পুরনো পথেই কি হাঁটতে চান তারেক রহমান

বিভুরঞ্জন সরকারবিভুরঞ্জন সরকার
Published : 6 April 2014, 11:36 AM
Updated : 6 April 2014, 11:36 AM

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসেই বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন, দলের নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখছেন। দলের প্রবীণ নেতাদের পর্যন্ত তারেক বন্দনা না করে উপায় থাকছে না। তিনি কবে দেশে ফিরে আসবেন, সেটা অনিশ্চিত। (নিশ্চিত শুধু এটাই যে, বেগম খালেদা জিয়া এখন দলের নীতিনির্ধারণে তারেকের ওপরই নির্ভরশীল। অন্য সিনিয়র নেতারা সাইডলাইনে পড়ে আছেন।)

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন বলে মনে হয় না। তাকে ফিরিয়ে দেশে আনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্য বিএনপি নানামুখী তৎপরতা চালিয়েও সফল হতে পারেনি। তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা আছে। এক-এগারোর জরুরি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান।

তাকে লন্ডনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল সম্ভবত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে বিএনপির রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতেই। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, গ্রেফতারের পর তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, ফলে তিনি প্রায় পঙ্গু হয়ে পড়েন, সে জন্যই দেশের বাইরে তার উন্নত চিকিৎসা দরকার হয়ে পড়ে। যাহোক, তারেক রহমান লন্ডন গিয়েছেন এবং সেখানে চিকিৎসা নিয়ে এখন সম্ভবত সুস্থ আছেন।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পতনের পর তারেক রহমানকে নিয়ে দেশে ব্যাপক নিন্দা-সমালোচনা হয়েছে। তার দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে এত কেচ্ছাকাহিনী প্রকাশিত হয়েছে যা থেকে মনে করা হয়েছিল, তিনি হয়তো আর রাজনীতিতে ফিরবেন না, কিংবা তার মা-ই তাকে আর রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে চাইবেন না। কিন্তু কিছুটা আকস্মিকভাবেই তারেক রহমানকে ২০০৯ সালের কাউন্সিলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত করায় সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, তারেক রহমান আবার রাজনীতিতে ফিরছেন এবং বেগম জিয়াই তাকে আবার রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করছেন।

দেশের মানুষের কাছে তারেক রহমানের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় পরিকল্পিতভাবে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। এসব প্রচারণা মানুষের মনে তার প্রতি সহানুভূতি তৈরি করে, নাকি মানুষ আবার আতঙ্কবোধ করে- সেটা বলা কঠিন। দেশে ফিরলে তাকে বীরোচিত সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু তিনি ফেরেননি। তারেক রহমানের দেশে ফেরার মতো অনুকূল পরিবেশ দেশে কবে তৈরি হবে, তার অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বেগম জিয়াকে।

তারেকের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়ের করা মামলাগুলোর ব্যাপারে বর্তমান সরকারও কঠোর মনোভাবই দেখাচ্ছে এবং দেখাবে বলে মনে হচ্ছে। পারলে তার বিরুদ্ধে নতুন মামলা দিতেও সরকার হয়তো দ্বিধা করবে না। তারেকের প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের নমনীয়তা দেখানোর মতো কিছু এখন পর্যন্ত দেশে ঘটেনি। ঘটবে বলেও মনে হয় না।

শোনা গিয়েছিল, লন্ডনে চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি তারেক রহমান উচ্চতর শিক্ষাও গ্রহণ করছেন। ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন। তার ভক্ত-সমর্থকদের পক্ষ থেকে এমন কথাও বলা হয়েছে যে, তারেক রহমান যখন লন্ডন থেকে ফিরবেন তখন সবদিক থেকেই একজন পরিবর্তিত মানুষ হয়েই ফিরবেন।

ক্ষমতালোভী, বেপরোয়া, দুর্বিনীত, উচ্চাভিলাষী ইত্যাদি খারাপ ইমেজের পরিবর্তে সত্যি নতুন ইমেজ নিয়ে দেশের রাজনীতিতে ফিরে এলে তাকে স্বাগত না জানানোর কোনো কারণ থাকবে না। প্রকৃত শিক্ষা মানুষকে মাত্রাজ্ঞানসম্পন্ন হয়ে উঠতে সহায়তা করে। তাছাড়া কারাগারে ও প্রবাসে চাটুকার ও তোষামোদকারীমুক্ত পরিবেশে বাস করে আত্মজিজ্ঞাসা ও আত্মোপলব্ধির সুযোগ ঘটলেও এটা ইতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়েছেন বলে মনে হয় না।

