বিশ্বাস করতে চাই, এমন কিছু ঘটেনি।

চার.

বোর্ডের সিদ্ধান্তের পর আমি হতাশ হয়ে এখন সব অগতির গতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছি। আপনি সাকিবকে একান্তে ডাকুন এবং তার বক্তব্য শুনুন। আর বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি রক্ষার উদ্যোগ নিন অনুগ্রহ করে।

পাঁচ.

আমার পুত্র ও পুত্রবধূ বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের পর নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দ স্বর্ণসম্ভাবনা পাশে ঠেলে দেশে ফিরতে যাচ্ছে শুধু দেশকে কিছু দিয়ে মাতৃভূমির ঋণ শোধ করার জন্য। সাকিব আল হাসানও তো যা অর্জন করেছে তা এই দেশকে ভালোবেসেই করেছে, দেশকে ভালোবাসে বলেই করেছে।

আশা করি দেশকে যাঁরা ভালোবাসে, দেশের জন্য যাঁরা কিছু করতে চায়, তাঁরা যেন কেউ হতাশ না হয়। সুন্দর যেন অসুন্দরের কাছে নিগৃহীত না হয়– অদ্ভুত আঁধার যেন না নামে বাংলায়।


টরন্টো

১৭ জুলাই, ২০১৪

আবেদ খান: সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক জাগরণ।