তৃতীয় ইরাক যুদ্ধ এবং পশ্চিমা নকশা

হাসান তারিক চৌধুরী
Published : 22 June 2014, 02:05 AM
Updated : 22 June 2014, 02:05 AM

আবার একটি যুদ্ধের পথে বিধ্বস্ত ইরাক। এবারের যুদ্ধের চেহারা একটু আলাদা। তবে সম্ভবত আগের চেয়ে ভয়াবহ এবং দীর্ঘস্থায়ী। সিএনএনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ২১ জুন লিখেছে, ইরাকের সুন্নী জঙ্গীরা দেশটির সিরিয়া-সংলগ্ন গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর দখল করে নিয়েছে। মসুল, তিরকিতসহ একের পর এক বড় বড় শহর দখল করে চলেছে এই জঙ্গী সংগঠন।

এদের জোরদার হামলায় ভয়ে কাঁপছে ইরাক সরকারের বাহিনী। সরকারি বাহিনী এখন তাকিয়ে আছে তাদের এগার বছরের পুরনো ত্রাণকর্তার দিকে। 'আইএসআইএস' নামের এই সংগঠন ইরাক এবং বৃহত্তর সিরিয়ায় ইসলামি খেলাফতের ঝাণ্ডা উড়াতে চায়। তাই তারা ঔপনিবেশিক যুগের সীমান্ত রেখাগুলো মুছে দিচ্ছে।

এই যুদ্ধ কি আসলেই তথাকথিত খিলাফত প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ? এটি কি একটি ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক লড়াই? নাকি এর আসল হোতা তৃতীয় কোনো শক্তি? কেন এই যুদ্ধ? এর শেষই-বা কোথায়? এ রকম প্রশ্ন আজ অনেকেরই মনে দোলা দিচ্ছে। পশ্চিমী সমাজ এর উত্তর সঠিকভাবে না দিলেও নানাভাবে এর জবাব বেরিয়ে আসছে।

ইরাক নিয়ে পশ্চিমা নীলনকশার সাম্প্রতিক খবরগুলো দিয়েছেন নিজদেশে সত্য বলার দায়ে কারাবন্দি মার্কিন সেনাসদস্য চেলসিয়া ম্যানিং। বন্দিশালার ভেতর থেকে মোবাইল ফোনে পাঠানো তার একটি কলাম ১৫ জুন 'নিউইয়র্ক টাইমস' পত্রিকায় ছাপা হয়। ম্যানিং তার কলামে লিখেছেন কীভাবে ইরাকে সত্যানুসন্ধানী সাংবাদিকদের হত্যা করা হচ্ছে।

এছাড়া ২১ জুন 'ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল' পত্রিকা তাদের এক প্রতিবেদনে লিখেছে কীভাবে মার্কিন প্রশাসন তাদের গোপন পরিকল্পনামাফিক গত কয়েক বছর ধরে ইরাকে সন্ত্রাসের বীজ ছড়িয়ে দিয়েছে। আজ সেই বীজ ইরাকের মাটিতে এক বিষবৃক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার সুযোগে পশ্চিমা অক্টোপাস আজ নতুন করে ইরাকের টুঁটি চিপে ধরেছে।

এক বিরাট ভয়ানক মিথ্যার উপর ভর করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এগার বছর আগে ইরাকের সাধারণ জনগণের উপর একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, সাদ্দাম হোসেনের কাছে ব্যাপক বিধ্বংসী মারণাস্ত্র রয়েছে। যা কিনা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য বিরাট হুমকি। বলা হয়েছিল, সাদ্দামবিহীন ইরাকে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে মার্কিন দখলদাররা।

এর কিছুই ঘটেনি। দ্রুত প্রমাণ হল সাদ্দামের বিরুদ্ধে আনীত ব্যাপক বিধ্বংসী মারণাস্ত্রের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তারপরও সেই চরম মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্বাধীন দখলদার বহুজাতিক বাহিনী ইরাকে গণহত্যা চালিয়ে গেছে।

