১৬ জানুয়ারি, ২০১৪ 'ব্যাকবেঞ্চ এমপিদে'র বিতর্কে পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাফল্যের বৃত্তান্ত দিয়ে রেহমান চিশতি বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা বোঝাচ্ছিলেন। চলতি সপ্তাহের ওয়েস্ট মিনিস্টার হলের বিতর্কেও তিনি নতুন একটি নির্বাচনের জন্য সময়সীমা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়ে সেটির পক্ষেও পাকিস্তানকেই উদাহরণ হিসেবে টেনে আনেন।
ব্রিটিশ এমপিদের কেউ কেউ 'দ্রুত' নির্বাচনের যে কথা বলছিলেন, সেটি রেহমান চিশতির মোটেও পছন্দ হয়নি। তিনি পাকিস্তানের স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়াউল হকের উদাহরণ টেনে সহকর্মী এমপিদের বোঝাতে চেষ্টা করেন যে, পাকিস্তানে জিয়া যখন ক্ষমতা দখল করেন, তিনিও বলেছিলেন দ্রুতই গণতান্ত্রিক শক্তির হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন। কিন্তু সেই 'দ্রুত' সময়টা আর দ্রুত যায়নি। বাংলাদেশেও নির্বাচনের একটা সময়সীমা নির্দিষ্ট করে না দিলে এই সরকার পাঁচ বছরের আগে কোনো নির্বাচন দেবে না।
তবে আলোচনায় রেহমান চিশতির 'সময় নির্দিষ্ট' করে দেওয়ার প্রস্তাবনাটি তেমন একটি গুরুত্ব পায়নি। বরং এমপিরা তাদের সীমানার মধ্যেই থেকেছেন পুরো আলোচনায়। তারা বলেছেন, নির্বাচনের সময়টা আসলে বাংলাদেশের রাজনীতিকদেরই ঠিক করতে হবে, তারা কেবল সহায়কের ভূমিকাই পালন করতে পারেন।
কিন্তু বাংলাদেশে অনেকেই এই বিতর্কের খণ্ডিত তথ্য উপস্থাপন করে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিতর্কে যখন বলা হয়, 'আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের মধ্যকার চলমান অবিশ্বাস দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ অকার্যকর করে রেখেছে, যা একটি অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রায় অলীক কল্পনা হয়ে উঠেছে' তখন তো দল হিসেবেই কেবল নয়, জাতি হিসেবেই আমাদের লজ্জিত হওয়ার কথা।
শওগাত আলী সাগর: প্রথম আলোর সাবেক বিজনেস এডিটর, টরন্টো থেকে প্রকাশিত নতুনদেশ ডটকম-এর প্রধান সম্পাদক।