ক্ষমতা থেকে দূরে থেকে এবং নানা বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে তারেক রহমানের মধ্যে কোনো শুভবুদ্ধি অথবা নতুন বোধের উদয় হয়েছে– এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তিনি যে রকম স্বেচ্ছাচারী মনোভাব গ্রহণ করেছেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতি যেভাবে মদদ জুগিয়েছেন এবং তার প্রশ্রয়ে দেশে সংঘাত-সংঘর্ষের যে রাজনৈতিক ধারা প্রবল হয়ে উঠেছে তা থেকে সরে আসার কোনো সদিচ্ছা তার মধ্যে তৈরি হয়েছে বলেও মনে হয় না।

তার সম্পর্কে যতটুকু খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে ইতিবাচক পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উদারতা ও সহনশীলতার পথে না হেঁটে উস্কানি ও সংঘাতের রাজনীতির প্রতি এখনও তার আগ্রহ বেশি বলেই দেখা যাচ্ছে। তার পরামর্শেই জামায়াতের সঙ্গে মিলিতভাবে বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশে দীর্ঘ সময় ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে বিএনপি।

মাঝেমধ্যেই দেশ থেকে বিএনপির কিছু নেতাকর্মী লন্ডনে গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেন। তার পরামর্শ নেন। টেলিফোনেও তিনি যোগাযোগ রাখেন। নেতাকর্মীদের 'দিকনির্দেশনা' দেন। বর্তমান সরকার বিরোধী দলকে 'নিশ্চিহ্ন করতে চায়' বলে অভিযোগ তুলে এই সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা, সমঝোতা না করে সরকার পতনের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাই তারেক বলে থাকেন। দলেল মধ্যে কেউ নমনীয় অবস্থান নিলে তাকে তিরস্কৃত হতে হয়। বিএনপি নেতৃত্বের মধ্যে 'তারেক-আতঙ্ক' প্রবল হয়ে ওঠায় রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে সমস্যা হচ্ছে, দল বারবার হোঁচট খাচ্ছে।

জোট সরকারের আমলে ব্যবসা-বাণিজ্য, নিয়োগ-বদলি সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত হত তারেক রহমান এবং তার পরিচালিত হাওয়া ভবনের মাধ্যমে। তাছাড়া দেশে সে সময় এমন কোনো দুষ্কর্ম হয়নি, যার পেছনে তারেক রহমানের নাম জড়িত হয়নি। কোটি টাকা নিয়ে হত্যা মামলার আসামিকে রেহাই দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

সে জন্যই বর্তমান সরকার অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিশ্চিহ্ন করতে চায় বলে যে অভিযোগ তারেক রহমান করে থাকেন, সেটা অন্তত তার মুখে শোভা পায় না। বর্তমান সরকার বিরোধী দলের সঙ্গে পুরোপুরি গণতন্ত্রসম্মত আচরণ করছে না, এটা সত্য বলে মেনে নিলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকতে যা করেছিল, তার সঙ্গে কোনোভাবেই তুলনীয় নয়।

নিজেদের সময়ের বাড়াবাড়ির জন্য কি তারেক রহমান অনুতপ্ত, তিনি কি প্রকাশ্যে এটা স্বীকার করবেন যে, তারা যা করেছিলেন, সেটা ঠিক ছিল না এবং ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে ওই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না? একুশে আগস্ট শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলার ঘটনাটি সম্পর্কে তারেক রহমানের বক্তব্য কী? শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের হত্যা করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত ওই নৃশংস গ্রেনেড হামলার পেছনেও তারেক রহমান, হাওয়া ভবনের সংশ্লিষ্টতার কথা গ্রেফতারকৃতদের মুখ থেকেই পাওয়া গেছে। ওই হামলা কি সে সময়ের বিরোধী দল আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার জন্য চালানো হয়েছিল, নাকি নিশ্চিহ্ন করার জন্য?

শাহ এএমএস কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টারসহ আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাদের হত্যা করা হয়েছিল কি বিরোধী রাজনৈতিক দলকে চাঙ্গা করার জন্য? দেশের বর্তমান রাজনীতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গেলে অতীতের এসব ঘটনা সম্পর্কেও তার অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে তারেক রহমানকে।

তারেক রহমানের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা যে কুচিন্তায় আচ্ছন্ন তার সর্বশেষ প্রমাণ ২৫ মার্চ লন্ডনে এক সভায় দেওয়া তার বক্তৃতা থেকেও পরিষ্কার হয়েছে। ওই সভায় তিনি দাবি করেছেন যে, জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অস্বীকার করে তারেক রহমান এমন কথাও বলেছেন যে, সাত মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পর পাকিস্তানিদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠকের কারণে মুক্তিযুদ্ধ বিলম্বিত হয়েছে। পাকিস্তানিদের সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের সমঝোতা-চেষ্টার কারণেই বাংলাদেশের ত্রিশ লাখ নিরীহ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে।

