জনাব শিক্ষামন্ত্রী, লড়াইটা কীসের সঙ্গে আপনি জানেন তো

মানস চৌধুরী
Published : 4 March 2014, 12:53 PM
Updated : 4 March 2014, 12:53 PM

মানস চৌধুরী'র অমঙ্গুলে

এই মুহূর্তে যখন আমি লিখতে বসছি তার চারদিন আগে, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গনে সকাল থেকে পুলিশি তাণ্ডব চলল। পত্রিকা মারফৎ জানা যায় হামলায় অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। অন্যান্য সূত্রে সংখ্যাটি হেরফের হচ্ছে। নানান মাত্রায় আহতের কথা বিবেচনা করলে, নিজেদের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যা জানা গেল তাতে ২০০ সংখ্যাটি স্বাভাবিক মনে হয়েছে। এই সংখ্যাটি খানিক কমালেও সহিংসতার ধরন, উত্তুঙ্গতা আর মূল দুর্ভাবনার জায়গা একটুও কমে না। হামলা পুলিশ করেছে। কিন্তু পুলিশ কি শুধু পুলিশ?

এই মুহূর্তে যখন লিখছি খুবই নিবিড় এক গ্লানিবোধ আচ্ছন্ন করে রেখেছে। পুলিশের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ইংরেজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. নাসিরউদ্দিন। যা এবং যতটুকু খবর পত্রিকার বাইরে জোগাড় করতে পেরেছি তাতে তাঁর অবস্থা মোটেই সুবিধাজনক নয়। ছররা গুলির অনেকগুলো স্পি­ন্টার তাঁর পিঠে ঢুকে গেছে। তিনি কীভাবে আছেন বা কোথায় আছেন ইত্যাদি প্রসঙ্গে পত্রিকা থেকে জানার উপায় নেই। শিক্ষার্থী চিনি মাত্র গুটিকয়েক, তাঁরা জানেন না। আর আমিও আমার পেশাগত কর্তব্যপালনের চাপে আর ঢাকা শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাবার দুঃস্বপ্নে কিছুতেই তাঁকে দেখতে যেতে রওনা হইনি। অধ্যাপক নাসির বা আহত কোনো শিক্ষার্থী আমার মতো কারও যাওয়া বা না-যাওয়ায় কিছুমাত্র উপকার বা অপকার পেতেন না। তাঁদের এই মুহূর্তের ভোগান্তির সঙ্গে আমার বা কারও সহমর্মিতার পার্থক্য সামান্যই।

পরদিন রাতের বেলা শিক্ষামন্ত্রী দেখা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষার্থীবৃন্দের সঙ্গে। এসব সংঘাতময় স্বার্থ-পরিস্থিতি যখন ব্যাপক নিন্দামন্দ তৈরি করে, বিশেষত মিডিয়ার একাংশে এবং পাবলিক-জবানে, তখন এই ধরনের সভা করবার রেয়াজ বাংলাদেশে রয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে ভূমিকা রাখতে গেলেই একটা উভসংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিদ্যমান কাঠামোতে ৭৩-এর অধ্যাদেশ দিয়ে পরিচালিত হয় এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষামন্ত্রীর অংশগ্রহণের সুযোগ সীমিত বলে মনে হতে পারে।