এখন আবারও জঙ্গীবাদ নির্মূলের দোহাই দিয়ে নতুন করে ইরাকে হামলা চালাতে অস্ত্র শান দিচ্ছে মার্কিন সামরিক কমপ্লেক্স, পেন্টাগন। বলা হচ্ছে, সুন্নী জেহাদী সংগঠন 'আইএসআইএস' অর্থাৎ ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ার হাত থেকে ইরাককে বাঁচাতে নতুন করে মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

১৮ জুন মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ জানিয়েছে, ইরাকের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপতি ওবামা সিনেট ও কংগ্রেসের ব্যাপক চাপের মধ্যে রয়েছেন। সিনেটে রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাককনেলের মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর ছাপা হয়েছে। ইরাকে তৃতীয় দফায় সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে সবচেয়ে বেশি ডঙ্কা বাজাচ্ছেন রিপাবলিকান সিনেটররা। এ ক্ষেত্রে মার্কিন দ্বি-দলীয় রাজনীতিতে এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় দলের সিনেটররা দেখানোর চেষ্টা করছেন কে বেশি প্রতিরক্ষা-সচেতন।

এমনি পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসন বাগদাদে ইতোমধ্যেই ৩০০ জনের একটি বিশেষ কমান্ডো দল পাঠিয়ে দিয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল সশস্ত্রবাহিনীকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। যার ফলে অত্যাধুনিক মার্কিন রণতরী মেসা ভার্ডে পারস্য উপসাগরে অবস্থান নিয়েছে। এম ভি-২২ নামের অত্যাধুনিক বোমারু কপ্টারবাহী ৫০০ মেরিন সেনাসমৃদ্ধ এই রণতরীর সঙ্গে যোগ দিচ্ছে পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ আরও তিনটি বড় মার্কিন রণতরী।

মোট কথা, কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই মার্কিন প্রশাসন সুন্নি জঙ্গী আইএসআইএস দমনের নামে ইরাক যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে। অথচ তারা বলেছিল, মার্কিন প্রশাসনের ইরাক মিশন সফল হয়েছে। এখন ইরাক নিয়ন্ত্রণে মার্কিনের সমস্ত ব্যর্থতার জন্য ইরাকের তাঁবেদার প্রধানমন্ত্রী নুরী আল মালিকিকে দায়ী করেছে ওয়াশিংটন। নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য এবং সিরিয়ায় মার্কিনী আগ্রাসনের পরিকল্পনা ব্যর্থ হবার জন্য এখন নতুন করে যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছে পেন্টাগন। যার পটভূমি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে সুন্নী জঙ্গী আইএসআইএসকে।

কারা এই আইএসআইএস? এদের অস্ত্র ও অর্থের যোগানদাতা কারা? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করলেই এর সঙ্গে মার্কিনের বর্তমান পরিকল্পনার যোগসুত্র খুঁজে পাওয়া যাবে। আইএসআইএস মূলত একটি সশস্ত্র সুন্নী জঙ্গী সংগঠন। এরা প্রধানত শিয়াবিদ্বেষী। একসময় লেবানন, ইরান ও সিরিয়ার শিয়া-আধিপত্য ঠেকানোর জন্য মার্কিনের মদদেই এই জঙ্গী সংগঠনের জন্ম দেওয়া হয়েছিল।

এ সংগঠনের অর্থ যোগানদাতা হচ্ছে প্রধানত সৌদি আরব ও কাতার। অনেকটা আফগানিস্তানে মার্কিনের ঔরসে জন্ম নেওয়া মুজাহিদদের মতো। ইরাক দখলের পর মার্কিনী নেতারা এ সংগঠনকে কাজে লাগান সিরিয়ার বিরুদ্ধে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মার্কিন ও সৌদি-স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে এই জঙ্গী সংগঠন।

ইরাকের ক্ষমতায় নূরী আল মালিকিসহ শিয়া-আধিপত্যে শুরু থেকেই নাখোশ ছিল সংগঠনটির নেতা ও সশস্ত্র কর্মীরা। এ নিয়ে তারা মার্কিনের সঙ্গে দরকষাকষিও করছিল। কথিত আছে, ২০১০ সালে এই জঙ্গী সংগঠনের নেতৃত্বে আসেন আবু বকর আল বাগদাদী। তারপর থেকেই সংগঠনটি তার কর্মসূচিতে নাটকীয় পরিবর্তন আনে। মার্কিনের সঙ্গে দরকষাকষির পাশাপাশি তারা ইরাকের ভেতরে নিজেদের ঘাঁটি পাকাপোক্ত করতে শুরু করে।

