দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা নিয়ে আরেক কিস্তি

হাসান মামুনহাসান মামুন
Published : 10 Feb 2014, 11:09 AM
Updated : 10 Feb 2014, 11:09 AM
দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা নিয়ে কোনো কোনো চালু মিডিয়ায় এক ধরনের স্পর্শকাতরতা লক্ষ করছি। অতিউৎসাহ দেখিয়ে মিইয়ে যাওয়ার প্রবণতাও দৃষ্টি এড়ায়নি। সেটি কি রায় 'বেশি কঠোর' মনে হয়েছে বলে? উচ্চ আদালতের রায় নিয়েও কিন্তু গঠনমূলক সমালোচনার সুযোগ রয়েছে। এটা তো নিম্ন আদালতের ব্যাপার। এর বিরুদ্ধে আপিলও হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী অবশ্য এ ক্ষেত্রে তার একটি অবস্থান প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদে বক্তব্য রাখার সময়। রায়ে যে পর্যবেক্ষণ রয়েছে, সে অনুযায়ী ওই ঘটনায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আলোচিত 'হাওয়া ভবনের' সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখার পক্ষপাতী তিনি। একই দিন সরকারপক্ষের এক এমপি সংসদে বলেছেন, কেউ এদেশের 'সুপার সিটিজেন' নন। অপরাধে জড়িত হলে সবাইকেই আইনগত পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে হবে।

তা তো বটেই। অপরাধে সংশ্লিষ্ট না হয়েও দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ যদি অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেন বা তাদের কৃতকর্ম ঢাকতে উদ্যোগী হন, সে ক্ষেত্রেও তাকে এর দায় নিতে হবে। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা তো বটেই, তারপর ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলাকেও বিপথে পরিচালনার চেষ্টা আমরা লক্ষ করি বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে।

রাষ্ট্রক্ষমতার শীর্ষে অবস্থানকারী ব্যক্তি এর দায় এড়াতে পারেন কিনা, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। উঠতে পারে আরও এ কারণে যে, আমাদের দেশে বর্তমান ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী হলেন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। বড় কোনো ঘটনা তাঁর অজান্তে ঘটার কথা ভাবাও দুষ্কর।

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তৎকালীন সরকার ও প্রশাসনের যেসব ব্যক্তি অভিযুক্ত হয়েছেন আদালতে, তাতে অনেকের চোখ কপালে উঠেছে। তবে একটু মাথা খাটালেই বোঝা যাবে, এটা স্বাভাবিক। নিয়মিত বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন লড়ার মতো যুদ্ধাস্ত্র অন্য একটি দেশের ভেতর দিয়ে নিয়ে যাওয়া তো সম্ভব নয় সে দেশের সরকার ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়কে অন্ধকারে রেখে। এখন প্রশ্ন হল, যারা মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন, তাদেরও উপরের কেউ এতে জড়িত ছিলেন কিনা।

ভারতীয় ওই অংশে আমাদের বরং চাওয়া উচিত জোর শান্তিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে টেকসই স্থিতিশীলতা। তাতে উত্তর-পূর্ব ভারতে অবকাঠামোসহ জীবনমানের উন্নয়ন হবে। বাড়বে তাদের কার্যকর চাহিদা। বিনিয়োগ ও ব্যবসা বাড়িয়ে আমরা বরং এর ফায়দা নিতে চাইব। সস্তায় পর্যটনসেবাও গ্রহণ করতে চাইব ভারতীয় সাত রাজ্যে।

হাসান মামুন: সাংবাদিক, কলামিস্ট।