পক্ষান্তরে, অপরাপর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তৈরি করবার সময় বিবিধ রাজনৈতিক দল 'সরকার' হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীন ভূমিকা খর্ব করতেই চেয়েছে– বিএনপি আওয়ামী লীগ একইভাবে। শিক্ষামন্ত্রীর অংশগ্রহণের পথও সুগম হয়। আবার বাংলাদেশে একজন মন্ত্রীর নানাবিধ আগ্রহ থাকার সঙ্গে সরকারের সদিচ্ছা কিংবা সর্বোচ্চ সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়া গুলিয়ে ফেলার সুযোগ নেই। ফলে কথিত এসব বৈঠকের আগুপিছু নানান বিষয় ভাবার সুযোগ আছে। তারপরও এটা গুরুত্বপূর্ণ যে শিক্ষামন্ত্রী সেই বৈঠকে 'আশ্বাস' দিয়েছেন। যে 'তিব্বত হল' পুনরুদ্ধারের ন্যায্য আগ্রহে শিক্ষার্থীদের এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হল, সেই হল পুনরুদ্ধারের আশ্বাস দিয়েছেন। পুলিশের হামলার তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন… ইত্যাদি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিংস্র ঘটনা ঘটেছে মাত্র এর ২০ দিন আগে। আশ্বাস সেখানেও কিছু মিলেছে সত্যি। আমাদের দেশে কোনো নৃশংস ঘটনার পর বহুদিন চলে গেলেও প্রতিকারের তেমন কোনো 'আশ্বাস' দুর্লভ। বিশ্ববিদ্যালয় এখনও হয়তো রাষ্ট্র পরিচালকবর্গের মাথায় কোথাও না কোথাও অবস্থান করে আছে। ভাগ্যিস তা আছে! হয়তো আশ্বাস সেই কারণে পাওয়া গেল। আসলে আশ্বাস পাবার কারণ নিয়ে আপাতত মাথা না ঘামালেও চলে। আমার মূল আগ্রহ আশ্বাসটাকে অনুবাদ করা।

আসলে কীসের 'আশ্বাস' জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিজন কিংবা আমরা পেলাম? জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ন্যায্য বিচার পাবেন তাঁদের উপর হামলা হবার। কিন্তু হামলার পুনরাবৃত্তি হবে না এই মর্মে কি তিনি আশ্বাস দিলেন? তিনি কি ব্যাখ্যা করবার দায়বোধ করেছেন কেন মাত্র ক'দিন পরপরই পাবলিক শিক্ষায়তনে কোনো না কোনো হামলা হচ্ছে? উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে কেন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বারবার হামলার শিকার হচ্ছে– হয় বহির্জগতের কারও কাছ থেকে, নয়তো অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা হিসেবে? তিনি কি বাংলাদেশের শিক্ষা ধ্বংস হতে দেবেন না এই আশ্বাস দিয়েছেন? দেওয়া কি তাঁর পক্ষে সম্ভব? সেই আকাঙ্ক্ষা কি তিনি করেন?

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আপাত সঙ্কট বেদখল হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি নিয়ে। যে রাষ্ট্র-সম্পদ সরকারের রক্ষা করার কথা সেটা তো সরকার করেইনি, উপরন্তু সেই বেদখল হওয়া সম্পদ ফেরৎ পাবার জন্য ন্যায্য দাবিকারী শিক্ষার্থী-শিক্ষক পেটানি খেলেন রাষ্ট্রবাহিনীর কাছে। এর থেকে পরিহাসের ঘটনা খুব কমই পাওয়া যায়, যদিও বাংলাদেশে দুর্লভ নয়।

যাহোক, আপাত সঙ্কটের গভীরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তীব্রতর সঙ্কটটি লুকিয়ে আছে। এক হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত হয়েছে পাবলিক প্রতিষ্ঠানের ছদ্মবেশে একটি রাষ্ট্রের দায়দায়িত্বহীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে। এটি পরিষ্কার ধাপ্পাবাজি, কেবল শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই নয়, বরং খোদ রাষ্ট্রের নিজ ঘোষণাপত্র ও লেগ্যাসির সঙ্গেও। আজকের এই হামলাপর্বটি বড়জোর সেই মূল সঙ্কটটাকে দূরে রাখছে এই মুহূর্তে।

ওদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্কটটি আপাতগ্রাহ্যে খুব ভিন্ন। কিছু সান্ধ্য কোর্স বর্ধিত ফি ধার্য করে চালানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর সেটার প্রতিবাদ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা বেধড়ক মার খেয়েছে পুলিশের হাতে, এবং সরকারি সংগঠনের গুণ্ডাবাহিনীর হাতে (অবশ্য হামলাকারীরা যে ঘাপটি-মেরে থাকা অসরকারি সংগঠনের লোকজন সেই দাবি নিয়ে ময়দানে সরকার/আওয়ামী লীগও খেলছে)। রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আর শিক্ষার্থীরা পরস্পরবিরোধী সাংঘর্ষিক অবস্থানে চলে গেছেন। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীবৃন্দ আর কর্তৃপক্ষ একটা সমবেত অবস্থানে আছেন।

এই আপাত ভিন্নতাগুলো বলবার প্রেক্ষাপট আছে। সমস্যাগুলো বিভিন্ন মনে হলেও বাস্তবে পাবলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি একটা ধারাবাহিক অযত্ন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিপজ্জনক ভাবনাকাঠামো এবং রাষ্ট্রের দায়দায়িত্ব প্রসঙ্গে ঘোষণা আর অনুশীলনের ইচ্ছাকৃত ফারাক– এগুলো দুটো সঙ্কটেরই ভিত্তিভূমি তৈরি করেছে। রাজশাহীর শিক্ষার্থীরা যে বিষয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ঠিক একই বিষয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বিভাগগুলোতে চলমান রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসন (সাবেক কমার্স) বিষয়গুলোর সান্ধ্যকোর্সগুলোতে একই মডেল কোনো প্রতিরোধ ছাড়া চলছে। প্রতিরোধ হচ্ছে না বলে সঙ্কটটিও নজরে আসছে না।

উচ্চকিত মূল্যে শিক্ষা (আসলে ডিগ্রি) সরবরাহ করবার এই বুদ্ধিটি একেবারেই বহুজাতিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আসা যার মধ্যে রয়েছে বিশ্ব ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান। তবে সরকার সেগুলোতে সায় দেয় বলেই এই বদলগুলো ঘটছে। ওদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে আদৌ নানান রকম প্রশ্ন করবার সংস্কৃতি দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে নানান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সেরকম শিক্ষাকর্মীর কণ্ঠস্বর এখন দুর্লভ যিনি প্রগাঢ় গলায় এসবে আপত্তি করবেন। আর রাষ্ট্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট প্রদানের সময় এমন চাপে রাখে যে নানাবিধ ছোটখাট আয়ের সুযোগও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে খতিয়ে দেখতে হয়। রাষ্ট্র তরফে এই চাপ প্রদান বাস্তবে শিক্ষার বিপণনে বাধ্য করারই সামিল।

চাপটা কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-প্রশাসন একদম সামলাতে পারে না? পারার কথা ছিল। যে ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছিল, তাতে এই চাপটা মোকাবিলা করবার রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রস্তুতি তাঁদের থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দীর্ঘদিনের অনুশীলনে মেধাবৃত্তির সেই জায়গাটা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটা সুবিধাবাদিতার নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ও বাইরে রাষ্ট্রীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। এতে আখেরে শুধু শিক্ষার দর্শন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, উপরন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা যা বৃহত্তর প্রয়োজন ও তাগিদে শিক্ষাকে নিয়োজিত রাখতে চেয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সরকারের ও রাষ্ট্রের তল্পিবাহক বানাবার বিভিন্ন উদ্যোগ ক্ষতি করেছে সবচেয়ে বেশি।

শিক্ষামন্ত্রী বিচক্ষণ মানুষ, রাজনীতির নানান রকমের মারপ্যাঁচ আর জনসম্পৃক্তি দুয়ের সঙ্গেই তিনি পরিচিত। কিন্তু বিষয়টা একজন ব্যক্তির বিচক্ষণতার নয় সেটাও তিনিই সবচেয়ে ভালো যাঁরা জানেন তাঁদের একজন। শিক্ষামন্ত্রী নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখল হয়ে যাওয়া হলগুলো কেবল সারা বাংলাদেশের পাবলিক সম্পত্তি দখল হবার উদাহরণের অংশ। এও তাঁর জানবার কথা দখলদারদের নানাবিধ হাত এবং সেগুলো লম্বা লম্বা, এতটাই যে তিনি যে দপ্তরে কাজ করেন তার আশপাশ পর্যন্ত তা চলে আসে। শিক্ষামন্ত্রীরই ভালো জানবার কথা যে সঙ্কটটার একটা দিক খোদ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়াবার বিপজ্জনক লোভের সঙ্গে সম্পৃক্ত, আর নানান প্রান্তে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও নানান সঙ্কট দৈত্যের মতো বাংলাদেশে অপেক্ষা করে আছে।