আজকের আইএসআইএস'র এই বিরাট সামরিক আধিপত্য তাদের সেই সামরিক কর্মসূচির সফলতারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। সংগঠনটি যেহেতু সুন্নী ভাবধারার, তাই এখন সাদ্দাম-সমর্থক বহু সাবেক সেনাসদস্যও এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তাছাড়া সংগঠনটি জনপ্রিয়তা লাভের আশায় প্রায়শ ইরাকের বর্তমান দুর্নীতিবাজ শিয়া শাসকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এতে তারা ব্যাপক সাড়া পায়।

বিশেষ করে বছর খানেক আগে আবু গারিব কারাগারে হঠাৎ হামলা চালিয়ে নিজেদের বেশ কিছু সহোযাদ্ধাকে মুক্ত করে আনে সংগঠনটি। এতে তাদের প্রচার ও প্রসার অনেক বেড়ে যায়। এখন বলতে গেলে ইরাকের উল্লেখযোগ্য অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে এই জঙ্গী সংগঠন।

ব্রিটেনের 'দ্য টেলিগ্রাফ' পত্রিকা ১৮ জুন লিখেছে, এই জঙ্গী সংগঠন রাজধানী বাগদাদের ৬০ কিলোমিটার দূরে বাকুবা শহর দখল করে নিয়েছে। এর আগে এই বাহিনী ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুল দখল করেছে। এছাড়া ফাল্লুজা, রামাদি এবং সাদ্দামের জন্মস্থান তিরকিতের মতো শহরগুলোও দখল করে নিয়েছে বাহিনীটি। ইরাকের সুন্নী-অধ্যুষিত প্রায় সব এলাকাই এখন এই বাহিনীর দখলে। অর্থাৎ উত্তরাঞ্চল এবং মধ্য ইরাকের একটা বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নেবার পর এরা এখন বাগদাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

এ রকম একটি পরিস্থিতিতে চোখে সর্ষে ফুল দেখছেন বাগদাদের ক্ষমতাসীন তাঁবেদার শিয়া জনগোষ্ঠীর নেতারা। তারা এখন অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছেন মার্কিনের দিকে। কিন্তু মার্কিন প্রশাসন পড়েছে বিপাকে। কারণ ঘটনার সমীকরণ এতটাই জটিল যে, অনেক কিছুই আর তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকছে না, যেমনটা থাকেনি আফগান তালেবানদের বেলায়। তাই তারা না পারছে বাগদাদের শিয়াশাসিত সরকারকে পূর্ণ মদদ দিতে, না পারছে সুন্নী জঙ্গীদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে।

ডেমোক্রেট দলের এই দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থার মধ্যে সামনে এগিয়ে এসেছে মার্কিন নয়া রক্ষণশীল রিপাবলিকানরা। তাদের নেতারা, বিশেষ করে সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামই এখন তৃতীয় ইরাক যুদ্ধের জন্য উচ্চকণ্ঠ। তার মতে, ইরাকে মার্কিনের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থানই মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিনের পুূর্ণ সম্মান রক্ষা করতে পারে। গ্রাহামের এই তত্ত্ব ধরেই মার্কিন মিডিয়াপন্থীরা তাদের যুদ্ধবাজ কোরাস গাইতে শুরু করেছে।

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, মার্কিনের যুদ্ধবাজ নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এক ধরনের প্রতিক্রিয়াশীল কূটনীতি। যার অংশ হিসেবে মার্কিন প্রশাসন এখন তার দীর্ঘদিনের শত্রু ইরানের দিকেও হাত বাড়িয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গত সপ্তাহে ভিয়েনায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ইরাকের শিয়াদের রক্ষায় ওয়াশিংটন তেহরানের সহযোগিতার জন্য হাত বাড়িয়ে বসে আছে।