তারেক রহমানের এই বক্তব্য পাঠ করে যে কোনো পাঠকই নিশ্চয়ই তার কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন। নির্বোধ ছাড়া কারও পক্ষে এ ধরনের অর্বাচীন মন্তব্য করা সম্ভব কি-না সে প্রশ্নও আসে। এমন একজনকেই যখন বিএনপির 'ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি' হিসেবে প্রচার করা হয়, তখন বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায় না।

তবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানা ধরনের গাঁজাখোরি গল্প বিএনপির কোনো কোনো নেতা যে এর আগেও ফাঁদেননি, তা নয়। তারেক রহমান সেই ধারায় নতুন মাত্রা যোগ করলেন মাত্র। জিয়াউর রহমানকে 'প্রথম রাষ্ট্রপতি' বলার মতো চরম অসত্য বক্তব্য দিয়ে তিনি শুধু ইতিহাসের বিকৃতি ঘটাননি, সংবিধান লঙ্ঘন করে অমার্জনীয় অপরাধও করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই যে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি সেটা সংবিধানেও লেখা আছে। তাঁর অবদান খাটো করতে গিয়ে পুত্র যে প্রলাপ বকেছেন, বেঁচে থাকলে তা শুনে পিতা নিজেও লজ্জিত হতেন।

এটা ঠিক যে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী দল নয়, তারাই মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল। মুক্তিযুদ্ধে যে সব বাঙালির অংশগ্রহণ ছিল, এটাও তাদেরই কৃতিত্ব। পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসন ও জাতিগত শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ছাড়াও প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক আরও কিছু রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক শক্তির অবশ্যই ভূমিকা ছিল, কিন্তু বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের ভূমিকা ও অবদানই সবচেয়ে বেশি এবং উজ্জ্বল।

বিএনপি যে জিয়াউর রহমানকে 'মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক' বলে দাবি করে, এটাও শেখ মুজিব এবং আওয়ামী লীগ না হলে সম্ভব হত না। বঙ্গবন্ধুর নামেই জিয়া কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত মুজিবনগর সরকারের অধীনেই একজন সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সে সময় জিয়ার পেছনে আওয়ামী লীগ হাঁটেনি, আওয়ামী লীগের পেছনেই জিয়া হেঁটেছেন।

৭ মার্চের ভাষণের পর ইয়াহিয়ার সঙ্গে বৈঠকের কারণে মুক্তিযুদ্ধ বিলম্বিত হয়েছে কিংবা ত্রিশ লাখ নিরীহ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে বলে মন্তব্য করার ধৃষ্টতা তারেক দেখাতে পেরেছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জাতীয় মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই। ওইদিন বঙ্গবন্ধু সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা করলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াত সেটা বোঝার মতো রাজনীতিক জ্ঞান তারেকের থাকলে এমন শিশুসুলভ কথা তিনি বলতেন না।

'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম' এবং তিনি নির্দেশ দিতে না পারলেও 'যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করার' যে আহ্বান বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ জানিয়েছিলেন, সেটাই ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার গ্রিন সিগন্যাল– যেটা জিয়াউর রহমানই স্বীকার করেছেন। স্বাধীনতার তেতাল্লিশ বছর পরে এসে জিয়াপুত্র নতুন ইতিহাস শেখাচ্ছেন বাঙালি জাতিকে। ধিক্কার জানাতে হয় এই ধৃষ্টতার।

মায়ের বদান্যতায় বিএনপি নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছানোর কারণেই সম্ভবত তারেক স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকেও অত্যন্ত সহজলভ্য একটি বিষয় বলে মনে করেছেন। ইতিহাস-ভূগোল সম্পর্কে যাদের সাধারণ জ্ঞান আছে তারা এমন বালখিল্য মন্তব্য করবেন না। শুধু একটি বেতার ঘোষণায় যে কোনো দেশ স্বাধীন হয় না, এর জন্য যে দীর্ঘ ধারাবাহিক রাজনৈতিক লড়াই-সংগ্রাম চালাতে হয়, মানুষকে ধীরে ধীরে প্রস্তুত করতে হয়– সেটা না জানার জন্যই তিনি ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার করার দুঃসাহস দেখাতে পেরেছেন।

বিভেদ ও বিভ্রান্তির পুরনো পথে হেঁটে তারেক যদি দেশের মানুষের সমর্থন আদায় করতে চান তাহলে তিনি ভুল করবেন। বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে কিংবা ছোট করে আর যাই হোক, বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্থায়ী আসন পাওয়া যাবে না।

রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হলে সৎ ও স্বচ্ছ ধারার রাজনীতিই অনুসরণ করতে হবে।