শিক্ষামন্ত্রী নিশ্চয়ই বিস্মৃত হননি কী ধরনের তড়িঘড়ি করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন বাংলাদেশে দুই দশক আগে তৈরি হয়েছিল এবং কীরকম ব্যবস্থাপনার মধ্যে রেডিও টেলিভিশনের মতো একটা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইল 'পাশ' হয়ে যায়; আর সেই প্রক্রিয়ার সঙ্গে এই সঙ্কটটি কীভাবে সম্পর্কিত। শিক্ষামন্ত্রী নিশ্চয়ই জানেন উচ্চশিক্ষা তথা সাধারণভাবে শিক্ষাকে বিপণনযোগ্য পরিষেবা করবার প্রশ্নটি মীমাংসা না-করে স্থানীয় পর্যায়ের 'আশ্বাস' মলম দিয়ে, সেটাও একেকটা হামলার পর খবরগুরুত্বের কারণে, বাংলাদেশের শিক্ষা বিপর্যয়কে তিনি রোধ করতে পারবেন না।

তিনি এগুলো সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল আছেন সেটা মনে না-করার কোনো কারণ নেই। কিন্তু সঙ্কটগুলোকে মোকাবিলা তিনি দূরপাল্লার যাত্রা হিসেবে দেখেন কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ করার পর্যাপ্ত কারণ আছে। যদি দেখেন লড়াইটা তাঁর নিজ পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধেই শুরু করতে হবে। তিনি সম্ভবত সেটা করেননি। তিনি আমাদেরকে এই পুরো প্রক্রিয়াটা সম্বন্ধে একটা ধারণা দেবার দায় বোধ করেননি, কারণ তিনি সেই ব্যবস্থারই একজন প্রতিনিধি। তাঁর দাপ্তরিক দায়িত্বের সীমানার মধ্যে সেটা পড়ে না।

তিনি আসলে একটা 'আশ্বাস'ই দিয়েছেন, নানাবিধ দুর্ঘটের পর বিভিন্ন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী বিভিন্ন ঘটনাস্থলে গিয়ে যা নিয়মিত করে থাকেন। শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস আহত শিক্ষার্থীদের বেদনা দূর করতে এতটুকু ভূমিকা রাখবে না। কিংবা অধ্যাপক নাসিরের বিক্ষত পিঠে কোনোরকম শুশ্রূষা করবে না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কোনো পাবলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পাবলিকের কাছে ফিরিয়ে দেবার নিশ্চয়তা দেবে না। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে জনগণের দরবারে ফিরিয়ে আনার কোনো উপায় বের করবে না।

শিক্ষাকে সমুন্নত রাখার সংকল্প করেছেন যাঁরা তাঁদের স্বতন্ত্র পথ বের করতেই হবে। নানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকর্মী বন্ধুদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্ত করবার জন্য জড়ো হবার চেষ্টা করছেন। এই মুহূর্তের বাংলাদেশে কোনো গণতান্ত্রিক লক্ষ্যমুখী স্বাধীন জ্ঞানকামী জমায়েত সহজ উদ্যোগ নয়। কিন্তু আমাদের আকাঙ্ক্ষাকে সংগঠিত করবার এটাই তো একমাত্র উপায়!

[উত্তরা॥ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪]

মানস চৌধুরী: লেখক, সংকলক ও অনুবাদক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞানের শিক্ষক।