এর পরপরই রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইরান এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ওয়াশিংটনকে সাহায্য করবে। খুবই তাৎপর্যপূণভাবে ঠিক তার পরপরই ইরানের রাষ্ট্রপতি হাসান রোহানী আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলোকে জানালেন যে, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় তেহরান এ ক্ষেত্রে মার্কিনকে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

শুধু তাই নয়, রোহানীর এই ঘোষণার আগেই ইরানের রেভুলুশনারি গার্ডের অন্যতম কমান্ডার কাশেম সুলেইমানীকে বাগদাদ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, এইভাবে ইরানের প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে মার্কিনের এক ধরনের সমঝোতার জায়গা সৃষ্টি হয়েছে এবং ইরানের মোল্লাতন্ত্র মার্কিনের এই সমঝোতা বেশ ভালোই উপভোগ করছে। কিন্তু ইরানের শাসকশ্রেণি এটা ভুলে যাচ্ছে যে, এই সমঝোতার জন্য অদূর ভবিষ্যতে খোদ ইরানকেই চরম মূল্য দিতে হবে। সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের যে মূল্য আজ পাকিস্তানকে দিতে হচ্ছে।

এমনিভাবে শিয়া-সুন্নী বিরোধ পুঁজি করে 'ভাগ কর, শাসন কর' নীতি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের মাটিতে ধেয়ে আসছে মার্কিনীরা। যার মূল্য দিতে হচ্ছে বিশ্বের সব দেশের নাগরিককে। বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোর মানুষদের, যারা কাজের সন্ধানে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে গিয়েছিলেন। ১৮ জুন বাংলাদেশের ডেইলি স্টার পত্রিকা জানিয়েছে, ১৪ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক এখন ইরাকে কাজ করেন। বাংলাদেশ দূতাবাস ইতোমধ্যে মসুল শহর থেকে অনেক বাংলাদেশিকে সরিয়ে এনেছে। যুদ্ধ পুরোদমে শুরু হলে এই শ্রমিকদের কেউই ইরাকে থাকতে পারবেন না। এই একই অবস্থা অনেক দেশের শ্রমিকদের।

এতবড় ব্যর্থতার পর কেন মার্কিনীরা ইরাকে আরও একটি যুদ্ধ চায়? এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিশ্বখ্যাত পারস্য উপসাগর অঞ্চল বিশেষজ্ঞ কেনেথ পুলাক। তিনি বলেছেন, এর কারণ অর্থনৈতিক। অনেকের মতে, অর্থনীতি ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সামরিক আধিপত্য বিস্তারও এর অন্যতম কারণ। তবে পরিস্থিতি যে দিকে মোড় নিচ্ছে তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, ইরাকের জনগণের জন্য অপেক্ষা করছে আরও প্রাণহানি ও রক্তক্ষয়।

অনেকের ধারণা, এই হামলায় বদলে যেতে পারে ইরাকের মানচিত্রও। সে কারণেই বাগদাদে নিযুক্ত জাতিসংঘের স্থায়ী দূত নিকোলাই ম্লাদেনভ বলেছেন, ইরাকের ভৌগোলিক অখণ্ডতা এখন বিরাট হুমকির মুখে। শুধু জাতিসংঘের দূতই নয়, ২০ জুন কিরকুক শহরে কর্মরত ইরাকের সরকারি বাহিনীর এক কর্নেলের বরাত দিয়ে 'নিউইয়র্ক টাইমস' লিখেছে, এই পরিস্থিতির সুযোগে কুর্দিরা তাদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত স্বতন্ত্র আবাসভূমি প্রতিষ্ঠা করে ফেলতে পারে।

এসব আলোচনা থেকে দেখা যাচ্ছে, ইরাক এখন তিনটি খণ্ডে ভাগ হবার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যার প্রথমটি হল শিয়া-শাসিত অঞ্চল, দ্বিতীয়টি সুন্নী-শাসিত এবং তৃতীয়টি হল স্বাধীন কুর্দিস্তান। যে ভাতৃঘাতী রক্তের হোলিখেলা আজ ইরাকে শুরু হয়েছে, এর ফলে ইরাকের আজকের মানচিত্র বদলে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয় ।

হাসান তারিক চৌধুরী: আইনজীবী, রাজনীতিক।